অনলাইন

শেরপুর কারাগারে হাজতির মৃত্যু

শেরপুর প্রতিনিধি

৩ আগস্ট ২০১৯, শনিবার, ৩:৩৩ পূর্বাহ্ন

শেরপুর জেলা কারাগারে হোসেন আলী (৩৫) নামে এক হাজতি যুবকের মৃত্যু হয়েছে। শুক্রবার রাতে জেলা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। ওই যুবক সদর উপজেলার পাকুড়িয়া ইউনিয়নের সোনারপাড়া গ্রামের শমসের আলীর ছেলে। শনিবার দুপুরে হাসপাতাল মর্গে ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে হোসেন আলীর লাশ হস্তান্তর করা হয়েছে।

এ ঘটনায় সদর থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা রুজু হয়েছে। অন্যদিকে মাদকের মামলায় দীর্ঘ দেড় মাস যাবৎ হাজতবাসে থাকার পরও ট্রাইব্যুনাল গঠন না হওয়ার অজুহাতে তার পক্ষে জামিনের আবেদন গ্রহণ করা হয়নি বলে অভিযোগ করেছেন হোসেন আলীর আইনজীবী আলমগীর কিবরিয়া কামরুল।  

কারাগারের জেলার মো. ইসমাইল হোসেন হাজতি মৃত্যুর সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, নিহত হোসেন আলী মাদকের একটি মাদক মামলায় গত ১৫ই জুন থেকে কারাগারে ছিলেন। শুক্রবার রাত ৮টার দিকে রক্তবমি শুরু হলে দ্রুত তাকে জেলা হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে রাত সাড়ে ৯টার দিকে তার মৃত্যু ঘটে।
 
জেলা সদর হাসপাতালের আরএমও ডা. খাইরুল কবীর সুমন বলেন, হাসপাতালের রেকর্ড অনুযায়ী রাত সোয়া ৯টার দিকে জেলা কারাগারের হাজতি আসামি হোসেন আলীকে রক্তবমির কারণে হাসপাতালে আনা হয়। রাত সাড়ে ৯টার দিকে ভর্তির জন্য ওয়ার্ডে নেয়ার সময়ই তিনি মারা যান। জেলা কারাগারের দায়িত্বপ্রাপ্ত সিভিল সার্জন অফিসের মেডিকেল অফিসার ডা. মোবারক হোসেন জানান, ময়নাতদন্তের পর হাজতি হোসেন আলীর মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, অতিরিক্ত রক্তবমির কারণে রক্তশূন্যতায় তার মৃত্যু ঘটতে পারে। তার পেটে আলসারও হতে পারে।

এদিকে হোসেন আলীর আইনজীবী আলমগীর কিবরিয়া কামরুল জানান, এজাহারের কথিত মতে, মাত্র ১৫০ গ্রাম গাঁজা উদ্ধারের অভিযোগে দায়ের করা এক মামলার ৩ আসামির মধ্যে একজন ছিলেন হোসেন আলী। মামলার শুরুতে গত ১৪ই ফেব্রুয়ারি তিনি প্রথম দফায় গ্রেপ্তার হয়ে হাজত খাটার পর ৭ই মার্চ জিআর আমলী আদালত থেকে পুলিশ রিপোর্ট দাখিল পর্যন্ত জামিনে মুক্তি পান। এরপর ২৭শে মে হোসেন আলী অসুস্থ থাকায় তার পক্ষে সময়ের আবেদন করা হলেও পুলিশ রিপোর্ট দাখিল না হওয়ায় তা নাকচ করে গ্রেপ্তারি পরোয়ানার আদেশ হয় এবং মামলাটি বিচার নিস্পত্তির জন্য সিজেএম আদালতে পাঠানো হয়।

এরপর ১৫ই জুন হোসেন আলী দ্বিতীয় দফায় গ্রেপ্তার হয়ে হাজতে যান। কিন্তু তার পক্ষে জামিনের আবেদন দাখিলের চেষ্টা করেও তা সম্ভব হয়নি। সিজেএম আদালতের সেরেস্তা থেকে জানানো হয়েছিল, নতুন আইনে মাদকের মামলা বিচারে ট্রাইব্যুনাল গঠন না হওয়া পর্যন্ত বদলি হয়ে আসা মামলাগুলোর তারিখ দেয়া এবং জামিনের আবেদন গ্রহণ করা সম্ভব নয়। যে কারণে দ্বিতীয় দফায় দীর্ঘ দেড় মাসের বেশি সময় হাজতে থাকার পরও তার পক্ষে জামিন শুনানি করা সম্ভব হয়নি। আর সেটি সম্ভব হলে হয়তো তার এ করুণ পরিণতি হতো না।

এছাড়া আইনজীবী ও আইনজীবী সহকারীসহ আদালতের সঙ্গে সংশ্লিøষ্ট সূত্র জানায়, মাদকের ট্রাইব্যুনাল গঠন না হওয়ার কারণ দেখিয়ে ২০১৮ সালের নতুন আইনে হওয়া মাদকের মামলাগুলো বদলি হয়ে সিজেএম আদালতে গিয়ে জমতে থাকলেও সেগুলোর বিষয়ে কোন পদক্ষেপই নেয়া যাচ্ছে না। সূত্রমতে, এ রকম মামলার সংখ্যা প্রায় শতাধিক।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status