বাংলারজমিন

ধান ভাঙার কল যাচ্ছে বাড়ি বাড়ি

ইসলামপুর (জামালপুর) প্রতিনিধি

১৯ অক্টোবর ২০১৯, শনিবার, ৮:২৯ পূর্বাহ্ন

এখন আর কাউকে ধান নিয়ে ছুটতে হয় না বাজার বা ধান ভাঙার মেশিন বাড়িতে। রিকশা, বাইসাইকেল ও মাথায় বহন করতে হয় না ধান বা চালের বস্তা। এখন ধান ভাঙার মেশিনই বাড়িতে বাড়িতে যাচ্ছে। আর এসব সমাধান করে দিয়েছেন জামালপুরের ইসলামপুর উপজেলার চরপুটিমারী ইউনিয়নের চিনারচর গ্রামের আশরাফ আলী’র (৫৫) ভ্রাম্যমাণ ধান ভাঙার কল। এটা এখন গ্রাম বাংলায় দিনে দিনে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।
গেরস্থ বাড়ির দোরগোড়ায় গিয়ে ধান  ভেঙে চাল করে দেন আশরাফ আলী। ধান ভাঙা আর পিঠা খাওয়ার জন্য চাল গুঁড়ো করার জন্য ব্যবহৃত হতো ঢেঁকি। এখন গ্রামের পর গ্রাম ঘুরেও একটি  ঢেঁকির সন্ধান পাওয়া যায় না। কষ্ট করে  ঢেঁকিতে পাড় দিতে হয় না গ্রাম্য বধূদের।
এর আগে বৈদ্যুতিক মোটরের মিল চালু হয়। অনেক দূরে দূরে রাইস মিল হওয়ায় মানুষকে খুব কষ্ট করে ধান ভাঙাতে হতো। অনেক স্থানে বিদ্যুৎ না থাকায় শ্যালো মেশিনের সঙ্গে হলার স্থাপন করে ধান ভাঙানো হতো।
একসময় আশরাফ আলী অন্যের ধান মাড়াই মেশিনে কাজ করতেন। একপর্যায়ে নিজের জমানো পুঁজিতে তার বাড়িতে ধান ভাঙার মেশিন স্থাপন করেন। এ অবস্থায় তার তেমন আয় না হওয়ায় লোহার অ্যাঙ্গেলের ওপর একটি শ্যালো মেশিন ও একটি হলার সেট করে  তৈরি করেন ধান ভাঙার ভ্রাম্যমাণ কল। এখন তার আয়-রোজগারও হয় ভালো। এ ভ্রাম্যমাণ কলে দিনে ত্রিশ থেকে চল্লিশ মণ ধান ভেঙে চাল তৈরি করেন তিনি।
ওই গ্রামের বধূ রাবিয়া বেগম জানান, ‘আংগরে (আমাদের) আগে মেশিন ঘরে/বাজারে যাইতাম ধান ভাঙ্গাতে। অহন (এখন) ভ্রাম্যমাণ মেশিন আওনের (আসার) পরে আর আংগরে (আমাদের) বাজারে বা ধান ভাঙ্গার মেশিন বাড়িতে যাওয়া লাগে না। বাজারের চেয়ে ভ্রাম্যমাণ কলে ধান ভাঙলে আমাদের খরচ, কষ্ট ও সময় খুব কম লাগে।’
ভ্রাম্যমাণ মেশিনের মালিক আশরাফ আলী জানান, আমি বিভিন্ন এলাকার রাস্তা দিয়ে মেশিন নিয়ে যাই। যাদের ধান ভাঙানো দরকার তারা আমাকে  ডেকে নেন।
তিনি আরও জানান, আগে অনেক কষ্ট করতে হয়েছে, ‘এখন আর আমার বউ- পোলাপান নিয়ে কষ্ট করতে হয় না। দিনে খরচ বাদে হাজার-বারোশ’র মতো থাকে। আমার এ ভ্রাম্যমাণ কল দেখে অন্যরাও এ মেশিন তৈরি করে বাড়ি বাড়ি গিয়ে ধান ভেঙে কামাই (আয়) করে খাচ্ছে।’
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status