বাংলারজমিন

চাচা-চাচি পুুরুষাঙ্গ কেটে দেয়ায় মারা গেল শিশুটি

স্টাফ রিপোর্টার, কিশোরগঞ্জ থেকে

২১ জুলাই ২০১৯, রবিবার, ৯:০৬ পূর্বাহ্ন

২০ মাস দুঃসহ যন্ত্রণা ভোগ করার পর অবশেষে আকাশের ঠিকানায় পাড়ি জমালো চাচা-চাচির হাতে পুরুষাঙ্গ কর্তনের শিকার হওয়া শিশু নাজিজুল আমিন। পারিবারিক বিরোধের জেরে ২০১৭ সালের ২০শে নভেম্বর রাতে চাচা সবুজ মিয়া ও চাচি রোকসানা বেগম মিলে মাত্র পৌনে দুই বছর বয়সী শিশুটির পুরুষাঙ্গ কর্তন করেছিল। দীর্ঘ ২০ মাস পর শনিবার সকাল ১১টার দিকে বর্বর নৃশংসতার শিকার অবুঝ শিশুটি চলে যায় না ফেরার দেশে। কটিয়াদী উপজেলার বেথইর গ্রামে শিশুটির মামার বাড়িতে মারা যায় শিশু নাজিজুল আমিন। পরে বিষয়টি পুলিশকে জানানোর পর লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কিশোরগঞ্জ ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়। নাজিজুল আমিন বাজিতপুর উপজেলার খাসালা গজারিয়া গ্রামের হামিদ মিয়ার ছেলে।
মামলার বিবরণে জানা যায়, বাজিতপুর উপজেলার খাসালা গজারিয়া গ্রামের হামিদ মিয়া (৫২) এর সঙ্গে তার ছোটভাই সবুজ মিয়ার পারিবারিক বিষয় নিয়ে বিরোধ ছিল। এ অবস্থায় ২০১৭ সালের ১৮ই নভেম্বর হামিদ মিয়ার ছেলে নূরুল আমিনকে (১১) সবুজ মিয়ার ছেলে শাওন (১৪) মারপিট করে। এর প্রতিবাদ করলে সবুজ মিয়া ও তার স্ত্রী রোকসানা বেগম হামিদ মিয়ার স্ত্রী আসমা বেগমকে প্রতিশোধ নেয়ার হুমকি দেন। এর দুই দিন পর ২০শে নভেম্বর (২০১৭) রাত ৮টার দিকে হামিদ মিয়ার স্ত্রী আসমা বেগম পৌনে দুই বছরের শিশুপুত্র নাজিজুল আমিন ও অপর ছেলে নূরুল আমিনকে ঘরে রেখে প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে টয়লেটে যান। এরপর টয়লেট থেকে বেরিয়েই সবুজ মিয়া ও তার স্ত্রী রোকসানাকে তাদের ঘর থেকে বেরিয়ে যেতে দেখেন, আর পৌনে দুই বছরের শিশু নাজিজুল আমিনের পুরুষাঙ্গ কাটা দেখতে পান। এসময় তিনি চিৎকার করতে থাকলে শিশুটির বাবা হামিদ মিয়াসহ অন্যরা দ্রুত গিয়ে এই নৃশংস দৃশ্য দেখেন। মারাত্মক আহত শিশুটিকে প্রথমে বাজিতপুর জহুরুল ইসলাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়। পরে সেখান থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। এ ঘটনায় শিশুটির বাবা হামিদ মিয়া বাদী হয়ে ২১শে নভেম্বর (২০১৭) বাজিতপুর থানায় তার ছোটভাই সবুজ মিয়া ও ভাইয়ের স্ত্রী রোকসানা বেগমকে আসামি করে মামলা করলে এসআই সাখাওয়াত হোসেনকে তদন্ত কর্মকর্তা নিয়োগ দেয়া হয়। ২১শে নভেম্বর মামলা দায়েরের পর ওইদিনই দুই আসামি চাচা-চাচিকে তাদের বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তারা হাইকোর্ট থেকে জামিনে ছাড়া পান।
এদিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে টানা প্রায় এক মাস রেখে চিকিৎসা করানোর পরও শিশু নাজিজুল আমিনের অবস্থার তেমন উন্নতি হয়নি। এরপরও শিশুসন্তানের সুস্থতার আশায় তাকে নিয়মিত ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতেন। এভাবে চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থাতেই শনিবার সকাল ১১টার দিকে শিশুটির মৃত্যু হয়।
কটিয়াদী মডেল থানার ওসি আবুশামা মো. ইকবাল হায়াত জানান, আগের জখমের কারণে শিশুটির মৃত্যু হওয়ায় লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কিশোরগঞ্জ জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। এছাড়া আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার জন্য বিষয়টি বাজিতপুর থানাকে জানানো হয়েছে।



   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status