শেষের পাতা

বাংলাদেশিদের জন্য শ্রমবাজার খুলে দিতে পারে আরব আমিরাত

কূটনৈতিক রিপোর্টার

১৯ নভেম্বর ২০১৯, মঙ্গলবার, ৯:২৭ পূর্বাহ্ন

প্রায় সাত বছর বন্ধ থাকার পর সংযুক্ত আরব আমিরাত তাদের শ্রমবাজার বাংলাদেশিদের জন্য খুলে দেয়ার ইঙ্গিত দিয়েছে। আমিরাতে ওয়ার্ল্ড সেন্টারে দুবাই এয়ার শো-২০১৯-এর সাইড লাইনে রোববার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে আবুধাবির যুবরাজ ও দেশটির সশস্ত্র বাহিনীর ডেপুটি সুপ্রিম কমান্ডার শেখ মোহাম্মদ বিন জায়েদ আল-নাহিয়ানের বৈঠকে এ নিয়ে আলোচনা এবং ইতিবাচক বার্তা পাওয়া যায়। বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশি শ্রমিকদের জন্য আমিরাতের শ্রমবাজার খোলার আহ্বান জানালে যুবরাজ নাহিয়ান শিগগিরই তার দেশের শ্রমবাজার বাংলাদেশের জন্য পুরোপুরি খুলে দেয়ার ইঙ্গিত দিয়ে বলেন, আপনার পরবর্তী আমিরাত সফরে আপনাকে এ প্রশ্নটি আর করতে হবে না।

তিনি বাংলাদেশি শ্রমিকদের জন্য আগের চেয়ে বেশি ওয়ার্ক পারমিট দেয়ারও আভাস দেন। ২০১২ সালের আগস্টে আচমকা দেশটিতে বাংলাদেশিদের  জন্য কর্মসংস্থান ভিসা বন্ধ হয়ে যায়। পরবর্তীতে বাংলাদেশিদের জন্য ব্যবসায়ী ও পর্যটক ভিসায়ও কড়াকড়ি আরোপ করে আমিরাত সরকার। তবে তা পুরোপুরি বন্ধ হয়নি কখনওই, বিশেষ পরিস্থিতিতে পরিমাণে কম হলেও ঢাকাস্থ ইউএই দূতাবাস শর্ত সাপেক্ষে ভিসা দিচ্ছিলো। বাংলাদেশ বা আমিরাত সরকার কোন সময়ই ভিসা বন্ধের বিষয়টি স্বীকার করেনি।

তবে বাস্তবতা হচ্ছে- শ্রমিকদের জন্য আমিরাতের ভিসা বন্ধ। সরকারী বা কূটনৈতিক পর্যায়ে স্বীকার করা না হলেও এটি ওপেন সিক্রেট যে আমিরাতে বাংলাদেশের নাগরিকদের অপরাধমূলক কাজে জড়িয়ে পড়ার হার বেড়ে যাওয়া এবং ওয়াল্ড এক্সপো-২০২০ এর আয়োজক হওয়ার দৌড়ে ২০১২ সালের ভোটাভুটিতে বাংলাদেশ দুবাই’র পক্ষে ভোট না দিয়ে মস্কো বা রাশিয়ার পক্ষে ভোট দেয়ার কারণেই ভিসা বন্ধ হয়। যদিও ভোটাভুটির এক পর্যায়ে রাশিয়া ঝড়ে পড়ায় (প্রতিদ্বন্ধিতার ফাইনাল রাউন্ডে) বাংলাদেশ দুবাইকে ভোট দিয়েছিল এবং চূড়ান্ত রায়ে দুবাই জয় লাভ করে।

কিন্তু এতেও বাংলাদেশের ওপর সন্তুষ্ট হয়নি সংযুক্ত আরব আমিরাত। আমিরাতের বন্ধ শ্রমবাজার খুলতে এবং নাগরিকদের ভিসার ক্ষেত্রে যাবতীয় বিধিনিষেধ প্রত্যাহারের আলোচনা করতে ২০১৪ সালে অক্টোবরে প্রধানমন্ত্রী দেশটি সফর করেন। সেই সময়ে গুরুত্বের সঙ্গে বিষয়টি আলোচনায় এসেছিল। পরবর্তীতেও এ নিয়ে দুই সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ে আলোচনা অব্যাহত ছিল, কিন্তু শেষ পর্যন্ত তা কার্যকর হয়নি। তবে এবারে যে ইতিবাচক বার্তা এসেছে তা কার্যকর হবে এমনটা আশা করছেন ঢাকার কূটনীতিকরা। একজন কূটনীতিক গতকাল মানবজমিনকে বলেন, এবার সত্যিই আমরিাতের ভিসা খুলতে যাচ্ছে। যুবরাজ এবং সুপ্রিম কমান্ডার যেভাবে বলেছেন তাতে আমরা দারুনভাবে আশাবাদী।

বাংলাদেশ থেকে চাল আমদানি করতে চায় আমিরাত: এদিকে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে যুবরাজ নাহিয়ানের সাক্ষাৎ-বৈঠক শেষ প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম সাংবাদিকদের বলেন, আমিরাতের যুবরাজ বাংলাদেশ থেকে চাল আমদানির আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, বাংলাদেশ একটি উদ্বৃত্ত চাল উৎপাদনকারী দেশ। বাংলাদেশ বিভিন্ন ধরনের চাল উৎপাদন করছে। আমরা বিভিন্ন দেশে চাল রপ্তানিও করছি। যুবরাজ বলেন, তারা বাংলাদেশ থেকে সেরা মানের চালই আমদানি করতে চান। তার দেশ তাদের চাহিদা অনুযায়ী বিভিন্ন ধরনের চাল দেখার জন্য বাংলাদেশে একটি প্রতিনিধিদল পাঠাবে বলেও জানান যুবরাজ। বৈঠককালে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন উপস্থিত ছিলেন।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status