খেলা

সোনা ছাড়া ফিরছে শুটিং

স্পোর্টস রিপোর্টার, পোখারা (নেপাল) থেকে

১০ ডিসেম্বর ২০১৯, মঙ্গলবার, ৮:৫১ পূর্বাহ্ন

সাউথ এশিয়ান গেমসের শুরুর ৩৫ বছরে মাত্র একবার শুটিংয়ে স্বর্ণ বঞ্চিত হয়েছিল বাংলাদেশ। ২০০৬ কলম্বো গেমস থেকে খালি হাতে ফিরেছিল শুটাররা। এবার কলম্বোর পুনরাবৃত্তি ঘটলো কাঠমান্ডুতে। গতকাল সাদদোবাতোর শুটিং কমপ্লেক্সের রেঞ্জে গতকাল ডিসিপ্লিনের শেষ দিনেও হতাশ করেন বাংলাদেশের দুই শুটার শাকিল আহম্মেদ ও আরদিন ফেরদৌস আঁখি। এবার সোনার মুখ দেখেনি শুটিং। আসরে বাংলাদেশের অর্জন বলতে ৬ রুপা ও সাত ব্রোঞ্জ।
বাংলাদেশের সম্ভাবনাময় খেলার একটি শুটিং। আরচারির মতো বিদেশি কোচের অধীনে প্রায় সারা বছর অনুশীলন চলে ডিসিপ্লিনটির। ১৯৯৩ সালে ঢাকায় অনুষ্ঠিত আসরে সাতটি সোনা জিতেছিল বাংলাদেশ। শিলং-গৌহাটির গত আসরেও ৫০ মিটার পিস্তলে সোনা জেতেন শাকিল আহমেদ। কমনওয়েলথ গেমসে রৌপ্য জয়ী শুটার আবদুল্লাহ হেল বাকীর পর কাল হতাশ করেন শাকিলও। আরচারি দশ ইভেন্টের সবকটিতে সোনা জিতলেও একেবারে হতাশ করেছে শুটিং। স্বর্ণতো দুরের কথা ব্যক্তিগত ইভেন্টে একটি মাত্র রৌপ্য জিতেছে তারা। ১০ মিটার এয়ার পিস্তলের ব্যক্তিগত ইভেন্টে রৌপ্যটি এনে দিয়েছেন আরদিন ফেরদৌস আঁখি। ফাইনাল শুট অফে খারাপ করে ব্রোঞ্জ জেতেন আবদুল্লাহ হেল বাকী। বাংলাদেশের বাকি পাঁচ রৌপ্য দলগত বিভাগে। বাংলাদেশের এই হতাশাজনক পারফরমেন্সের কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে কোচ সাইফুল আলম রিংকি বলেন, ‘আসলে শুটিংয়ে ভারত সবার চেয়ে এগিয়ে। তাদেরকে অনুসরণ করে আমাদের এগিয়ে যেতে হবে। ভারতের শুটাররা যে পরিমাণ প্র্যাকটিস করে এবং যে হারে আন্তর্জাতিক আসরে অংশ নেয়, সে তুলনায় আমাদের প্র্যাকটিস ও অংশ নেয়ার হার খুবই কম। এখন তাদের সমকক্ষতা অর্জন করতে না পারলেও তাদের অর্জনের ৫০ শতাংশও যদি আমরা অর্জন করি, তাহলে আমাদের শুটিং অনেকদূর এগিয়ে যাবে। আমাদের শুটাররা অনেক মেধাবী ও পরিশ্রমী। তাদের মধ্যে যোগ্যতা আছে সেই পর্যায়ে যাওয়ার।’ শুটিংয়ের সাবেক তারকা রিংকি বলেন, ‘এবার আমরা ৬টা রৌপ্য পেয়েছি। এগুলোর যদি ৫০ শতাংশও ওভারকাম করতে পারতাম, তাহলে আমাদের ৩টি স্বর্ণ হতে পারতো। এরকম করতে হলে অনুশীলনের কোনো বিকল্প নেই। সারা বছরই শুটারদের অনুশীলনের ভেতরে রাখতে হবে এবং বেশি করে আন্তর্জাতিক আসরগুলোতে খেলাতে হবে। নইলে শুটিং এগুবে না।’ শুটিংয়ে ভালো করতে অনুশীলনের বিকল্প নেই। এজন্য প্রয়োজন বিপুল পরিমানে অর্থ। সেখানেই আটকে যাচ্ছে বাংলাদেশের শুটিং! গুঞ্জন রয়েছে ফেডারেশন সভাপতি নাজিম উদ্দিন এবং সাধারণ সম্পাদক ইন্তেখাবুল হামিদ অপুর দ্বন্দ্বের কারণে স্থবির হয়ে আছে বাংলাদেশ শুটিং ফেডারেশন। ফেডারেশনের শীর্ষ দুই কর্মকর্তার দ্বন্দ্বে চাকরি ছেড়েছেন ডেনমার্কের কোচ ক্লাভস ক্রিস্টেনসন। শুটিংয়ে নতুন মুখ নেই দীর্ঘদিন। যদিও ফেডারেশন সাধারণ সম্পাদক অপু বলেন, এসব কিছু না, তাদের আসল সমস্যা অর্থ সংকট। অর্থের অভাবে শুটারদের বিভিন্ন আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্টে দল পাঠাতে পারছি না। আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্টের ঘাটতির কারণে শেষ মুহূর্তে ভারতের শুটারদের সঙ্গে পেরে উঠছে না বাংলাদেশ। যদিও অপুর এই যুক্তি মানতে চান না সাবেক শুটাররা। সাবেক জাতীয় শুটার ফরিদুর ইউসুফ মহসীন বলেন, আমাদের শুটিং ফেডারেশনে সাবেক খেলোয়াড়দের মূল্যায়ন নাই। সেখানে একক কর্তৃত্ব চলছে। ফেডারেশনে দ্বন্দ্বের কারণে নতুন শুটার তৈরি হচ্ছে না। ঘুরে ঘুরে যারা আছেন তাদেরই বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ইভেন্টে খেলাতে হচ্ছে। শুটিংয়ের উন্নতির জন্য সাবেক শুটারদের ফেডারেশনের সঙ্গে সম্পৃক্ত করার জোর দাবি জানান ১৯৭৯ সাল থেকে ১৯৯৪ পর্যন্ত জাতীয় দলে খেলা এই শুটার। এসএ গেমসে ছয়টি স্বর্ণজয়ী শুটার ও বর্তমানে জাতীয় দলের কোচ রিংকিও জানান নতুন নতুন শুটার উঠে না আসলে এই সংকট থেকে উত্তরণ সম্ভব নয়। শুটিং নিয়ে নতুন করে ভাববার কথা বলেছেন বিওএ মহাসচিব সৈয়দ শাহেদ রেজাও। তিনি শুটিংয়ের পারফরমেন্সে হতাশ বিওএ মহাসচিব বলেন, আমরা দেশে ফিরে শুটিং কর্মকর্তাদের সঙ্গে বসবো। সম্ভাবনাময় এই খেলাটির জৌলুস ফেরাতে যা প্রয়োজন আমরা তাই করবো।  
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status