প্রথম পাতা

ইডেনে গোলাপি বলের রোমাঞ্চ

ইশতিয়াক পারভেজ, কলকাতা (ভারত) থেকে

২২ নভেম্বর ২০১৯, শুক্রবার, ৯:৩১ পূর্বাহ্ন

সন্ধ্যা নামতেই গোটা কলকাতা চলে যায় গোলাপি আলোর দখলে। ইডেন গার্ডেন্স স্টেডিয়ামকে দেখায় শহরের মাঝে দাঁড়ানো গোলাপি পরীর মতো। আজ গোলাপি বলে দিবারাত্রির টেস্ট ক্রিকেটের ইতিহাসে প্রবেশ করবে লাল-সবুজের বাংলাদেশ। প্রতিপক্ষ ভারতের জন্যও তাই। যে কারণে আয়োজক হিসেবে ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন অব বেঙ্গল (সিএবি) এই টেস্টকে ‘ঐতিহাসিক’ আখ্যা দিয়েছে। আয়োজনকে আরো আলোকিত করতে উপস্থিত থাকছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। তাদের বরণ করে নেবেন ভারত ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিসিআই) সভাপতি সৌরভ গাঙ্গুলী। যার মাথা থেকেই এসেছে এই গোলাপি ভাবনা। দুপুর সোয়া ১২টায় ইডেন স্টেডিয়ামে প্রবেশ করবেন শেখ হাসিনা ও মমতা ব্যানার্জি। আকাশ থেকে প্যারাটু্রপারে নেমে আসবে গোলাপি বল। যা তুলে দেয়া হবে দুই অধিনায়কদের হাতে। এরপর ঘণ্টা বাজিয়ে যাত্রা করবেন দু’দেশের গোলাপি ইতিহাসের। এমন একটি ম্যাচে অভিষেকের জন্য রোমাঞ্চিত টাইগারদের ১১তম টেস্ট অধিনায়ক মুমিনুল হক সৌরভও। গতকাল সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘গোলাপি বলের টেস্ট নিয়ে সবাই রোমাঞ্চিত। কলকাতার সবাই এ ম্যাচের অংশ হতে চায়। পরিবার-স্বজন নিয়ে মাঠে আসতে চায়। আমাদের সবার জন্যই ম্যাচটা রোমাঞ্চকর হতে যাচ্ছে।’ আজ দুপুর দেড়টায় শুরু হবে বাংলাদেশ ও ভারত দলের ঐতিহাসিক এই টেস্ট। যা দিয়ে শেষ হবে বাংলাদেশ দলের এবারের ভারত সফর।

২০০০ সালে ভারতের বিপক্ষে বাংলাদেশের টেস্ট অভিষক হয় নিজেদের মাটিতে। সেই ভারতের বিপক্ষেই টেস্টের নতুন এক ভুবনে পা রাখতে যাচ্ছে বাংলাদেশ। এখন পর্যন্ত ১১৬ ম্যাচ খেলেছে টাইগাররা। সবশেষ ইন্দোরে। যেখানে ইনিংস ও ১৩০ রানের ব্যবধানে ভারতের কাছে হারে টাইগাররা। গোলাপি বলের ম্যাচটাকে স্মরণীয় করে রাখতে চান ভারতের অধিনায়ক বিরাট কোহলিও। তিনি বলেন, ‘স্নায়ুচাপ থাকবে, একই সঙ্গে রোমাঞ্চকরও হবে। অবশ্যই ভারতীয় ক্রিকেটের জন্য এটা বিরাট উপলক্ষ। আমরা সত্যি সৌভাগ্যবান যে, অসাধারণ এই শুরুতে আমরা থাকতে পারছি।’
বাংলাদেশ দলের নয়া ইতিহাসের সদস্য হবেন কারা, মুমিনুলের গোলাপি একাদশ কেমন হবে? এ নিয়ে চলছে নানা জল্পনা-কল্পনা। ইডেনের উইকেট ঘাস দেখে মনে হচ্ছে খেলানো হবে তিন পেসার। ধরেই নেয়া হচ্ছে মোস্তাফিজুর রহমান, আল আমিন হোসেন ও আবু জায়েদ চৌধুরী রাহী থাকছেন একাদশে। যদিও অধিনায়ক একাদশ নিয়ে কোনো তথ্য দিতে রাজি হননি। তিনি বলেন, ‘এখনও একাদশ ঠিক করা হয়নি। হয়তো কাল ঠিক করবো। টিম ম্যানেজমেন্টের সঙ্গে ওইভাবে কথা-বার্তা হয়নি। ভেতরে একটা কথা চলছে, কয়জন পেস বোলার খেলবে, কয়জন ব্যাটসম্যান  খেলবে। তবে এখানে এটা আমি পরিষ্কার করতে পারছি না।’ ইডেনে অভিষেকের সুযোগ ছিল তরুণ ব্যাটসম্যান সাইফ হাসানের। কিন্তু শেষ মুহূর্তের ইনজুরিতে ছিটকে গেছেন তিনি। ওপেনিংয়ে ভরসা রাখতে হচ্ছে ব্যর্থ ইমরুল কায়েস ও সাদমানের ওপরই। মোহাম্মদ মিঠুনের পরিবর্তে খেলার একটি সম্ভাবনা ছিল মোসাদ্দেক হোসেন সৈকতের। তিনি দেশে ফিরেছেন পারিবারিক কারণে। ফলে মিডল অর্ডারে মিঠুনই ভরসা, মুমিনুল, মুশফিকুর রহীম ও লিটন দাসের সঙ্গে। উপরের দিকে থাকছেন অভিজ্ঞ মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ। তিন পেসার নিলে বাঁহাতি স্পিনার তাইজুল হয়তো থাকবেন না একাদশে। তাই অফস্পিনার মেহেদী হাসান মিরাজকে স্পিন বিভাগ সামলাতে হবে।

ইন্দোর টেস্টে বাংলাদেশের দুঃখের নাম ব্যাটিং, প্রথম ইনিংসে ১৫০ ও দ্বিতীয় ইনিংসে ২১৩ রানে গুটিয়ে যায় তারা। আগের ম্যাচের ভুল থেকে শিক্ষা নিয়ে এগিয়ে যেতে চান মুমিনুল হক।  তিনি বলেন, ‘আমি যখনই মাঠে নামবো, জেতার জন্যই খেলবো। প্রথম টেস্টে যে ভুলগুলো করেছিলাম, সেগুলোর পুনরাবৃত্তি যেন না ঘটে সে চেষ্টা করবো। ব্যাটসম্যানরা সেশন বাই সেশন ব্যাটিংয়ের চেষ্টা করবো, বোলাররাও সেশন ধরে ধরে ভালো বোলিংয়ের চেষ্টা করবে।’
ইডেনে ৭০ হাজার দর্শক হবে। বেশিরভাগ গ্যালারি থাকবে ভারতের দর্শকদের দখলে। যা চাপ হতে পারে বাংলাদেশ দলের জন্য। কিন্তু মুমিনুল সরাসরি তা উড়িয়ে দিলেন। মাঠের দর্শকদের তিনি মনে করছেন অনুপ্রেরণা। টাইগার অধিনায়ক বলেন, ‘দর্শক যদি মাঠে থাকে আমার সবসময় খেলতে ভালো লাগে। খেলাটা অনেক বেশি মজার হয়, আমি এভাবেই চিন্তা করি। আমার মনে হয় না, এটা কোনোভাবে চাপ হবে। গোলাপি বলে ফ্লাড লাইটের আলোয় চ্যালেঞ্জ থাকবে। চ্যালেঞ্জ তো সব জায়গাতেই থাকে। আমার মনে হয় এই পর্যায়ে সবাই চ্যালেঞ্জ নিতে পারে।’
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status