এক্সক্লুসিভ
হাসপাতালে ফেলে যাওয়া সন্তানটিকে নিতে চান না মা
স্টাফ রিপোর্টার
২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৯, সোমবার, ৯:২৩ পূর্বাহ্ন
নাহারের পেটে সিজারের সেলাই এখনো শুকায়নি। সেলাইয়ে ইনফেকশন হয়ে গেছে। পেটে যন্ত্রণা নিয়ে হাসপাতালে এসেছেন মা নাহার বেগম। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে সদ্য ভূমিষ্ঠ হওয়া নবজাতক সারাকে ফেলে পালিয়েছিলেন মা-বাবা। এ ঘটনার পর গতকাল দুপুরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নিজের সন্তানকে দত্তক দিতে আসেন মা নাহার বেগম। তার একটাই কথা সন্তানকে নিজের কাছে ফিরিয়ে নিতে নয় বরং দত্তক দিতে এসেছি। এ বিষয়ে ঢামেকে পরিচালক বরাবর একটি দরখাস্ত করেন তিনি। শাহবাগ থানায় পুলিশ হেফাজতে আছেন মা নাহার। তিনি মানবজমিনকে বলেন, শিশু সন্তানটির বাবা রাসেল। তাই প্রথম স্বামী আজাদ আমাকে গ্রহণ করেনি। সেজন্য নিজের সন্তানকে দত্তক দিতে চাই। যদি কোন ভাল পরিবার নিতে চায় তাহলে মেয়েকে দত্তক দিবো। কারণ এই শিশুকে নিলে আমার সংসার টিকবে না। তাই বাধ্য হয়ে দত্তক দিতে এসেছি। রাসেল আমার দ্বিতীয় স্বামী। সন্তান গর্ভে আসার তিন মাস পর সে আমাকে ফেলে পালিয়ে চলে যায়। আমার প্রথম স্বামীর নাম আজাদ। তার সঙ্গে ছাড়াছাড়ির পর রাসেলকে বিয়ে করি। দ্বিতীয় স্বামী রাসেল অন্ত:সত্ত্বা অবস্থায় রেখে পালিয়ে গেলে প্রথম স্বামী আজাদের কাছে চলে যাই। তবে বাচ্চা প্রসবের সময় আজাদই আমাকে নিজ খরচে হাসপাতালে ভর্তি করে। কিন্তু বাচ্চা জন্মের পরই তার সঙ্গে ঝগড়া শুরু হয়। পরে নবজাতক কন্যা সন্তানকে ফেলে আমরা পালিয়ে যাই। এ বিষয়ে রাজধানীর শাহবাগ থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেছে ঢামেক কতৃপক্ষ। শাহবাগ থানার তদন্ত অফিসার এসআই আসমা আক্তার বলেন, নবজাতকের মা এখন আমাদের থানায় আছে। তিনি থানা কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছেন, ‘এই বাচ্চা নিলে তার সংসার টিকবে না। তাই বাচ্চাকে দত্তক দিতে চান তিনি। তার শরীর অসুস্থ থাকায় থানার একটি বিশ্রামাগারে আছেন তিনি। তিনি একা এসেছেন। তার পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে আমরা যোগাযোগের চেষ্টা করছি। পরিবারের সদস্যদের পাওয়া গেলে তাদের সঙ্গে নবজাতকের মা’কে পাঠিয়ে দিবো। নাহার ও আজাদ দম্পতির বাড়ি সাভারের তেতুলঝড়ায়। বর্তমানে মিরপুর ১ নম্বর সেকশনের মাজার রোড লালকুঠি এলাকায় থাকেন তারা। গত ১৩ই সেপ্টেম্বর ভোরে জন্ম নেয় এই কন্যা শিশু। পরদিন সন্ধ্যায় নবজাতকটিকে হাসপাতালের ১০৬ নম্বর ওয়ার্ডে রেখে পালিয়ে যান বাবা-মা।