ভারত

নারদ ঘুষ কাণ্ডে পশ্চিমবঙ্গে আইপিএস আফিসার গ্রেপ্তার

কলকাতা প্রতিনিধি

২৬ সেপ্টেম্বর ২০১৯, বৃহস্পতিবার, ৮:৪৮ পূর্বাহ্ন

নারদ ঘুষ কাণ্ডে সিবিআই বৃহস্পতিবার পশ্চিমবঙ্গেও এক আইপিএস অফিসারকে গ্রেপ্তার করেছে। নারদ ঘুষ কেলেঙ্কারিতে এটাই প্রথম গ্রেপ্তার। গ্রেপ্তার হওয়া বর্ধমানের সাবেক পুলিশ সুপার এসএমএইচ মির্জা দিল্লির একটি ওয়েব সাইটের স্টিং অপারেশনে টাকার বান্ডিল ঘুষ হিসেবে নিতে দেখা গিয়েছিল। বৃহস্পতিবার সকালে নিজাম প্যালেসে সিবিআই দপ্তরে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডেকে পাঠানো হয়েছিল মির্জাকে।

সেখান থেকেই তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে সিবিআই সূত্রে জানানো হয়েছে। এদিন বিকেলেই তাকে কলকাতার নগর দায়রা আদালতে হাজির করানো হয়েছে। দুই পক্ষের সওয়াল জবারের শেষে বিচারক সিবিআইয়ের আবেদন মঞ্জুর করে আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সিবিআই হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন।

এদিন মির্জার গ্রেপ্তারের খবর শুনে নারদ স্টিং অপারেশন যিনি চালিয়েছিলেন, সেই ম্যাথু স্যামুয়েল বলেছেন, এটা খুব ভাল খবর। যে স্টিং অপারেশন আমি করেছিলাম, তার ফল মিলতে শুরু করেছে।
উল্লেখ্য, ২০১৪ সালে তহলকা পত্রিকায় থাকাকালীন ম্যাথু স্যামুয়েল পশ্চিমবঙ্গের তৃণমূল কংগ্রেসের নেতা, সাংসদ ও  মন্ত্রীদের আর্থিক ঘুষ দেওয়ার মাধ্যমে একটি স্টিং অপারেশন চালিয়েছিলেন।

পরে ২০১৬সালে রাজ্যে নির্বাচনের আগে নারদ নিউজ ডট কম নামে একটি ওয়েবসাইটে সেই স্টিং আপারেশনের ভিডিও ফুটেজ প্রকাশ করা হলে প্রবল চাঞ্চল্য তৈরি হয়েছিল। এর পরেই দুর্নীতির আভিযোগে সিবিআই তদন্ত শুরু করেছে। নারদ স্টিং ফুটেজের যে ভিডিও প্রকাশ্যে এসেছিল, সেখানে টাকা নিতে দেখা গিয়েছিল তৃণমূল কংগ্রেসের বেশ কয়েকজন সাংসদ, মন্ত্রী ও নেতা সহ পুলিশ কর্তা মির্জাকে। তিনি তখন বর্ধমানের পুলিশ সুপার পদে ছিলেন। ওই ভিডিও থেকেই জানা যায়, মির্জা নারদ কর্তা ম্যাথু স্যামুয়েলের কাছ থেকে ৫ লাখ রুপি নিয়েছিলেন। সিবিআইয়ের করা এফআইআরে ১২ নম্বরে নাম রয়েছে ওই পুলিশ কর্তার। কেন তিনি ওই টাকা নিয়েছিলেন, কারো নির্দেশে টাকা নিয়েছিলেন কিনা, সে বিষয়ে তাকে আগেই জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছিল। পরে তার বয়ান রেকর্ডের পাশাপাশি কণ্ঠস্বরের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছিল। এদিন সিবিআইয়ের আইনজীবী দীনেশ কুমার বলেছেন, মির্জার বক্তব্যে প্রচুর অসঙ্গতি রয়েছে। বহু তথ্য তিনি গোপন করছেন। এফআইআরে নাম থাকা অন্য এক অভিযুক্তের সঙ্গে মুখোমুখি জেরা তিনি এড়ানোর চেষ্টা করছেন। সেই কারণেই তাকে হেফাজতে নিয়ে জেরা করা প্রয়োজন। অন্যদিকে মির্জার আইনজীবী সায়ন দে বলেছেন, মির্জাকে ৯ বার সিবিআই জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডেকেছিল। প্রত্যেকবারই তিনি এসেছিলেন।

সিবিআইকে আগাগোড়া সহযোগিতা করেছেন। তিনি একজন শীর্ষ পুলিশ আধিকারিক। পালিয়ে যাবেন, এমন সম্ভাবনাও নেই। তাহলে হঠাৎ গ্রেপ্তার করার প্রয়োজন হল কেন? মির্জার গ্রেপ্তারি নিয়ে সিপিআইএম নেতা তথা আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য বলেছেন, আইনি পদ্ধতিতে এটাই সঠিক প্রক্রিয়া। দুর্নীতি উন্মোচনের স্বার্থে সব অভিযুক্তকেই গ্রেপ্তার করা প্রয়োজন। আগেই করা উচিৎ ছিল। কেন করা হয়নি, সেটাই প্রশ্ন। অন্যদিকে রাজ্য বিজেপির সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেছেন, এত বছর লেগে গেল! আরো আগে হলে মানুষের বিশ্বাস বাড়ত। সত্য উদঘাটন হোক তাড়াতাড়ি। সরকারের তরফে ও তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত কোনো মন্তব্য করা হয়নি।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status