বাংলারজমিন

ভৈরবে বেড়েছে ‘ছিনতাই’ ২ সপ্তাহে আহত ১০

মো. রফিকুল ইসলাম, ভৈরব থেকে

১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৯, বুধবার, ৭:৪৮ পূর্বাহ্ন

কিশোরগঞ্জের ভৈরবে সন্ধ্যা নামলেই সবার মনে জাগে ভয় মানে ‘ছিনতাই’ আতঙ্ক। ফলে বন্দরনগরী এখন ‘ছিনতাই’ নগরীতে পরিণত হয়েছে। কেননা শহরের বিভিন্ন স্থানে গেল দু’সপ্তাহে ঘটছে ৭টিরও বেশি ছিনতাইয়ের ঘটনা। শুধু নগদ টাকা আর দামি মোবাইল ফোন হাতিয়ে শান্ত হয়নি ছিনতাইকারীরা। তাদের ধারালো ছুরিকাঘাতে অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন। হঠাৎ করে ছিনতাইকারীদের দৌরাত্ম্য বেড়ে যাওয়ায় ছিনতাই আতঙ্কে শহরের ব্যবসায়ী ও পথচারীরা। ফলে বিষয়টি ভাবিয়ে তুলছে সুশীল সমাজের লোকজনকে। আর পুলিশ বলছে দু-একদিন পরপর একের পর এক ছিনতাইকারীকে আটক করে জেল হাজতে পাঠানো হচ্ছে। তারপরও কেন কমছে না? শহরে ছিনতাই বা ছিনতাইকারীর সংখ্যা। এমন প্রশ্নের জবাবে ভৈরব থানার ওসি মো. মোখলেছুর রহমান বলেন, শহরে প্রায় অর্ধশতাধিক চিহ্নিত ছিনতাইকারী থাকলেও এদের অনেকেই এখন জেলে রয়েছে। তবে, ভৈরবের সঙ্গে আশপাশের জেলা ব্রাহ্মণবাড়িয়া এবং নরসিংদীর যোগাযোগ ভালো থাকার কারণে প্রতিদিন রেল ও সড়ক পথে ছিনতাইকারীদের একাধিক চক্র এই শহরে প্রবেশ করছে। ফলে তারা সুযোগ বুঝে ছিনতাই শেষে আবার সটকে পড়ে। তাছাড়া ছিনতাইয়ের ঘটনায় থানায় লিখিত অভিযোগ না দেয়ার কারণেও সহজে কাউকে আটক করা সম্ভব হচ্ছে না।
জানা গেছে, দেশের ব্যবসা-বাণিজ্যের কেন্দ্রবিন্দু বন্দরনগরী ভৈরব। একই সঙ্গে সড়ক, রেল ও নৌ-পথের রয়েছে অবাধ যোগাযোগ। ফলে শহর এবং শহরের আনাচে-কানাচে গড়ে উঠেছে অসংখ্য কল-কারখানাসহ শত শত ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। এ ছাড়াও এই ভৈরবে দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম মাছের আড়তসহ কয়লার একটি বড় মোকাম রয়েছে। ফলে শহরে প্রতিদিন কোটি কোটি টাকার মালামাল আমদানি-রপ্তানি করা হয়। আর এসব নগদ টাকা লেনদেনের জন্য শহরে ৩৫টিরও বেশি বাণিজ্যিক ব্যাংকের শাখা রয়েছে। এসব ব্যাংকে সকাল ১০টা থেকে বিকাল ৫টার মধ্যে টাকা জমা না দিতে পারলে বিপাকে পড়েন ব্যবসায়ীরা। এ ছাড়াও শহরে রেল এবং সড়ক পথের অগণিত যাত্রীদের অবাধ চলাচল রয়েছে। ফলে এসব যাত্রী ও ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে নগদ টাকা এবং দামি মোবাইল ফোন হাতিয়ে নিতে ছিনতাইকারীদের রয়েছে একাধিক চক্র। তারা সুযোগ বুঝে অতর্কিত হামলা চালিয়ে কেড়ে নেয় নগদ টাকা ও দামি মোবাইল ফোন। আর এসব মালামাল দিতে সামান্য দেরি করলেই ছিনতাইকারীদের হাতে থাকা ধারালো ছুরি দিয়ে করে আঘাত। এতে একেরপর এক দিনের পর দিন ঘটছে হতাহতের ঘটনাও।
জানা গেছে, গেল ৩০শে আগস্ট শহরের মনামরা ব্রিজ এলাকায় রাত ৯টার দিকে পিয়াস নামে এক ব্যবসায়ীর বুকে ছুরিকাঘাত করে ১ লাখ ২০ হাজার টাকা হাতিয়ে নেয় স্বপন নামে এক ছিনতাইকারী। গুরুতর আহত পিয়াসকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। গত ৮ই সেপ্টেম্বর শহরের নাটাল মোড়ে রাত ১০টার দিকে এক পথচারীকে ছুরিকাঘাত করে টাকা ও মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেয়। পরে স্থানীয়রা তাকে হাসপাতালে পাঠায়। ৯ই সেপ্টেম্বর রাত ১টার দিকে পৌর কবরস্থানের সামনে দু’জনকে ছুরিকাঘাত করে টাকা ও মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেয়া হয়। শহরের শুভ নামে এক চিহ্নিত ছিনতাইকারীর বিরুদ্ধে এই অভিযোগ ওঠে। গত ১১ই সেপ্টেম্বর রাত সাড়ে ১০টায় ভৈরব বাজারের কর্মস্থল থেকে রিয়াদ হোসেন ও আক্রাম আহমেদ নামে দুই বন্ধু রিকশাযোগে বাড়ি ফেরার পথে শহীদ আইভি রহমান পৌর স্টেডিয়ামের সামনে ছিনতাইকারীর কবলে পড়ে। এ সময় তাদের ছুরি ঠেকিয়ে দামি দু’টি মোবাইল ফোনসহ ৩টি সেট হাতিয়ে নেয় ছিনতাইকারীরা। এ ছাড়াও গত ১২ই সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় একই এলাকায় আব্দুস সালাম এক ব্যক্তিকে ছুরিকাঘাত করে টাকা ছিনিয়ে নেয়া হয়। এ ছাড়াও রাত ৯টায় এক রিকশাচালককে ছুরিকাঘাত করে ছিনতাইকারীরা।    
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status