শিক্ষাঙ্গন

জবিতে অনিয়ম করে পদোন্নতি পাওয়া কর্মকর্তাকে ‘তড়িঘড়ি’ বদলি

জয়নুল হক, জবি প্রতিনিধি

১৩ নভেম্বর ২০১৯, বুধবার, ৪:৫৫ পূর্বাহ্ন

অনিয়ম করে পদোন্নতি নেয়া জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক কোষাধ্যক্ষের আস্থাভাজন সেকশন অফিসার আনোয়ার হোসেনকে ট্রেজারার দপ্তর থেকে ‘তড়িঘড়ি’ বদলি করে পরিকল্পনা, উন্নয়ন ও ওয়ার্কাস দপ্তরে পাঠিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। গত ৩রা নভেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার প্রকৌশলী মো. ওহিদুজ্জামান সাক্ষরিত এক অফিস আদেশে এই তথ্য জানানো হয়। এদিকে নিয়োগ জালিয়াতি করে পদোন্নতি নেয়া এই কর্মকর্তাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের গুরুত্বপূর্ন দপ্তর পরিকল্পনা, উন্নয়ন ও ওয়ার্কাস দপ্তরে বদলি করায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছে বিশবিদ্যালয়ের অন্যান্য কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। কর্মচারীদের অভিযোগ সাবেক ট্রেজারারের আস্থাভাজন হওয়ায় নানা অভিযোগ সত্বেও তাকে এই গুরুত্বপূর্ন পদে আসীন করা হয়েছে। জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩য় শ্রেনীর কর্মচারী আনোয়ার হোসেন সাবেক কোষাধ্যক্ষ সেলিম ভুঁইয়ার আস্থাভাজন হওয়ায় অনিয়ম করে দপ্তরের কর্মকর্তা পদে নিয়োগ ও পদান্নোতি লাভ করেন।

বিশ্ববিদ্যালয় আপগ্রেডেশন নীতিমালা-২০১৫ অনুযায়ী- ব্যাক্তিগত সহকারী পদ থেকে সেকশন অফিসার (গ্রেড-২) তে পদোন্নতি পেতে স্নাতক/সমমান উত্তীর্ন হলে ব্যক্তিগত সহকারী পদে ৬ বছর ও এই বিশ্ববিদ্যালয়ে ৪ বছরের কাজের অভিজ্ঞতা ও স্নাতকোত্তর/সমমান উত্তীর্ন হলে ব্যক্তিগত সহকারী পদে ৪ বছর ও এই বিশ্ববিদ্যালয়ে ৩ বছরের চাকুরির অভিজ্ঞতা থাকতে হয়। বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, ২০০৮ সালের ১৫ই ডিসেম্বর আইএসসি পাস সার্টিফিকেট দিয়ে ল্যাব টেকনিশিয়ান হিসেবে যোগদান করেন আনোয়ার হোসেন। এরপর ২০১৫ সালের ৩রা ডিসেম্বর শূন্যপদ সাপেক্ষে ব্যক্তিগত সহকারী পদে নতুন করে যোগদান করেন তিনি। এরপর ২০১৮ সালের ২৬শে এপ্রিল ব্যক্তিগত সহকারী পদ থেকে সেকশন অফিসার (গ্রেড-২) এ ৪-৬ বছর কাজের অভিজ্ঞতা ছাড়াই পদোন্নতি নেন এই কর্মকর্তা। যা বিশ্ববিদ্যালয় আপগ্রেডেশন নীতিমাল-২০১৫ এর সাথে সাংঘর্ষিক। অথচ দপ্তরে যোগ্যতাসম্পন্ন আরও কর্মচারী থাকলেও তাদের মূল্যায়ন করা হয়নি। অভিযোগ আছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের গুরুত্বপূর্ন এই পদে থেকে আনোয়ার হোসেন বিভিন্ন অনৈতিক সুবিধা ভোগ করে আসছেন। বিশ্ববিদ্যালয় অন্যান্য কর্মকর্তাদের মাধ্যমে নিজস্ব বলয় তৈরী করেছেন।

কার্যালয়ের বিভিন্ন টেন্ডারসহ নিয়োগ কার্যক্রম দেখাশুনা করেন। বিভিন্ন কর্মকর্তা পদে নিজ পরিবারের সদস্যদের চাকুরি দিয়েছেন। এর মধ্যে আনোয়ারের স্ত্রী সামছুন্নাহারকে রেজিস্ট্রার দপ্তর, দুই শালিকা সোনিয়া আক্তার ও তাছলিমা খাতুনকে যথাক্রমে ট্রেজারার দপ্তর ও ইতিহাস বিভাগে নিয়োগ করিয়েছেন। এছাড়াও নিজেকে রেজিস্ট্রারের আত্মীয় পরিচয় দিয়ে দপ্তরের অন্যান্য কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ভয়-ভীতি দেখান এই কর্মকর্তা। এছাড়াও এই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্যারেজের অর্ধেক দখল করে বাসভবন করার অভিযোগ আছে। জবির একমাত্র গ্যারেজটি ছিল বিশ্ববিদ্যালয়ের জামে মসজিদ ও পোগোজ স্কুল অ্যান্ড কলেজ সংলগ্ন। সরেজমিন দেখা গেছে, গ্যারেজ দখল করে বাস করছেন সাবেক ট্রেজারারের ব্যক্তিগত কর্মকর্তা আনোয়ার হোসেনের পরিবার ও গাড়িচালক আবুল কালাম। তারা এবিষয়ে সাবেক ট্রেজারারের মৌখিক অনুমতি নিয়েছেন বলে জানান। এই কর্মকর্তা বিশ্ববিদ্যালয়ের গাড়ি অনুমোদন ছাড়াই ঢাকার বাহিরে ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহার করে থাকেন। এ সংক্রান্ত বিষয়ে একটি অভিযোগ উপাচার্যের দপ্তরে তদন্তাধীন আছে। সার্বিক বিষয়ে রেজিস্ট্রার প্রকৌশলী মো. ওহিদুজ্জামানের সঙ্গে যোগাযোগ করতে চাইলে ব্যক্তিগত মুঠোফোনে তিনি সংযোগ করেননি। দপ্তরে গিয়ে যোগাযোগ করতে চাইলেও তাকে পাওয়া যায়নি। তবে তিনি জানিয়েছেন, সিন্ডিকেট অনুমোদিত নিয়োগ ও পদোন্নতি নীতিমালা ছাড়া কাউকে নিয়োগ দেয়া সম্ভব না। নিয়মবহির্ভূত কাউকে নিয়োগ প্রদান করাও হয়নি।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status