খালেদা জিয়া ছাড়া নিথর জাতীয়তাবাদী শক্তি: গয়েশ্বর

বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া ছাড়া জাতীয়তাবাদী শক্তি নিথর হয়ে যাচ্ছে এমন মন্তব্য করেছেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়।
তিনি বলেন, যারা স্বার্থবিরোধী চুক্তি করছেন, কেন করছেন? জনসমর্থনহীন অবস্থায় ক্ষমতায় যেতে লুটপাট করে নিয়ে নিজেদেরকে বড় করার অপচেষ্টার জন্য। আজ স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব হুমকির সম্মুখীন হয়েছে। অর্থনীতি দেওলিয়া শেষ প্রান্তে এসে দাঁড়িয়েছে। রাজনীতি বলতে কিছু নেই। আছে শুধু সক্রিয়ভাবে দুর্নীতি। দেশে রাজনীতি যদি অনুপস্থিত থাকে, গণতন্ত্র যদি অনুপস্থিত থাকে সেখানে দুর্নীতি অপশাসনের প্রসার ঘটবে।

শুক্রবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে বিএনপির সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান আফসার আহমদ সিদ্দিকীর ১৮ তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আফসার আহমদ স্মৃতি ফাউন্ডেশন কর্তৃক আয়োজিত আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলে তিনি এসব কথা বলেন।
গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, বর্তমানে আমরা যখন কিশোর ও যুবকদের রাজনীতিতে যখন অভিষেক করি তাদের কাছে আদর্শের চাইতে পদ পদবিটা বেশি গুরুত্বপূর্ণ করে দেখা হয়। পদ পাওয়া আর রাজনীতিবিদ হওয়া এক কথা নয়। ইতিহাসে অনেক বড় বড় রাজনীতিবিদ আছেন যারা বড় কোনো পদের অধিকারী ছিলেন না।
তিনি বলেন, এরশাদ বিরোধী আন্দোলনেও আজকের মত এত কর্মী ছিল না। আজ এ দলের মধ্যে কত নেতা, কোটিপতি নেতার অভাব নেই। কিন্তু আজ বেগম খালেদা জিয়া জেলে। আমাদের কিন্তু দীর্ঘদিন জেলে থাকতে হয়নি। এই কারণেই আজ আমাদের চিন্তা করতে হবে। আফসার আহমেদ যেমন একটি আদর্শের মানুষ। তার আদর্শ অনুসরণ করা যায়।
 গয়েশ্বর বলেন, জীবন্ত খালেদা জিয়া ও তো আমাদের উৎসাহ উদ্দীপনা। তিনি জেলে থাকতেও আমাদের উৎসাহ-উদ্দীপনা ভোঁতা হয়ে গেছে। সেখানে চেতনার বিস্ফোরণ ঘটে না কেন। তারমানে আমরা এবং আমাদের চেতনার মধ্যে তফাৎ আছে। অথবা আমাদের প্রতিশ্রুতি অভাব রয়েছে। আমাদের প্রতিশ্রুতি যদি শক্ত অবস্থানে আসে। প্রতিশ্রুতি থেকে সাহসের সঞ্চার হয়। লক্ষ্য অর্জনের জন্য যখন প্রতিশ্রুতিতে আগাবো তখন কোন বাধাই আটকাতে পারবে না।
তিনি বলেন, রাজনীতিবিদ বানায় জনগণ জনগণ যাকে রাজনীতিবিদ বানায় সেই রাজনীতিবিদ হয়। তারপর আছে কি নাই এটা মুখ্য বিষয় না। আমি মনে করি এই শব্দটার যদি আমরা উপলব্ধি করতে পারি তবে মধ্যে রাজনৈতিক আদর্শ স্থাপিত হবে। আমরা দেশ ও জনগণের স্বার্থে কাজ করতে সমর্থ হবো।
তিনি আরও বলেন, পদের জন্য চেয়ার দখল করা যাবে কিন্তু জনগণের মন দখল করা খুব কঠিন। ভোগবাদী সমাজব্যবস্থায় ক্ষুধার জ্বালা মিটাতে গিয়ে মানবিক মূল্যবোধ ভুলণ্ঠিত। এখন সারা বিশ্ব ও বাংলাদেশের মধ্যে যে প্রতিযোগিতা চলছে সেটা হচ্ছে কে কত টাকা করে দিতে পারো।  আমার ভাই না খেয়ে মারা যাচ্ছে যাক কিন্তু আমার এখন টাকা দরকার। প্রতিটি মানুষ তার নিজেকে নিয়ে ব্যস্ত আর এরকম পরিস্থিতি যখন সৃষ্টি হয় তখন জাতি তার শক্ত অবস্থানে দাঁড়াতে পারে না। জাতীয় ঐক্য ছাড়া কোনো দেশেই রাজনৈতিক সামাজিক অর্থনৈতিক শক্ত অবস্থানে যাওয়া সম্ভব নয়।
আয়োজক সংগঠনের সভাপতি জাহানারা সিদ্দিকীর সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য দেন, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক অন্দিদ্য ইসলাম অমিত প্রমুখ।