দেশ বিদেশ

মানবতাবিরোধী অপরাধে গাইবান্ধার ৫ আসামির ফাঁসির রায়

স্টাফ রিপোর্টার

১৬ অক্টোবর ২০১৯, বুধবার, ৯:১৮ পূর্বাহ্ন

একাত্তরে মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় গাইবান্ধার পাঁচ আসামির ফাঁসির রায় দিয়েছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। গতকাল বিচারপতি মো. শাহিনুর ইসলামের নেতৃত্বে তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল এ রায় দেন। ট্রাইব্যুনালের অন্য দুই সদস্য হলেন বিচারপতি মো. আমির হোসেন ও বিচারপতি মো. আবু আহমেদ জমাদার।  দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন, মো. রঞ্জু মিয়া, রাজাকার কমান্ডার আবদুল জব্বার (৮৬), মো. জাফিজার রহমান খোকা (৬৪), মো. আবদুল ওয়াহেদ মণ্ডল (৬২) ও মো. মমতাজ আলী বেপারি মমতাজ (৬৮)। এ মামলায় প্রসিকিউটর ছিলেন মোখলেসুর রহমান বাদল। সঙ্গে ছিলেন সাবিনা ইয়াসমিন খান মুন্নি। অন্যদিকে, আসামিপক্ষে ছিলেন আইনজীবী আবুল হাসান। প্রসিকিউটর মোখলেসুর রহমান বাদল রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের সময় আসামিরা ওই এলাকায় হানাদার বাহিনীর সহযোগিতায় নিষ্ঠুর ভাবে মানুষকে হত্যা করেছে। ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ও ভূক্তভোগীদের সাক্ষ্যে বিষয়টি উঠে এসেছে। আমরা সন্দেহের উর্ধ্বে উঠে অভিযোগ প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছি বলেই আদালত প্রত্যেককে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে। অপরদিকে আসামি পক্ষের আইনজীবী মোহাম্মদ আবুল হাসান বলেন, মুক্তিযুদ্ধের সময় আসামি রঞ্জু মিয়ার বয়স ছিল মাত্র ১৪ বছর। তিনি কোনো ভাবেই তখন রাজাকার বাহিনীতে যোগদানের মতো অবস্থায় ছিলেন না। আমরা এ রায়ের বিরুদ্ধে দেশের সর্বোচ্চ আদালতে আপিল করবো। আশা করি তিনি খালাস পাবেন। আর যারা পলাতক রয়েছেন তারা গ্রেপ্তার হলে কিংবা আত্মসমর্পণ করলে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।
এ মামলায় মোট আসামি ছয়জন। তাদের মধ্যে মো. রঞ্জু মিয়া গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে আছেন। বাকিরা পলাতক। এদের মধ্যে আজগর হোসেন খান নামে এক আসামি মারা গেছেন। গত ২১ জুলাই এ মামলার শুনানি শেষে রায় ঘোষণার জন্য অপেক্ষমাণ রাখেন ট্রাইব্যুনাল। পরে সোমবার ট্রাইব্যুনাল রায় ঘোষণার জন্য মঙ্গলবার দিন ধার্য করেন। আসামিদের বিরুদ্ধে একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে হত্যা-গণহত্যা, ধর্ষণ, আটক, অপহরণ, নির্যাতন, বাড়িঘরে হামলা, লুটপাট-অগ্নিসংযোগ, ভয়-ভীতি এবং আতঙ্ক ছড়িয়ে হিন্দু সমপ্রদায়ের লোকদের ধর্মান্তর ও দেশান্তরে বাধ্য করাসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের চারটি অভিযোগ আনা হয়। আদালতে এসব অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে। আসামিরা গাইবান্ধা সদরের নান্দিনা ও ফুলবাড়ি গ্রামের স্থায়ী বাসিন্দা এবং সবাই জামায়াতের সক্রিয় কর্মী। আসামিদের মধ্যে মো. আবদুল জব্বার, মো. জাফিজার রহমান খোকা ও মো. আবদুল ওয়াহেদ মণ্ডল ১৯৭১ সালের আগে থেকেই জামায়াতের সক্রিয় কর্মী ছিলেন। জব্বার ও খোকা মানবতাবিরোধী অপরাধে ১৯৭২ সালে গ্রেফতার হলেও তাদের কোনো বিচার হয়নি। খোকার বর্তমান ঠিকানা রাজধানীর কাফরুল থানার উত্তর ইব্রাহিমপুর। তিনি ১৯৭৫ সালে পুলিশের চাকরিতে যোগ দিয়ে ২০১৪ সালে অবসর নেন। মো. মমতাজ আলী বেপারি মমতাজ ১৯৭৪ সালে কৃষি বিভাগে চাকরিতে যোগ দিয়ে ২০১২ সালে অবসর নেন বলে ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থার অভিযোগে বলা হয়েছে।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status