বিশ্বজমিন

জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে বিশ্বজুড়ে বিক্ষোভ

মানবজমিন ডেস্ক

২১ সেপ্টেম্বর ২০১৯, শনিবার, ১২:১৮ অপরাহ্ন

বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধির প্রতিবাদে বিশ্বজুড়ে পালিত হয়েছে জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক বিক্ষোভ। টিনেজার গ্রেটা থানবার্গের উৎসাহে সারাবিশ্বের কোটি কোটি মানুষ বিভিন্ন দেশে এই বিক্ষোভে অংশ নিয়েছেন শুক্রবার। বিভিন্ন মহাদেশের বিভিন্ন দেশে বিক্ষোভকারীদের হাতে এ সময় ছিল প্লাকার্ড। তারা স্লোগান দিয়েছেন জলবায়ু পরিবর্তনের ইস্যুতে। বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধির ইস্যুকে সামনে রেখে একে বলা হচ্ছে বিশ্বের সবচেয়ে বড় বিক্ষোভ। র‌্যালিতে অংশ নিয়ে থানবার্গ বলেছে, আগুনে পুড়ছে আমাদের বাড়ি। আর আমরা চুপচাপ বসে বসে তা প্রত্যক্ষ করতে পারি না। এ খবর দিয়েছে অনলাইন বিবিসি।

শুক্রবার এই বিক্ষোভ শুরু হয় প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল ও এশিয়ায়। এ ছাড়া বড় বিক্ষোভ হয় নিউ ইয়র্কে। আগামী সপ্তাহে নিউ ইয়র্কের ম্যানহ্যাটানে জাতিসংঘের সদর দপ্তরে বসছে এ বছরের সাধারণ অধিবেশন। একে সামনে রেখে জলবায়ু পরিবর্তনকে মোকাবিলার ইস্যুটি যেন এই অধিবেশনে বৃহত্তর গুরুত্ব দেয়া হয় বিক্ষোভ থেকে এমন দাবি জানানো হয়েছে। উল্লেখ্য, ২০১৮ সালে এই আন্দোলনকে গতিশীল করতে স্কুলপড়–য়া গ্রেটা থানবার্গ ভূমিকা রাখা শুরু করে। এ জন্য স্কুলের পড়াশোনা থেকে সরে আসে সে। তার এই উদ্যোগে বিশ্বজুড়ে উৎসাহিত হয় আরো স্কুলগামী শিক্ষার্থী ও প্রাপ্ত বয়স্ক মানুষ। দ্রুত সারাবিশ্বে ছড়িয়ে পড়তে থাকে থানবার্গের নাম।

সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধির ফলে মারাত্মক ঝুঁকিতে রয়েছে প্রশান্ত মহাসাগরীয় দেশ কিরিবতি, সলোমন দ্বীপপুঞ্জ এবং ভানুয়াতুর মতো দেশ। শুক্রবারের বিক্ষোভ শুরু হয় এসব দেশ থেকে। সেখান থেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেয়া পোস্টে দেখা যায়, নাগরিকরা বিক্ষোভ মিছিল করে স্লোগান দিচ্ছেন- আমরা ডুবে যাচ্ছি না। আমরা লড়াই করছি। অস্ট্রেলিয়াতে প্রায় সাড়ে তিন লাখ মানুষ বিক্ষোভ করেছেন বিভিন্ন এলাকায়। এক্ষেত্রে স্থানীয় স্কুলগুলোর ছেলেমেয়েদের বিক্ষোভে অংশ নিতে উৎসাহিত করেছে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ। শ্রমিকদেরকেও তারা উৎসাহিত করেছে। এরই মধ্যে ক্রমবর্ধমান তাপমাত্রায় দুর্ভোগ পোহাচ্ছে অস্ট্রেলিয়া। অস্ট্রেলিয়ার উত্তর-পূর্ব উপকূলে গ্রেট ব্যারিয়ার অন্তরীপের অর্ধেকের বেশি প্রাণহানীর জন্য দায়ী করা হয়েছে সমুদ্রের উষ্ণতা বৃদ্ধিকে। এসব স্থান থেকে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে এশিয়া, ইউরোপ, আফ্রিকা ও আমেরিকায়।

ঘানায় শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ করে রাজধানী আক্রা’য়। এতে বলা হয়, জলবায়ু পরিবর্তন উপকূলীয় ক্ষয় ত্বরান্বিত করেছে। এতে উপকূলের হাজার হাজার মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। থাইল্যান্ড ও ভারতেও বিক্ষোভ হয়েছে। এখান থেকে মাটিকে রক্ষা এবং মৃত্যু কমিয়ে আনতে সরকারি পদক্ষেপ দাবি করা হয়। জার্মানিতে ৫০০ শহরে এবং পুরো দেশে বিক্ষোভ হয়েছে। সেখানে গ্রিনহাউজ গ্যাস নির্গমন কমিয়ে আনতে ৫৪০০ কোটি ইউরো ঘোষণা করেছে জোট সরকার। বৃটেনে চারটি দেশের সব স্থানে হাজার হাজার মানুষ বিক্ষোভে অংশ নিয়েছে।

কে এই গ্রেটা থানবার্গ
গ্রেটা থানবার্গ একজন সুইডিশ টিনেজার। গত বছর আগস্টে তার দেশের জাতীয় পার্লামেন্টের বাইরে প্রথম ‘স্কুল স্ট্রাইক ফর ক্লাইমেট’ আন্দোলন শুরু করে। তার এই কর্মসূচি সারাবিশ্বের আরো স্কুলপড়–য়া ও প্রাপ্ত বয়স্কদের মধ্যে উৎসাহ সৃষ্টি করে। মাত্র ১৬ বছর বয়সী একটি বালিকা পুরো বিশ্বকে এভাবে জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে আন্দোলনে নামিয়ে আনার ঘটনা বিরল। তাই তাকে এবার শান্তিতে নোবেল পুরস্কারের জন্য মনোনয়ন দেয়া হয়েছে। আগস্টে সে বোটে করে পৌঁছেছে যুক্তরাষ্ট্রে। এ সময় সে ক্রুজ শিপে করে বা জাহাজে করে যুক্তরাষ্ট্রে যেতে অস্বীকৃতি জানায়। কারণ, এসব যান পরিবেশের ক্ষতি করে। কার্বন ডাই অক্সাইড নিঃসরণ করে পরিবেশে। আগামী সপ্তাহে জাতিসংঘে তার বক্তব্য রাখার কথা। তার আগে সে যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতিবিদদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে, তারা যেন জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় আরো বেশি কিছু করেন।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status