অনলাইন

ফ্রান্সের প্রেসিডেন্টের প্রেম কাহিনী

আব্দুল মোমিত (রোমেল) ফ্রান্স, থেকে

২০ সেপ্টেম্বর ২০১৯, শুক্রবার, ১:১৫ পূর্বাহ্ন

ইমানুয়েল ম্যাক্রন এবং তার স্ত্রী ব্রিজেথের প্রেমের শুরু ১৯৯৩ সালে। দু’জনের বয়সের ব্যবধান ২৫ বছর। সম্পর্কের সূত্রপাতও বেশ অস্বাভাবিকভাবে। ষোল বছরের এক কিশোর প্রেমে পড়েছেন ৪০ বছর বয়সী এক নারীর, যিনি ছিলেন তিন সন্তানের জননী। ম্যাক্রনের বর্তমান বয়স ৪১ এবং তার স্ত্রী ব্রিজিথ তোনিয়ো’র বয়স এখন ৬৬ বছর।
ম্যাক্রনের বয়স তখন মাত্র ১৬। সেই সময়েই তিনি ৪১ বছর বয়সী নারীর প্রেমে পড়েন। তবে তার পরিবার এটি থামাতে অনেক চেষ্টা করেছিল। কিন্তু প্রেসিডেন্টের ভালবাসার কাছে হার মানতে বাধ্য হতে হয় তাদের। ম্যাক্রনের স্ত্রী একসময় তার স্কুলের নাটকের শিক্ষিকা ছিলেন বলে জানা যায় ।
ফ্রান্সের রাজনীতিতে ইমানুয়েল ম্যাক্রনের নাটকীয় উত্থান হয়েছে। অথচ স্কুল জীবনে ম্যাক্রন কখনোই রাজনীতিবিদ হতে চাননি এমনটি জানিয়েছেন তিনি নিজেই। তিনি চেয়েছিলেন একজন ঔপন্যাসিক হতে। স্কুলে জীবনে তিনি খুবই মেধাবী ছাত্র ছিলেন।
ম্যাক্রনের স্কুল শিক্ষিকা এবং বর্তমানে তার স্ত্রী ব্রিজিথ তোনিয়ো ছোটবেলা থেকেই তাকে চেনেন এবং জানেন। ব্রিজিথ তোনিয়ো মনে করেন, এমানুয়েল ম্যাক্রন স্কুল জীবনে অন্যদের চেয়ে ব্যতিক্রমী ছিল। ম্যাক্রন যখন ঐ স্কুল ছেড়ে যান, তারপর থেকে তার প্রাক্তন এই শিক্ষিকার সঙ্গে আরো গভীরভাবে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে।
সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে ব্রিজিথ তোনিয়ো বলেছেন, ম্যাক্রন স্কুল ছেড়ে যাবার পর তাদের দু জনের মধ্যে টেলিফোনে দীর্ঘ কথোপকথন হতো। ধীরে-ধীরে শিক্ষিকার মন জয় করেন ছাত্র। দু জনের মধ্যে যখন প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে, তখন শিক্ষিকা ছিলেন বিবাহিতা এবং তিন সন্তানের জননী। ২০০৬ সালে, ব্রিজিথ ম্যাক্রনের জীবনী নাটকীয়ভাবে পরিবর্তিত হয় - অপ্রত্যাশিতভাবে নিজের জন্য, তিনি তার স্বামীকে তালাক দিয়েছিলেন, যাতে উৎসাহী প্রেমিকের পথে কোনও বাধা না থাকে। আগের স্বামীকে ছেড়ে তিনি ২০০৭ সালে বিয়ে করেন ম্যাক্রনকে।

অনেকদিন ধরেই এ দম্পতি প্রচারণা থেকে দূরে ছিলেন। কিন্তু ম্যাক্রন যখন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার জন্য মন স্থির করেন, তখন তারা অনেক বেশি জনসম্মুখে আসেন। তাদের দু জনের বয়সের ব্যবধান নিয়ে অনেক কথা শুনতে হয়েছে ম্যাক্রন এবং ব্রিজিথকে। মাঝেমধ্যে এসব সমালোচনার জবাবও দিয়েছেন ম্যাক্রন।
একবার তিনি বলেছিলেন, বয়সের ব্যবধানটা যদি উল্টো হতো অর্থাৎ আমি যদি আমার স্ত্রীর চেয়ে ২৪ বছরের বড় হতাম, তাহলে বিষয়টিকে কেউ অস্বাভাবিক বলতো না। মানুষ ভিন্ন কিছু দেখে অভ্যস্থ নয়।
অনেকে বলছেন ম্যাক্রনের প্রেম এবং বিয়ে তার জীবনে ‘আত্মবিশ্বাস’ তৈরিতে একটি প্রভাব ফেলেছে। ফরাসি একজন সাংবাদিক সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, ম্যাক্রন যদি তার চেয়ে ২৪ বছরের বড় এবং তিন সন্তানের এক জননীকে আকর্ষণ করতে পারেন, তাহলে একই উপায়ে তিনি ফ্রান্সকেও জয় করতে পারবেন। সমালোচকদের মনোযোগ কেবল ব্রিজিথ ম্যাক্রনের জীবনী নয়, তার স্টাইলও প্রাপ্য। তিনি তার পূর্বসূরীদের থেকে খুব আলাদা। তিনি অন্যের কাছে সমাজে তার উচ্চ অবস্থান প্রদর্শন করতে চান। তদুপরি, তার পক্ষে তরুণ দেখা খুব গুরুত্বপূর্ণ, যাতে তার এবং তার স্বামীর মধ্যে বয়সের বিশাল পার্থক্যের দিকে দৃষ্টি আকর্ষণ না হয়।
ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট পরিবারের নিকট যারা জোর দিয়েছিলেন তারা জোর দিয়েছিলেন যে তারা ইমানুয়েল এবং ব্রিজেথের মধ্যে বয়সের পার্থক্য অনুভব করেন না: তারা লক্ষ্য করেন যে স্বামী বা স্ত্রীদের মধ্যে একই রকম স্বভাব, হাস্যরসের ধারণা এবং জীবনের প্রতি দৃষ্টিভঙ্গি রয়েছে।
ম্যাক্রনের সাথে সাথে তার নাতি-নাতনি বেড়ে উঠছেন। একটি সাক্ষাৎকারে রাজনীতিবিদ স্বীকার করেছেন যে, রক্তে তার কোনও উত্তরাধিকারী নেই বলে তিনি মোটেই আফসোস করেন না। তিনি স্ত্রীর বড় পরিবার নিয়ে যথেষ্ট সন্তুষ্ট এবং তার সন্তানরা তাদের সম্পর্ককে অনুমোদন দেওয়ার জন্য কৃতজ্ঞ।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status