বাংলারজমিন
যৌন নিপীড়ক শিক্ষকের চাকরিচ্যুতির দাবি
গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি
১৪ অক্টোবর ২০১৯, সোমবার, ৮:২৭ পূর্বাহ্ন
পেশাগত দায়িত্ব পালন না করেই গত ৩ মাস ধরে ঘরে বসেই বেতনের টাকা পাচ্ছেন যৌন নিপীড়নের অভিযোগে অভিযুক্ত গোপালগঞ্জ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইজ্ঞিনিয়ারিং বিভাগের সহকারী অধ্যাপক আক্কাস আলী। গত তিন মাসে আক্কাস আলী ১ লক্ষ ৮০ হাজার টাকা নিয়েছেন ঘরে বসেই এমন তথ্য জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা জানিয়ে বেতনের টাকা বন্ধসহ আক্কাস আলীকে চাকরিচ্যুত করার দাবি জানিয়েছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। তারা বলেন, ঘরে বসেই যদি আক্কাস আলী জামাই আদরে সরকারের টাকা পান তাহলে অন্য শিক্ষকরা পেশাগত দায়িত্ব পালন করবেন কেন? উল্লেখ্য, চলতি বছরের এপ্রিল মাসের প্রথম দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সহকারী অধ্যাপক আক্কাস আলীর বিরুদ্ধে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক ও কিছু পত্র-পত্রিকায় প্রকাশ পাওয়া যৌন হয়রানির একটি সংবাদ ও বেনামী হাতে লেখা একটি অভিযোগপত্র এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রীর সঙ্গে ফোনালাপ প্রকাশ পায়। প্রকাশিত তথ্যের ভিত্তিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা আক্কাস আলীর অপসারণ দাবিতে ক্যাম্পাসে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করে। আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভের ভিত্তিতে সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষ যাচাই-বাছাই ছাড়াই তাৎক্ষণিক আক্কাস আলীকে চেয়ারম্যান পদসহ একাডেমিক সকল কর্মকাণ্ড থেকে সাময়িকভাবে অব্যাহতি দিয়ে ঘটনার সত্যতা তদন্তে ৫ সদস্যর একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেন। যৌন নিপীড়নের বিষয়টি কমিটির কাছে প্রমাণিত হওয়ার পর ৯ই এপ্রিল কমিটির প্রধান আব্দুর রহিম আক্কাস আলীর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার জন্য ভিসিকে সুপারিশ করেন। এরপর সাবেক ভিসি খোন্দকার নাসির উদ্দিন, আক্কাস আলীকে বিভাগীয় চেয়ারম্যান পদ থেকে আজীবনের জন্য অব্যাহতি ছাড়াও আগামী ৪ বছর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক/একাডেমিকসহ সকল কাজ থেকে বিরত রাখার সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেন। একই সঙ্গে তিনি সিদ্ধান্তে উল্লেখ করেন, মানবিক কারণে তার নামে বরাদ্দকৃত বেতনের ৫৯ হাজার ৭৭৯ টাকা তাকে দেয়া হবে। তাও তিনি ঘরে বসেই পাবেন। যা গত জুলাই মাস থেকে নিয়মিত পাচ্ছেন। ক্ষতিগ্রস্তরা তাৎক্ষণিক এমন সিদ্ধান্তের তীব্র প্রতিবাদ করলেও সাবেক ভিসি খোন্দকার নাসিরের তোপের মুখে তা টেকেনি। শিক্ষার্থীদের টানা ১২ দিনের তীব্র আন্দোলনের মুখে গত ৩০শে সেপ্টেম্বর ভিসি খোন্দকার নাসির পদত্যাগ করার পর আক্কাস আলীর বিষয়টি নিয়ে নতুন করে সামনে উঠে আসে। তারই ধারাবাহিকতায় শিক্ষার্থীরা এখন বলছেন, পদত্যাগকারী ভিসি খোন্দকার নাসির উদ্দিনের গঠিত পকেট কমিটির সিদ্ধান্ত বাতিল করে আক্কাস আলীর বেতন ভাতা বন্ধসহ তাকে চাকরিচ্যুত করতে হবে। এ দাবি দ্রুত বাস্তবায়ন করা না হলে আক্কাস আলীর অপসারণের দাবিতে তারা কঠোর আন্দোলনে যাবেন।