বাংলারজমিন

মাদ্রাসা শিক্ষকের যৌন হয়রানির শিকার ১০ ছাত্রী

আখাউড়া (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি

১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৯, মঙ্গলবার, ৭:৫২ পূর্বাহ্ন

আখাউড়ায় গতকাল দুপুরে একটি মহিলা মাদ্রাসার শিক্ষক কর্তৃক যৌন হয়রানির শিকার এক ছাত্রীকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। আখাউড়া পৌরশহরের দুর্গাপুর এলাকার আন নূর মহিলা মাদ্রাসা ও এতিমখানায় এ ঘটনা ঘটে। উদ্ধার হওয়া শিক্ষার্থীকে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে। এ ঘটনার পর থেকে ওই মাদ্রাসার শিক্ষক শওকত হোসেন রিপন ও মাদ্রাসার পরিচালক আসমা বেগম পলাতক রয়েছে। বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী মাদ্রাসায় তালা ঝুলিয়ে দিয়েছে।
পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, দুর্গাপুর গ্রামের প্রবাসী আবুল হোসাইন সম্রাট আন-নূর মহিলা মাদ্রাসা ও এতিমখানা চালু করে। তার স্ত্রী আসমা আক্তার মাদ্রাসাটি পরিচালনা করেন। শিশু শ্রেণি থেকে ৭ম শ্রেণি পর্যন্ত পাঠদান চলে ওই মাদ্রাসায়। ১১ জন শিক্ষকের মধ্যে একজন পুরুষ শিক্ষক। আবাসিক ও অনাবাসিক মাদ্রাসাটিতে শতাধিক ছাত্রীর মধ্যে প্রায় ৬০ জন আবাসিক। গতকাল সোমবার সকালে হঠাৎ করে ৩-৪ জন ছাত্রী অসুস্থ হয়ে পড়ে। মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের মাধ্যমে স্থানীয় লোকজন শিক্ষকের অপকর্মের কথা জানতে পেরে পুলিশে খবর দেয়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ ৬ষ্ঠ শ্রেণির ওই শিক্ষার্থীকে উদ্ধার করে।
গতকাল সোমবার দুপুরে সরজমিনে মাদ্রাসায় গেলে একাধিক গ্রামবাসী বলেন, ৩-৪ মাস ধরে মাদ্রাসার হুজুরের এসব অপকর্মের কথা এলাকায় প্রচারও হলেও মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটি কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। গ্রামবাসী জুনাঈদ বলেন, আমার ভাতিজি মাদ্রাসায় পড়ে। সে বলেছে হুজুর প্রায়ই ছাত্রীদের উত্ত্যক্ত করত। এ ব্যাপারে মাদ্রাসার কয়েকজন ছাত্রী জানায়, হুজুর প্রায় সময় ছাত্রীদের স্পর্শকাতর স্থানে হাত দিতেন। অনেক সময় ছাত্রীকে মাদ্রাসার বাইরে নিয়ে যেত। বড় ম্যাডামকে (আসমা বেগম) কে এসব কথা জানানো হলে তিনি শরম শরম বলে চুপ থাকতে বলতেন। এ ধরনের অন্তত ১০ জন ছাত্রী যৌন হয়রানির শিকার হয়েছে বলে তারা জানায়।
মাদ্রাসা থেকে নিজের মেয়েকে নিতে এসে অভিভাবক স্কুলশিক্ষক গিয়াস উদ্দিন বলেন, লম্পট শিক্ষকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই। ভবিষ্যতে যেন কোনো শিক্ষক এ ধরনের কাজ করার সাহস না পায়।
সংশ্লিষ্ট এলাকার পৌর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো. তাজুল ইসলাম বলেন, মাদ্রাসার হুজুর রিপন একাধিক ছাত্রীকে যৌন হয়রানি করছে বলে অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি মাদ্রাসা কমিটিকেও জানিয়েছি।
আখাউড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ডা. সানজিদা আক্তার বলেন, প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে মেয়েটিকে জেলা সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। মেয়েটির সারা শরীরে ব্যথা করছে বলে জানিয়েছে। এ ব্যাপারে আখাউড়া থানার ওসি (তদন্ত) মো. আরিফুল আমিন বলেন, কয়েকজন ছাত্রীর সঙ্গে কথা বলে জেনেছি ওই হুজুর ছাত্রীদের যৌন হয়রানি করতেন। ছাত্রীদের শরীরের স্পর্শকাতর স্থানে হাত দিতেন। যৌন নিপীড়নের শিকার অসুস্থ ছাত্রীকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। ওই ছাত্রীর মা জেসমিন আক্তার শিক্ষক শওকত হোসেন রিপন ও মাদ্রাসার পরিচালক আসমা বেগমকে আসামি করে থানায় মামলা দিয়েছেন। আসামি গ্রেপ্তারে পুলিশ অভিযান চালাচ্ছে।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status