বাংলারজমিন

স্কুল মেরামত প্রকল্পে ভুয়া বিল-ভাউচার

চিলমারী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি

৯ নভেম্বর ২০১৯, শনিবার, ৬:৩৬ পূর্বাহ্ন

অনিয়মকে নিয়ম আর ভুয়া বিল-ভাউচারকে ঠিক রেখে স্কুল মেরামতের টাকা নয়ছয়ের অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ উঠেছে চিলমারী উপজেলার প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মেরামতের নামে টাকা আত্মসাতের। উপজেলায় ৯৩টি বিদ্যালয়ের মধ্যে ৫৫টি বিদ্যালয়ের মেরামত প্রকল্পের নামেমাত্র কাজ দেখিয়ে বেশিরভাগ টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে ভুয়া বিল-ভাউচার করে। শুধু তাই নয়, বিদ্যালয়ে কত বরাদ্দ বা কাজের ব্যাপারেও জানেন না সহকারী শিক্ষকরা বা কমিটির সদস্য।
জানা গেছে, ২০১৮-১৯ অর্থবছরে উপজেলার বিভিন্ন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মেরামত প্রকল্পে ৯৭ লাখ ৮৫ হাজার টাকা বরাদ্দ দেয় সরকার। কিন্তু প্রকল্পে ওইসব বিদ্যালয়ের মেরামত নামমাত্র দেখিয়ে বেশিরভাগ টাকা ভাগাভাগি করে আত্মসাৎ করা হয়েছে। বেশকিছু বিদ্যালয়ের কাজের নামে কাগজে ভুয়া ভাউচার দাখিল করেই পকেট ভারী করারও অভিযোগও উঠছে। আবার নামেমাত্র কাজ দেখিয়ে সিংহভাগ টাকা ভাগাভাগি হয়ে চলে যাচ্ছে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা, সংশ্লিষ্ট বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও কতিপয় পরিচালনা কমিটির সভাপতির পকেটে। সঠিক তদন্তে বিষয়টির সত্যতা পাওয়া যাবে বলে দাবি করছেন স্থানীয় অনেকে। যদিও শিক্ষা অফিসার ও সংশ্লিষ্ট প্রধান শিক্ষক তা অস্বীকার করেছেন। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, উপজেলায় ওয়াস ব্লকসহ ৫৫টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাইনর মেরামতের ৬৪ লাখ ৬৫ হাজার, রাজস্ব মেরামতের ৩০ লাখ, ওয়াস ব্লক মেরামতের জন্য ৩ লাখ ২০ হাজার টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়। অভিযোগ করা হচ্ছে, অর্থবছরের জুন মাস অনেক আগেই শেষ হয়ে গেলেও ওইসব বিদ্যালয়ের বেশিরভাগ কাজই এখনো করা হয়নি। অথচ উপজেলা শিক্ষা অফিসসহ সংশ্লিষ্ট বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মিলে কাগজে-কলমে কাজ দেখিয়ে টাকা উত্তোলন করা হয়েছে। সূত্র মতে, উপজেলা শিক্ষা কমিটির নির্দেশনা অনুযায়ী চলতি বছরের জুন মাসে কাজ শেষ করার সিদ্ধান্ত ছিল। কিন্তু তা না করেই ওই সময় কিছুসংখ্যক দায়িত্বে থাকা ব্যক্তি কাগজে-কলমে তা দেখালেও কমিটি বা সহকারী শিক্ষকদের না জানিয়ে পরবর্তীতে নামেমাত্র কাজ দেখিয়ে বেশিরভাগ টাকা আত্মসাতের চেষ্টা অব্যাহত রেখে পকেট ভারী করছেন। চরশাখাহাতি ১নং, কাঁচকোল ও পূর্ব চর পাত্রখাতা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ কয়েকটি বিদ্যালয়ের মেরামতসহ বিভিন্ন বরাদ্দের ৩ লাখ করে টাকা বরাদ্দ দেয়া হলেও বরাদ্দের বিষয় জানেন না বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক কিংবা কমিটির সদস্যরা। এছাড়াও বিদ্যালয়ে কী কাজ করা হয়েছে সেটিও বলতে পারেননি বেশিরভাগ সহকারী শিক্ষকগণ। কাজে অনিয়ম করে নিজেদের পকেট ভারী করা হচ্ছে বলে অভিযোগ ডিএ চিলমারী, দীঘলকান্দি, গৌড় মোহনহাট, কে ডিওয়ারী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ বেশকিছু বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধেও। চিলমারী ২নং, কালিকাপুর ও ডাটিয়ার চর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নামেমাত্র কাজ দেখিয়ে বেশিরভাগ টাকা আত্মসাৎ করাসহ নিজের দুর্নীতি ঢাকতে চেষ্টা ও তদবির চালিয়ে যাচ্ছেন বলেও সূত্রে জানা গেছে। শরীফেরহাট, রানীগঞ্জ বাজার, জোড়গাছ সরকারি প্রাথমিকসহ ২/৪টি বিদ্যালয়ের কাজ কিছুটা ভালো হলেও বেশিরভাগ বিদ্যালয় নামেমাত্র কাজ শেষ করে ভুয়া বিল ভাউচার দেখিয়ে সিংহভাগ টাকা প্রধান শিক্ষকগণ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে মিলে আত্মসাৎ করেছে বলে বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে। এ ব্যাপারে উপজেলা শিক্ষা অফিসার আবু সালেহ সরকারের সঙ্গে কথা হলে তিনি তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, কাজের মান যাচাই করে বিল প্রদান করা হবে। এছাড়াও কারো বিরুদ্ধে অভিযোগ পেলে তদন্ত পূর্বক ব্যবস্থা নেয়া হবে।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status