ভারত
আসামে ডিটেনশন ক্যাম্পে আরও একজনের মৃত্যু
কলকাতা প্রতিনিধি
২৬ অক্টোবর ২০১৯, শনিবার, ১:১১ পূর্বাহ্ন
আসামের একটি ডিটেনশন ক্যাম্পে আরও এক বন্দির মৃত্যু হয়েছে। এ ক্ষেত্রেও পরিবারের লোকজন ভারতীয় নাগরিকত্বের স্বীকৃতি না দেয়া পর্যন্ত মৃতদেহ নিতে অস্বীকার করেছেন। এ নিয়ে আসামের বিভিন্ন ডিটেনশন ক্যাম্পে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৭-এ। গত বৃহস্পতিবার মৃত বন্দির নাম ফালু দাস (৭০)। গুয়াহাটির মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা গেছেন তিনি। তার বাড়ি আসামের নলবাড়ি জেলার চাতেমাড়ি গ্রামে। অবৈধ বাংলাদেশি তকমা লাগিয়ে তাকে আসামের ডিটেনশন ক্যাম্পে বন্দি করে রাখা হয়েছিল। আসামের মানবাধিকার সংগঠন ‘আমরা বাঙালি’র সচিব এবং নাগরিক অধিকার রক্ষা কমিটির সচিব প্রধান সাধন পুরকায়স্থ এই প্রতিবেদককে জানিয়েছেন, আসামের ৬টি ডিটেনশন ক্যাম্পে না খেয়ে, উপযুক্ত চিকিৎসা না পেয়ে ও কারারক্ষীদের জুলুমের শিকার বন্দিদের মৃত্যু হচ্ছে। তার মতে, অমানবিক পরিবেশে বন্দিদের ডিটেনশন ক্যাম্পগুলোতে রাখা হয়েছে। এর আগে গত ১৩ই অক্টোবর তেজপুরের ডিটেনশন ক্যাম্পে থাকা দুলাল পাল নামের এক বিদেশি আখ্যায়িত বন্দির মৃত্যু হয়েছে। তার পরিবারের পক্ষ থেকে ভারতীয় স্বীকৃতি না দেয়া পর্যন্ত মৃতদেহ নিতে অস্বীকার করা হয়েছিল। তার মৃতদেহ এক সপ্তাহ গুয়াহাটির হাসপাতালের মর্গে থাকার পরে মুখ্যমন্ত্রীর অনুরোধে মৃতদেহের ডেথ সার্টিফিকেটে ভারতীয় ঠিকানা সংযুক্ত করার বিনিময়ে সম্প্রতি পরিবারের লোকজন গ্রহণ করে শেষকৃত্য সম্পন্ন করেছেন। আসামের তেজপুর, গোয়ালপাড়া, শিলচর, ধিব্রুগড়, কোকড়াঝাড় ও জোরহাট জেলায় কারাগারের মধ্যেই এই ডিটেনশন ক্যাম্পগুলো স্থাপন করা হয়েছে। এর মধ্যে তেজপুর ও গোয়ালপাড়া ডিটেনশন ক্যাম্পে এখন পর্যন্ত যথাক্রমে ১০ ও ১১ জন বন্দি মারা গেছেন। এ ছাড়া শিলচর ডিটেনশন ক্যাম্পে ৩ জন, কোকড়াঝাড়ে ২ জন এবং জোরহাটে ১ জন মারা গেছেন। ধিব্রুগড় ডিটেনশন ক্যাম্পে এখন পর্যন্ত কেউ মারা যাননি। সাধন পুরকায়স্থ ডিটেনশন ক্যাম্পে ২৭ জনের মৃত্যুর জন্য মুখ্যমন্ত্রী সদানন্দ সনোয়ালকে দায়ী করেছেন। তার অভিযোগ, রাজ্য সরকার সাধারণ মানুষকে ‘বিদেশি’ বানিয়ে হত্যা করছে। জানা গিয়েছে, মৃত ২৭ জনের মধ্যে ২৫ জনের মৃত্যু হয়েছে বর্তমান বিজেপি সরকারের আমলে। এই ২৭ জনের মধ্যে হিন্দু ও মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষ রয়েছেন ১৩ জন করে। বাকি একজন অন্য সম্প্রদায়ের। আসামের ৬টি ডিটেনশন ক্যাম্পে থাকা বিদেশিদের, বিশেষ করে বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীদের বন্দি রাখার জন্য এই ডিটেনশন ক্যাম্পগুলো তৈরি করা হয়েছে। প্রায় তিন হাজার বিদেশি চিহ্নিত বন্দি রাখার জন্য গোয়ালপাড়ায় আরও একটি বিশাল আকারের ডিটেনশন ক্যাম্প তৈরির কাজ শুরু হয়েছে।