বাংলারজমিন
ভাঙ্গায় বাল্যবিবাহ বন্ধ, বর শ্রীঘরে
ভাঙ্গা (ফরিদপুর) প্রতিনিধি
৭ ডিসেম্বর ২০১৯, শনিবার, ৮:০৬ পূর্বাহ্ন
ফরিদপুরের ভাঙ্গায় উপজেলা নির্বাহী অফিসারের হস্তক্ষেপে ৮ম শ্রেণিতে পড়ুয়া এক শিক্ষার্থী বাল্যবিয়ের থেকে রক্ষা পেলো। এ ঘটনায় অভিযুক্ত বর রাহেন ব্যাপারী (২৩)কে ৬ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দিয়ে জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়েছে। বৃহসপতিবার রাতে উপজেলার হামিরদী ইউনিয়নের মুনসুরাবাদ গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। উপজেলা প্রশাসন ও এলাকাবাসী সূত্রে প্রকাশ ভাঙ্গা উপজেলার পার্শ্ববর্তী সদরপুর উপজেলার কৃষ্ণপুর ইউনিয়নের নিজ গ্রামের সানু ব্যাপারীর ছেলে মো. রাহেন ব্যাপারীর সঙ্গে মুনসুরাবাদ গ্রামের জনৈক ব্যক্তির ৮ম শ্রেণিতে পড়ুয়া (১৪ বছর) কন্যার বিয়ের দিন ধার্য করে। কিন্তু মেয়েটির বয়স কম হওয়ায় কৌশলী দুটি পরিবার রাতের বেলায় বিয়ের সকল আয়োজন সম্পন্ন করার সিদ্ধান্ত হয়। উপহার সামগ্রী হাতে একে একে আসছিল নিমন্ত্রিত অতিথিরা। বর পক্ষের লোকজনও গাড়িবহর নিয়ে কনের বাড়িতে অবস্থান করায় বিয়ে বাড়ির চারদিকে বেশ ধুমধাম চলে জোরেশোরে। কিন্তু বিধিবাম! বেরসিক গ্রামবাসীদের কেউ একজন বিষয়টি উপজেলা প্রশাসনকে জানায়। ১৪ বছর বয়সের কিশোরীর বিয়ে হচ্ছে! এমন খবর পৌঁছে যায় উপজেলা প্রশাসনের কাছে। খবরের সত্যতা গোপনে অনুসন্ধান করে উপজেলা প্রশাসন। সত্যতা পাওয়ায় কনের বাড়িতে ছুটে আসেন ভাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মুকতাদিরুল আহমেদসহ সঙ্গীয় প্রতিনিধিরা। ম্যাজিস্ট্রেটের গাড়ি থেকে অবস্থান করা বর রাহেন ব্যাপারী আলোক সজ্জিত কুঁড়েঘর থেকে দৌড়ে পালাতে চেষ্টা করেও শেষরক্ষা হয়নি। অবশেষে বাল্যবিবাহের অপরাধে অভিযুক্ত বর রাহেন ব্যাপারীকে বাল্যবিবাহ নিরোধ আইন ২০১৭-এর ৭ (ক) ধারায় ৬ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। একই সঙ্গে গ্রামের একজন সম্মানিত বীর মুক্তিযোদ্ধার জিম্মায় রেখে মেয়ের বাবার কাছ থেকে মুচলেকা নেওয়া হয় প্রাপ্তবয়স্ক না হওয়া পর্যন্ত তিনি মেয়েকে বিয়ে দিতে পারবেন না। এতে তার পড়ালেখার জন্য বিদ্যালয়ে পাঠানো এবং পার্শ্ববর্তী মুনসুরাবাদ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষককে মেয়েটির সুশিক্ষা নিশ্চিত করার জন্য নির্দেশ দিয়েছে ভ্রাম্যমাণ আদালত। সূত্র মতে কিশোরী কন্যার বিয়ের জন্য ফরিদপুর পৌরসভার মাধ্যমে ভুয়া একটি জন্মনিবন্ধন সনদ তৈরি করার পাশাপাশি এফিডেভিটে তার বয়স ১৮ দেখিয়ে বিয়ের সব চেষ্টাও চালিয়েছিল দুটি পরিবার। ভাঙ্গা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মুকতাদিরুল আহমেদ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেন।