শেষের পাতা

দুর্ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধ করতে সংশ্লিষ্ট সকলকে সতর্ক থাকার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর

স্টাফ রিপোর্টার

১৩ নভেম্বর ২০১৯, বুধবার, ৯:১৪ পূর্বাহ্ন

বাংলাদেশ এখন সারাবিশ্বের কাছে বিনিয়োগের সব থেকে আকর্ষণীয় স্থান উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আমাদের কর্মক্ষম জনশক্তি, এটাই বিশ্বকে আরো বিশেষভাবে আকর্ষণ করছে দেশে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে। তবে কেবল কৃষির ওপর নির্ভরশীল না থেকে কর্মসংস্থান এবং রপ্তানি বৃদ্ধির মাধ্যমে আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের জন্য ব্যাপক শিল্পায়নের পথে যাওয়ার জন্য সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহ্বান জানান তিনি। ট্রেন দুর্ঘটনায় প্রাণহানির ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রী এ ধরনের দুর্ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধ করতে সংশ্লিষ্ট সকলকে সতর্ক থাকার নির্দেশ দিয়ে বলেন, রেলের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সকলকে এ ধরণের দুর্ঘটনা বন্ধে সতর্ক থাকতে হবে। ভবিষ্যতে ট্রেন দুর্ঘটনা প্রতিরোধে চালকদের প্রশিক্ষণের ওপরও গুরুত্বারোপ করে তিনি বলেন, রেলে যারা কাজ করেন তাদের আরও দক্ষ করা উচিত এবং সেই সঙ্গে আমাদের রেল চালকদের প্রশিক্ষণের প্রয়োজন। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, জানি না কেন শীত মৌসুম আসলেই কেবল আমাদের দেশেই নয়, সমগ্র বিশ্বেই রেলের দূর্ঘটনা দেখতে পাওয়া যায়। গতকাল প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে বাংলাদেশ রপ্তানী প্রক্রিয়াকরণ এলাকা কর্তৃপক্ষ (বেপজা)’র গভর্ণর বোর্ডের ৩৪তম সভায় সূচনা বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, আমরা ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের মত প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকেও নিজেদের রক্ষা করতে পারলাম।

কিন্তু দুর্ভাগ্য যে, এ ধরণের একটা দূর্ঘটনা (রেল) ঘটে গেল। কৃষির ওপর নির্ভরশীল না থেকে ব্যাপক শিল্পায়নের পথে যাওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের অর্থনীতি কৃষি নির্ভর, কিন্তু এককভাবে এই কৃষি নির্ভর না থেকে কৃষির সঙ্গে সঙ্গে আমাদের শিল্পের উন্নয়ন করা অপরিহার্য। আর সেই উন্নয়ন করতে পারলে আমাদের কর্মসংস্থান বৃদ্ধি পাবে, রপ্তানি বৃদ্ধি পাবে, দেশের অভ্যন্তরীণ চাহিদা বৃদ্ধি পাবে এবং মানুষের আর্থসামাজিক উন্নয়ন হবে। প্রধানমন্ত্রী তার সরকারের মেয়াদে শিল্পায়নকে গুরুত্ব দিয়ে বিভিন্ন অর্থনৈতিক পদক্ষেপ গ্রহণের কথা তুলে ধরে বলেন, শিল্প উন্নয়ন করতে পারলেই আমাদের কর্মসংস্থান বৃদ্ধি, রপ্তানি বৃদ্ধি পাবে, দেশের মানুষের অভ্যন্তরীণ চাহিদা বৃদ্ধি পাবে, মানুষের আর্থসামাজিক উন্নতি হবে। দেশের মানুষের ক্রয় ক্ষমতা বৃদ্ধি করা হবে এবং সঙ্গে সঙ্গে দেশকে আরও উন্নত সমৃদ্ধ করা, এই লক্ষ্য নিয়েই আমাদের এগিয়ে যেতে হবে। তিনি বলেন, সেক্ষেত্রে বেপজা যথেষ্ট অবদান রেখে যাচ্ছে। সেখানে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকারী আসছে। বিনিয়োগ হচ্ছে এবং বিনিয়োগের চাহিদা আরও বৃদ্ধি পাচ্ছে। বাংলাদেশ এখন সারাবিশ্বের কাছে বিনিয়োগের সবথেকে আকর্ষণীয় স্থান। শেখ হাসিনা আরও বলেন, সেই লক্ষ্য সামনে নিয়ে ইতোমধ্যে আমরা বেপজার সঙ্গে সঙ্গে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তুলছি। কারণ আমাদের বিশেষ লক্ষ্য রাখতে হবে যে, আমাদের খাদ্য উৎপাদন যেন কোনমতে হ্রাস না পায়। জনসংখ্যার বৃদ্ধির সঙ্গে খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধি করা, খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, সেটাও আমাদের লক্ষ্য। আর খাদ্য চাহিদা পৃথিবীতে কখনও কমবে না, এটা প্রতিনিয়ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। কাজেই সেদিকে লক্ষ্য রেখেই আমরা শিল্পাঞ্চলগুলো বিশেষভাবে করে দিচ্ছি। যাতে করে এই সমস্ত জায়গায় শুধু শিল্প হবে। সঙ্গে সঙ্গে পরিবেশ রক্ষার দিকটাও বিশেষভাবে দৃষ্টি দিতে হবে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, পরিবেশ রক্ষা করে শিল্পায়নের মাধ্যমে আমাদের দেশকে সমৃদ্ধশালী করব। সেই লক্ষ্য আমরা অর্জন করব।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে গভর্ণর বোর্ডের সভায় বেপজার নির্বাহী চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল এস এম সালাহউদ্দিন ইসলাম বীরপ্রতীক বেপজার বিভিন্ন কর্মকাণ্ড ও সাফল্যের দিক তুলে ধরেন। তিনি বলেন, দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ৮টি ইপিজেড স্থাপনের মাধ্যমে আর্থ-সামাজিক উন্নয়নসহ দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ আকৃষ্টকরণ, কর্মসংস্থান বৃদ্ধি এবং রপ্তানিতে বৈচিত্র্য আণয়নে অগ্রণী ভূমিকা পালন করছে। সাফল্যমন্ডিত ৮টি ইপিজেডের অধিকাংশের যাত্রা শুরু হয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাত ধরে। তিনি শিল্পায়নের ক্ষেত্রে সৃষ্টি করেছেন এক যুগান্তকারী ইতিহাস।

সভায় অন্যদের মধ্যে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আব্দুল মোমেন, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল, শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ুন, বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী বীরপ্রতীক, বিদ্যুৎ ও জ্বালানী প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু, নৌ-পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী বেগম মুন্নুজান সুফিয়ান, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব সাজ্জাদুল হাসান, প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিমসহ সংশ্লিষ্ট সচিব ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। সঞ্চালনা করেন প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব মো. নজিবুর রহমান। এছাড়াও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের উর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং বেপজা সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status