এক্সক্লুসিভ

দুই বাংলাদেশির মৃত্যুর ঘটনার তদন্তে নাটকীয় মোড়

কলকাতা প্রতিনিধি

২৩ আগস্ট ২০১৯, শুক্রবার, ৮:২৫ পূর্বাহ্ন

কলকাতায় দুই বাংলাদেশি পর্যটকের মৃত্যুর জন্য দায়ী জাগুয়ার কাণ্ড নাটকীয় মোড় নিয়েছে। গত ৫ দিনে জানা গিয়েছিল জাগুয়ার গাড়ির চালক ছিলেন কলকাতার বিখ্যাত বিরিয়ানি চেইনের মালিকের ছোট ছেলে আরসালান পারভেজ। পুলিশও তাতে প্রাথমিকভাবে সিলমোহর দিয়েছিল। যার জেরে আরসালান পারভেজ লকআপে রয়েছেন গত ৫ দিন ধরে। তবে বুধবার কলকাতা পুলিশের ডেপুটি কমিশনার (অপরাধ) মুরলীধর শর্মা জানিয়েছেন. শেক্সপিয়র সরণীতে  ঘাতক জাগুয়ার গাড়ির স্টিয়ারিং ছিল আরসালানের বড় ভাই রাগিব পারভেজের হাতে। অভিযুক্ত তার ছোট ভাই আরসালান পারভেজ নন। প্রশ্ন উঠেছে, কেন আরসালান বিরিয়ানি চেইনের মালিক আখতার পারভেজ তার ছোট ছেলেকে এই ঘটনায় আত্মসমর্পণ করালেন? কোনো কিছু গোপন করতেই কি এই পরিকল্পনা? এদিন লালবাজারে সংবাদ সম্মেলন করে মুরলীধর শর্মা জানিয়েছেন, শুক্রবার রাতে দুর্ঘটনার পর  শেক্সপিয়ার সরণিতে কখনো হেঁটে, কখনো দৌড়ে যেতে  দেখা গিয়েছিল ওই গাড়ির চালককে। কিন্তু তার মুখ স্পষ্টভাবে ধরা পড়েনি। পরে ওই উচ্চপ্রযুক্তি সম্পন্ন গাড়ি থেকে পাওয়া একটি মোবাইলের সূত্র ধরে ওই সময় গাড়ি কে চালাচ্ছিলেন, তা জানা গেছে। কারণ, ওই গাড়িটির সিস্টেমের সঙ্গে মোবাইলের লিঙ্ক করা ছিল। নির্দিষ্ট মোবাইলের সঙ্গে গাড়ির সিস্টেম না মিললে, গাড়ি চলবে না। দুর্ঘটনার আগে যে মোবাইল দিয়ে গাড়িটি চালানো হচ্ছিল, তার সন্ধান পাওয়া গেছে গত সোমবার। পরে সেই মোবাইলের হোয়াটসঅ্যাপ ডিপি দেখেই চালকের ছবি চিহ্নিত করা হয়েছে। এরপর ওই এলাকার সিসি ক্যামেরা এবং আখতার পারভেজের বাড়ির সামনের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে গোয়েন্দারা নিশ্চিত হন, ঘাতক গাড়ির চালক ছিলেন রাগিব। ঘটনার পর দিনই রাগিব দুবাই চলে গিয়েছিলেন। দু’দিন আগে তিনি ফিরে এসেছেন। রাগিব আরসালানের মুম্বই ও দুবাইয়ের ব্যবসা দেখভাল করেন। দুবাইয়ে গিয়ে রাগিব জানতে পেরেছিলেন এই ঘটনায় তার ভাইকে আত্মসমর্পণ করানো হয়েছে। মঙ্গলবার দুবাই থেকে কলকাতা ফিরে নার্সিংহোমে ভর্তি হয়েছিলেন রাগিব।  সেখান থেকেই পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে রাগিবকে। গ্রেপ্তার করা হয়েছে তার মামাকেও। তবে, দুর্ঘটনার পর যে পারিবারিক বন্ধু আরসালান পারভেজকে নিয়ে পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ করাতে গিয়েছিলেন, তিনি এদিন বলেন, আমরা তো অন্য কারও ছেলেকে পুলিশের হাতে তুলে দেইনি। আমাদের না জানিয়ে দুবাইয়ে চলে গিয়েছিল রাগিব। যেভাবে ওদের বাবা আখতার পারভেজ  ভেঙে পড়েছিল, তা দেখে ছোট ছেলে আরসালান পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ করার ইচ্ছা প্রকাশ করেছিল। ও বলেছিল, যেভাবে পুলিশ চাপ দিচ্ছে তাতে আমিই ধরা দেই। এর মধ্যে দুবাই থেকে ফিরে পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ করতে তোমরা দাদাকে বোঝাও। তবে এই বক্তব্যের মধ্যে কতটা সত্যতা আছে তা খতিয়ে  দেখছে পুলিশ। অবশ্য আরসালান পারভেজ পুলিশি  হেফাজতে থাকা অবস্থায় এই ঘটনায় তার দাদা জড়িত রয়েছেন বলে জানিয়েছিলেন। কিন্তু কেন তাকে আত্মসমর্পণ করানো হলো, সে বিষয়ে অবশ্য তিনি মুখ  খোলেননি।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status