বাংলারজমিন
জীবিকার তাগিদে শহরমুখী বন্যাদুর্গতরা
চিলমারী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি
১২ সেপ্টেম্বর ২০১৯, বৃহস্পতিবার, ৭:৩০ পূর্বাহ্ন
বন্যার সময় ছিল না কোনো উপায়। বন্যার পর নেই হাতে কোনো কাজ। শুধু অসহায় চোখে-মুখে যেন হতাশার চিহ্ন দেখতে পাওয়া যায়। ফলে অনেকেই স্ত্রী সন্তানকে রাস্তা কিংবা অশ্রয়ণে রেখেই জীবিকার তাগিদে শহরমুখী হচ্ছেন বন্যাদুর্গত এলাকার মানুষ। উত্তরাঞ্চল অবহেলিত কুড়িগ্রাম জেলার ভাঙন ও বন্যাকবলিত উপজেলা চিলমারী। দীর্ঘদিন বন্যায় ডুবে থাকার পর বন্যার পানি নেমে যায় বাড়ে জনদুর্ভোগ। এর উপর শ্রমিক দিনমজুরদের হাতে কাজ না থাকায় তারা পড়েন বড় বিপাকে পারছিলেন না ঘর ঠিক করতে না পারছিলেন খাবার জোগাড় করতে। হাতে কাজ না থাকায় অসহায় হয়ে পড়েন তারা। ফলে অসহায় এই মানুষগুলো স্ত্রী, সন্তানকে ভাঙ্গা ঘরে, কেউ রাস্তার ধারে দু’চারটি টিন দিয়ে চালা করে ঘরের চারদিকে কাপড় জড়িয়ে, বা আশ্রয়ণে রেখে পাড়ি জমাচ্ছেন শহরে। বন্যায় ফসলহানি ও বাড়িঘর ভাঙনের শিকার মানুষের দুঃখের যেন অন্ত নেই। কাজ নেই, ছিল না পর্যাপ্ত ত্রাণ। জীবিকার তাগিদে তাই দুর্গতরা ছুটছেন জেলা শহর ও রাজধানী ঢাকার দিকে। সেখানেও চাহিদা অনুযায়ী কাজ পাচ্ছেন না তারা। কাজের সন্ধানে বের হওয়া মজিবর বলেন, ‘আগে মানুষের ক্ষেতে কাজ করতাম। কিন্তু বন্যার কারণে এলাকায় কাজ নেই। তাই ঢাকায় যাচ্ছি। পরিবার পরিজন তো চালাতে হবে। একই কথা বললেন রিকশাচালক শহিদুল। তার বাড়ি রমনায় এখানে আয় কম তাই সেও পাড়ি জমাচ্ছে ঢাকায়। বিশেষ করে ব্রহ্মপুত্র পাড়ের বন্যাকবলিত এলাকায় কাজের অভাবে নিম্ন ও মধ্যবিত্ত পরিবারগুলোতে নেমে এসেছে চরম অভাব-অনটন। তাদের আর্তি- ত্রাণ চাই না কাজ চাই। এ অবস্থায় দাবি উঠেছে, কর্মসৃজন কর্মসূচিরসহ বিভিন্ন প্রকল্পের মাধ্যমে বন্যাকবলিত ব্রহ্মপুত্র পাড়ের খেটে খাওয়া মানুষজনের অভাব-অনটন দূর করা। এবারে বন্যায় কয়েকশ’ একক ফসলি জমি নষ্ট হওয়া ছাড়াও সম্পূণরূপ কাঁচা রাস্তার ক্ষতি হয়েছে ৬৩ কি.মি. এবং আংশিক ক্ষতি হয়েছে ৪৫ কি.মি.। পাকা সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে প্রায় ২০ কি.মি. এবং ব্রিজ ৩টি ও কালভার্ট ৯টি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং বাঁধ-সড়কেরও ব্যাপক ক্ষতি হয়। এতে করে বন্যায় এবারে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে প্রায় ৩৫ কোটি টাকা।