দেশ বিদেশ

সিজারের পর সেলাই না করে পলায়নকালে আটক ২, প্রসূতির মৃত্যু

স্টাফ রিপোর্টার, পাবনা ও চাটমোটর প্রতিনিধি

১৩ নভেম্বর ২০১৯, বুধবার, ৯:০৩ পূর্বাহ্ন

পাবনার চাটমোহরে একটি ক্লিনিকে অপারেশন টেবিলে অন্তঃসত্ত্বা এক মায়ের পেট কেটে সেলাই ও আনুষঙ্গিক কাজ না করেই পালানোর সময় কথিত চিকিৎসকসহ দুজনকে গণধোলাই দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করেছে এলাকাবাসী। পরে প্রসূতি তাছলিমা খাতুন (৩৫)কে সঙ্কটাপন্ন অবস্থায় পাবনা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। তার গর্ভে জন্ম নেয় এক কন্যা শিশু। তাকেও সঙ্কটাপন্ন অবস্থায় চাটমোহর স্বাস্থ্য কেন্দ্রে ভর্তি করা হয়েছে। সোমবার রাতে চাটমোহরের ইসলামিক হাসপাতাল নামের একটি বেসরকারি ক্লিনিকে এ ঘটনা ঘটে।
মৃত তাছলিমা খাতুন বিলচলন ইউনিয়নের বোথড় গ্রামের ইসমাইল হোসেনের স্ত্রী। আটক কথিত সার্জন সাদ্দাম হোসেন নীরব পার্শ্ববর্তী বড়াইগ্রাম উপজেলার বাসিন্দা। আটক আরেকজন তার সহকারী আসাদুজ্জামান। তবে ক্লিনিক মালিক আমির হোসেন বাবলু কৌশলে পালিয়ে যায়।

প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয়রা জানান, সোমবার তাছলিমা খাতুনের প্রসব বেদনা উঠলে সিজারিয়ান অপারেশনের জন্য স্বজনরা তাকে পৌর শহরের নারিকেলপাড়া মহল্লায় অবস্থতি ‘চাটমোহর ইসলামিক হাসপাতাল’ নামে ওই ক্লিনিকে ভর্তি করে। রাত সাড়ে আটটার দিকে কথিত সার্জন সাদ্দাম হোসেন নীরব, তার সহকারী আসাদুজ্জামান, ক্লিনিক মালিক আমির হোসেন বাবলু এবং দু’জন নার্স মিলে অস্ত্রোপচার শুরু করে এবং একটি কন্যা সন্তানের জন্ম হয়।
এ সময় রোগীর অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ শুরু হলে অবস্থা বেগতিক দেখে কথিত সার্জন ও তার সহকারীরা রোগীকে অপারেশন টেবিলে রেখে সেলাই ও আনুষঙ্গিক কাজ না সেরে কৌশলে পালানোর চেষ্টা করে। এ সময় এলাকাবাসী টের পেয়ে তাদের আটক করে গণধোলাই দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করে। তবে এর মধ্যে সটকে পরে ক্লিনিক মালিক আমির হোসেন বাবলু।

ঘটনার পর রোগীর স্বজন এবং স্থানীয়রা উত্তেজিত হয়ে পড়লে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করে। পরে তাছলিমা খাতুনকে সঙ্কটাপন্ন অবস্থায় পাবনা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

এ ব্যাপারে চাটমোহর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. বায়েজীদ-উল ইসলাম বলেন, খবর পেয়ে ওই ক্লিনিকে গিয়ে দেখি রোগীর অবস্থা খারাপ। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ শুরু হলে রোগীকে সেলাই না করেই সবাই পালায়। পরে সঙ্কটাপন্ন অবস্থায় তাকে চিকিৎসা দিয়ে পাবনা জেনারেল হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়।   
পাবনার সিভিল সার্জন ডা. মো. মেহেদি ইকবাল জানান, ক্লিনিকটির লাইসেন্স নবায়ন ছিল না। ঘটনা ঘটারপর রাতেই আমি ক্লিনিকটি বন্ধের নির্দেশ দিয়েছি। এ ব্যাপারে আমরা আইনগত ব্যবস্থা নেব।

এদিকে সদ্য জন্ম নেয়া শিশুর শারীরিক অবস্থা অনেকটা ভালো বলে জানিয়েছেন চাটমোহর স্বাস্থ্য কেন্দ্রের কত্যব্যরত চিকিৎসক। নাতনিকে কোলে নিয়ে মেয়ে হারানোর মাতম করছেন মজনু প্রামাণিক।
এ ব্যাপারে চাটমোহর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সেখ নাসীর উদ্দিন জানান, কথিত ডাক্তার সাদ্দাম হোসেন এবং তার সহকারী আসাদুজ্জামানকে আটক করা হয়েছে । তবে মঙ্গলবার বিকেল ৪টা পর্যন্ত কোন মামলা হয়নি। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য পাবনা মর্গে পাঠানো হয়েছে।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status