বাংলারজমিন

ত্রিশ বছর ঘুরে বেড়ানো ববিতাকে নিয়ে কৌতূহল

এবিএম আতিকুর রহমান, ঘাটাইল (টাঙ্গাইল) থেকে

২২ অক্টোবর ২০১৯, মঙ্গলবার, ৭:১৮ পূর্বাহ্ন

দাঁত নেই, তবুও মুচকি হাসে ববিতা। কিন্তু কি যেন মনে করে ক্ষণে ক্ষণে কাঁদে আবার পরক্ষণেই হাসে। তার এই হাসি-কান্না বড়ই রহস্যময়। এলাকায় সে ‘ববিতা পাগলিনি’ হিসেবে পরিচিত। প্রায় ত্রিশ বছর ধরে ঘাটাইল উপজেলার কলেজ মোড় থেকে বাসস্ট্যান্ডে তাকে দিন-রাত ঘুরে বেড়াতে দেখা যায়। তার প্রকৃত বয়স কত, কোথা থেকে এসেছে, বাড়ি কোথায় তা সবার অজানা। ত্রিশ বছর আগে তার শারীরিক অবস্থা যেমন ছিল এখনো ঠিক তেমনই আছে। রাতের বেলায় ঘুমানোর জন্য সে বেছে নিয়েছে নির্মাণ সংগঠনের (এনজিও) বারান্দা। ববিতা সবার অতি পরিচিত মুখ। দিনমজুর, ব্যবসায়ী, চাকরিজীবী এমনকি রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব সবাই ববিতাকে আদর করে নাম ধরে ডাকে। কখনো ডাকে সাড়া দেয় আবার কখনো দেয় না। সবার দেয়া খাবারও সে খায় না। আবার যাকে ভালো লাগবে তার কাছ থেকে এটা- ওটা চেয়ে খায়। খাবার হোটেলগুলোতে তার জন্য সব সময় দরজা খোলা থাকে। কখনো খাবার খেতে গেলে কি যে আদর আপ্যায়ন তা আর বলে শেষ করা যায় না। কারো সঙ্গে কথা তেমন একটা বলে না ববিতা। আর যাও দু’একটা বলে তা বোঝা যায় না। তবে কি যেন মনে করে ক্ষণে ক্ষণে কাঁদে আবার পরক্ষণেই হাসে। সড়কের দু’ধারের দোকানদারগুলো ববিতাকে অনেক ভালোবাসে। কারো দোকানে গেলে দোকান মালিক তার চেয়ার ছেড়ে দেয় বসার জন্য। যতক্ষণ মন চায় দোকানে বসে থাকে। এর ভেতরে চলে আপ্যায়ন। চা এবং পান এ দুটোই সে বেশি ভালোবাসে। সবাই বলে ববিতা যেদিন দোকানে আসে তাদের বিক্রি নাকি কয়েক গুণ বেড়ে যায়। তাকে সব সময় দেখেন এবং জানেন স্থানীয় মোহাম্মদ আলী। তিনি জানান, ত্রিশ বছর ধরে সে এই এলাকায় আছে। কোনোদিন তাকে গোসল করতে দেখিনি। অথচ তার কাছে গিয়ে বসলে শরীর থেকে কোনো গন্ধ আসে না। সে কোনোদিন অসুস্থও হয় না। ত্রিশ বছর আগে তার শারীরিক অবস্থা যেমন ছিল এখনো ঠিক তেমনই আছে। কলেজ মোড় এলাকার জেমি ফার্মেসির মালিক জামাল হোসেন বলেন, তার ভেতরে মনে হয় অলৌকিক কিছু আছে। আমার দোকানের কর্মচারী একদিন চুরি করেছিল যা আমি নিজেও জানতাম না। কোথা থেকে যেন ববিতা এসে সেই কর্মচারীকে জুতা দিয়ে পিটানো শুরু করলো। পরে চুরির বিষয়টি জানতে পারি। ঘাটাইল উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. শহিদুল ইসলাম (লেবু) বলেন, প্রায় ত্রিশ বছর ধরে আমি তাকে এ এলাকায় দেখে আসছি। তার ভেতরে অলৌকিক কিছু থাকতে পারে। দোকানদাররা আত্মবিশ্বাস নিয়ে তাকে দোকানে বসায় এবং সেবাযত্ন করে। আবার সবার দেয়া খাবার সে খায় না। যাকে ভালো লাগে তার কাছ থেকে চেয়ে খায়। কখনো কারও ক্ষতি করেছে এমনটাও জানা নেই কারও। এক কথায় তাকে ঘিরে এক বিরাট রহস্য তৈরি হয়েছে। প্রতিদিন অনেক লোকজন আসছে তাকে এক নজর দেখার জন্য।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status