দেশ বিদেশ

জাতীয় পরিচয়পত্র নিবন্ধনে প্রবাসীদের ৮ তথ্য বেশি দিতে হবে

স্টাফ রিপোর্টার

১৯ অক্টোবর ২০১৯, শনিবার, ৮:৪৬ পূর্বাহ্ন

প্রবাসে বসবাসরত বাংলাদেশের নাগরিকদের সংশ্লিষ্ট দেশেই ভোটার করে নিয়ে জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) সরবরাহের প্রক্রিয়া শুরু করছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। প্রবাসে এ কার্যক্রম শুরুর জন্য এবার বিধিমালাও প্রণয়ন করছে সংস্থাটি। ইসি প্রণীত প্রবাসীদের ভোটার হওয়ার জন্য বিধিমালায় অন্তত আটটি তথ্য বেশি দেয়ার বিধান রাখা হয়েছে। এজন্য বিধিমালায় সংযোজন করা হয়েছে ফরম-২(ক)।
জাতীয় পরিচয়পত্র নিবন্ধন অনুবিভাগের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ সাইদুল ইসলাম জানান, চলতি সপ্তাহেই অনলাইনে আবেদনের জন্য একটি পৃথক সার্ভার তৈরি করে ঘোষণা দেওয়া হবে। যেখানে যুক্তরাজ্য, দুবাই, সিঙ্গাপুর ও সৌদি আরবের প্রবাসীরা এ সুযোগ পাবেন। পরবর্তীতে সুযোগ পাবেন, কানাডা ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত বাংলাদেশিরা। সেই কার্যক্রমের অংশ হিসেবেই সমপ্রতি ইসি সচিব মো. আলমগীর স্বাক্ষরিত ভোটার তালিকা প্রণয়ন বিধিমালা সংশোধনের একটি গেজেট প্রকাশ করা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, প্রবাসীরা বসবাসরত দেশে ইসির স্থাপিত  রেজিস্ট্রেশন কেন্দ্রে গিয়ে কিংবা অনলাইনে ভোটার হওয়ার আবেদন করতে পারবেন। এক্ষেত্রে তিনি সর্বশেষ যে এলাকায় বসবাস করেছেন বা নিজের বা বাবার বাড়ির ঠিকানায় ভোটার হওয়ার জন্য আবেদন করতে হবে। পরবর্তীতে তার আবেদন সেই এলাকার উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তার মাধ্যমে তদন্তের পর দশ আঙ্গুলের ছাপ, চোখের আইরিশের প্রতিচ্ছবি ও ছবি তুলে তাকে এনআইডি সরবরাহ করা হবে। এর আগের রেজিস্ট্রেশন কেন্দ্রে ও ইসির ওয়েবসাইটে দাবি-আপত্তির জন্য তালিকা দেওয়া হবে। এ সময়ের মধ্যে কোনো ভুল থাকলে  সেটাও সংশোধন করা যাবে।
গেজেট আকারে প্রকাশিত প্রবাসীদের ফরম পূরণের ক্ষেত্রে দেখা যায়, পিতার নাম ও মাতার নাম ইংরেজি ও বাংলায়, বসবাসরত দেশের নাম, জিপ কোড, বাসা ও হোল্ডিং নম্বর, স্টেট বা  প্রোভিঞ্চ,  ফোন নম্বর, শনাক্তকারী ব্যক্তির নাম প্রভৃতি তথ্য বেশি দিতে হবে। এছাড়া পাসা পোর্ট নম্বর, টিআইএন নম্বরও সংযোগ করতে হবে। যেখানে দেশে বসবাসরতদের জন্য পিতার নাম বা মাতার নাম বাংলা কিংবা ইংরেজি যে কোনো একটায় লিখলেই হয়। পাসপোর্ট নম্বর ও টিআইএন না দিলেও চলে, কেননা সেখানে ‘যদি থাকে’ লেখা থাকে। এছাড়া দেশের বসবাসরতদের জন্য ফরমে স্বাক্ষর করতে হয় শনাক্তকারী ব্যক্তির তথ্যের আগেই। আর নামও উল্লেখ করতে হয় না। কিন্তু প্রবাসীদের বেলায় স্বাক্ষর করতে হবে শনাক্তকারী ব্যক্তির তথ্য দেয়ার পর। অর্থাৎ প্রবাসীদের ফরমে শনাক্তকারীর নাম, এনআইডি নম্বর ও স্বাক্ষর দিতে হবে।
এ বিধানের বলে অনেক প্রবাসী ঝামেলায় পড়বেন বলেও মনে করছেন। যুক্তরাজ্য প্রবাসী সুমন দাস বলেন, বিদেশে অবস্থানের সময় পরিচিত লোক পাওয়াই তো মুশকিল। সেখানে কে শনাক্ত করবে, এটি একটি ঝামেলার বিষয় হয়ে দাঁড়াবে। যেহেতু স্বাক্ষর করা লাগবে, তাই শনাক্তকারী হিসেবে দেশে অবস্থানরত কারো তথ্যও দেওয়া যাবে না। তাই বিষয়গুলো নিয়ে নির্বাচন কমিশনের আরও  খোলাসা করা উচিত।
এদিকে, ইসি কর্মকর্তারা বলছেন, যেহেতু অনলাইনে আবেদন নেওয়া হবে, তাই ফরম শনাক্তকারীর কাছে পাঠিয়ে স্বাক্ষর নিয়ে স্ক্যান করে সেটাও দেয়া যাবে। আবার প্রবাসের যে কমিউনিটির সঙ্গে বসবাস করা হয়, তাদের কেউ শনাক্ত করলেও হয়ে যাবে। তাদের মতে নাগরিক সেবা আরো সহজ করতেই তাদের এই উদ্যোগ।
উল্লোখ, ২০০৮ সালের নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পূর্বে এটিএম শামসুল হুদার নেতৃত্বাধীন নির্বাচন কমিশন ছবিযুক্ত ভোটার তালিকা প্রণয়ন করেন। যার ভিত্তিতেই পরবর্তীতে ভোটারদের জাতীয় পরিচয়পত্র দেয়া হচ্ছে। গড়ে তোলা হয় এনআইডি তথ্য ভাণ্ডার। বর্তমানে ৫০টির বেশি সংস্থা-প্রতিষ্ঠান এ তথ্যভাণ্ডার থেকে ব্যক্তির পরিচয় নিশ্চিত হয়ে নিচ্ছে। এতে অপরাধী চিহ্নিতকরণসহ বহুমুখী সমস্যা সমাধান অনেক সহজ হয়ে গেছে। পাশাপাশি সহজেই মিলছে নাগরিক সেবা।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status