বাংলারজমিন
পুরাতন স্লিপার, নেই পাথর-নাটবল্টু
তিস্তা থেকে রমনা ৫৪ কিলোমিটার রেললাইন ঝুঁকিপূর্ণ
রফিকুল ইসলাম, রাজারহাট (কুড়িগ্রাম) থেকে
২০ নভেম্বর ২০১৯, বুধবার, ৭:৫১ পূর্বাহ্ন
তিস্তা থেকে রমনা রেললাইনে পুরাতন স্লিপার, স্লিপারের পিন ও লাইনের দু’ধারে প্রয়োজনীয় পাথর না থাকায় এবং কয়েকটি ব্রিজের পিলার ভেঙে যাওয়ায় এ অঞ্চলের প্রায় ৫৪ কিলোমিটার রেলপথ অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। এতে যেকোনো মুহূর্তে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটার আশঙ্কা করছেন রেলযাত্রীরা। গত ২০শে নভেম্বর ঢাকা থেকে কুড়িগ্রাম এবং কুড়িগ্রাম থেকে ঢাকা আন্তঃনগর কুড়িগ্রাম এক্সপ্রেস প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উদ্বোধন করেন। এ ছাড়া পূর্ব নির্ধারিত একটি শাটল ট্রেন ও পার্বতীপুর থেকে রমনা লোকাল ট্রেন চলাচল করছে। ২৪ ঘণ্টায় নিয়মিতভাবে ৩টি ট্রেন যাতায়াত করায় এ অঞ্চলের রেললাইনের অবস্থা একেবারে নাজুক হয়ে পড়েছে। লাইনের উপর দিয়ে ট্রেন চলাচলের সময় লাইন আঁকাবাঁকা হয়ে যায় বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান। এ ছাড়া রেললাইনে কোথাও কোথাও স্লিপার নষ্ট, কোনো কোনো স্লিপারে পিন (বল্টু) নেই। লাইনের দু’ধারে নেই প্রয়োজনীয় পাথর। এ ছাড়াও গত ২০১৭ সালের ভয়াবহ বন্যায় পানির প্রবল স্রোতে তিস্তা থেকে রমনা স্টেশনের ৩টি ব্রিজের পিলার ভেঙে যায়। অদ্যাবধি তা সংস্কারের অভাবে ওই অবস্থায় রয়েছে ব্রিজগুলো। সবমিলে জোড়াতালি দিয়ে অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণভাবে চলছে এ সেকশনের ট্রেন। তিস্তা থেকে রমনা রেললাইনটি দ্রুত সংস্কার করার জন্য এলাকার মানুষজন কর্তৃপক্ষের নিকট দাবি তুলেছেন। কুড়িগ্রাম রেলওয়ে স্টেশন মাস্টার মো. কাবিল উদ্দিন জানান, লালমনিরহাটের তিস্তা জংশন থেকে কুড়িগ্রামের রমনাবাজার সেকশনে ৫৪ কিলোমিটার রেলপথ রয়েছে। এই রেলপথে এ জেলার সিঙ্গারডাবড়ী, রাজারহাট, টোগরাইহাট, কুড়িগ্রাম, পাঁচপীর, উলিপুর, বালাবাড়ী ও রমনাবাজার-এই ৮টি স্টেশন দিয়ে নিয়মিত ট্রেন চলাচল করছে। সকাল ৭টা ২০ মিনিটে কুড়িগ্রাম থেকে ঢাকা আন্তঃনগর কুড়িগ্রাম এক্সপ্রেস ছেড়ে যায়। এ ছাড়া দিনাজপুরের পার্বতীপুর জংশন থেকে একটি মিক্সড ট্রেন সকাল বেলা তিস্তা জংশন হয়ে রমনাবাজার পর্যন্ত চলাচল করে। এটি সকাল ৮টার দিকে তিস্তা জংশন অভিমুখে যাত্রা করে। আবার সকাল ১০টার দিকে রমনাবাজার যায়। এরপর ট্রেনটি দুপুর ১টার দিকে পার্বতীপুরের উদ্দেশ্যে চলে যায়। এ ছাড়া সন্ধ্যা ৭টার দিকে রংপুর এক্সপ্রেসের যাত্রী আনা-নেয়ার জন্য একটি শাটল ট্রেন কাউনিয়া জংশন থেকে কুড়িগ্রাম স্টেশন পর্যন্ত যাতায়াত করে। সাধারণ যাত্রীরা এসব ট্রেনে স্বল্প ব্যয়ে বিভিন্ন জায়গায় যাতায়াত করছেন। লালমনিরহাট রেলওয়ে বিভাগের বিভাগীয় প্রকৌশলী মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, তিস্তা থেকে রমনা রেললাইন ঘণ্টায় গতি ৩০ কিলোমিটার থাকলে কোনো ঝুঁকি নেই। কিন্তু ৫০/৬০ কিলোমিটার গতিতে ট্রেন চললে এই লাইন ঝুঁকিপূর্ণ। তাই ট্রেনের গতি বাড়ানোর জন্য ইতিমধ্যে প্রধান প্রকৌশলীর কাছে চাহিদা পাঠানো হয়েছে। এ ছাড়া লাইনের দু’ধারের পাথর ও পিন রাতের অন্ধকারে চুরি হওয়ায় কিছুটা সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে। সেতুগুলোর সংস্কারের কাজ ইতিমধ্যে শুরু হয়েছে।