বাংলারজমিন

শাপলার বিকি বিল

এমএ রাজ্জাক, তাহিরপুর (সুনামগঞ্জ) থেকে

১৯ অক্টোবর ২০১৯, শনিবার, ৭:৪০ পূর্বাহ্ন

পুরোপুরি শীত না এলেও শীতের সৌন্দর্য জানান দিচ্ছে জলের রানী শাপলার বিকি বিল। ১৪.৯৫ একর জমির পুরো বিলজুড়ে লাল শাপলার সমারোহ দেখে যে কারো মনে আকর্ষণ জেগে ওঠে। লাল আর সবুজের সমারোহ দূর থেকেই চোখে পড়ছে। কাছে গেলেই সবুজের পটভূমিতে লালের অস্তিত্ব আরো গাঢ় হয়ে ধরা দিচ্ছে। চোখ জুড়িয়ে যায় জাতীয় ফুল জলের রানী শাপলার বাহারি সৌন্দর্যে। সূর্যের সোনালি আভা শাপলা পাতার ফাঁকে ফাঁকে পানিতে প্রতিফলিত হয়ে বিকি বিলের সৌন্দর্য আরো কয়েকগুণ বাড়িয়ে দিয়েছে। জলের রানী শাপলা ফুলের বিকি বিল ইতিমধ্যে পর্যটকদের আনাগোনায় মুখরিত হচ্ছে। ভোর থেকে সকাল ১২টা পর্যন্ত ফুটে থাকা লাল শাপলাগুলো সবুজের মধ্যে লাল চাদরে ঢেকে রাখে। অপরূপ সৌন্দর্যের শাপলা বিকি বিল যথাযথ সংরক্ষণের ব্যবস্থা করে পর্যটন এলাকা ঘোষণার দাবি জানিয়েছেন পর্যটক ও স্থানীয়রা। এরই ধারাবাহিকতায় গত শনিবার সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসক আবদুল আহাদ সরেজমিন পরিদর্শন করে টাঙ্গুয়া হাওর, নিলাদ্রী ডিসি পার্ক, শহীদ সিরাজ লেক, বারেকটিলা, যাদুকাটা নদী, জয়নাল আবেদীন শিমুল বাগান ও প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন লাউড়ের রাজধানী হলহলিয়া জমিদার বাড়ির পাশাপাশি লাল শাপলার বিকি বিলকেও জেলা প্রশাসনের আওতাভুক্ত করে একটি সাইনবোর্ড টাঙিয়েছেন।

সরেজমিন গিয়ে জানা যায়, কাগজে-কলমে হাওরের নাম বিকি বিল থাকলেও লোকমুখে ‘বেকি বিল’ নামেই পরিচিত। সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার বড়দল (উত্তর) ইউনিয়নের কাশতাল গ্রামের সামনে বাদাঘাট ও কাউকান্দি বালিয়াঘাট নতুন বাজার সড়কের মাঝা মাঝিতে এর অবস্থান। কাশতাল, বরোখাড়া ও আমবাড়ী গ্রাম বিকি বিলকে তিনদিক থেকে ঘিরে রেখেছে। মূলত বোরো ফসলি জমির হাওর এটি। বার মাসই কমবেশি শাপলার দেখা মিলে এ হাওরে। তবে অক্টোবর ও নভেম্বর মাসে এর বিস্তৃতি বেড়ে যায় বহুগুণে। দূর থেকে বোঝা যায় কি পরিমাণ ফুল ফুটেছে বিকি বিলের বুকে। কাছে গেলেই স্পষ্ট হয়ে ওঠে ফুলের বিস্তৃতি। কোথাও হাঁটু পানি কোথাও কোমর পানি। যেদিকেই চোখ যায় শুধু লাল আর সবুজের খেলা। ট্রাভেলার বাবরুল হাসান বাবলু বলেন, গত কিছুদিন আগে লোকমুখে শুনে আমরা কয়েকজন শাপলা ফুল দেখার জন্য হাজির হয় বিকি বিলে। বিকি বিলে গিয়ে দেখি এখানে এলাহি কাণ্ড। যে যার মতো ছবি তুলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক এবং গণ্যমাধ্যমে প্রকাশ করলে চারদিকে হৈ চৈ পড়ে। আর এর সূত্রে ধরেই জেলা প্রশাসক স্থানটি পরিদর্শন করে একটি সাইনবোর্ড টাঙিয়ে বিকি বিলকে জেলা প্রশাসনের পর্যটন এরিয়ার সঙ্গে নতুন একটি স্থান অন্তর্ভুক্ত করেছেন। তিনি বলেন, আমরা প্রত্যাশা করি জেলা প্রশাসনের হাত ধরেই তাহিরপুরের পর্যটন শিল্পস্পটগুলো বিকশিত হবে তার আপন মহিমায়।

বড়দল (উত্তর) ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আবুল কাসেম বলেন, বিকি বিল হলহলিয়া ও দিঘলবাঁক মৌজার প্রায় ১৪.৯৫ একর জায়গা নিয়ে বিস্তৃত। ১০-১২ বছর আগে এ বিলে সামান্য ফুল ছিল, গত ৩-৪ বছর ধরে পুরো হাওরে লাল শাপলা ফুটে প্রকৃতির এক অপার রূপ ধারণ করেছে। তিনি বলেন, রাস্তাঘাট উন্নয়ন হলে শাপলা মৌসুমে এখানে পর্যটকদের সমাগম ঘটবে।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status