প্রথম পাতা

ধর্মীয় স্বাধীনতা বিষয়ক সম্মেলন

ওয়াশিংটনে দুই রোহিঙ্গা প্রতিনিধি

মিজানুর রহমান

১৮ জুলাই ২০১৯, বৃহস্পতিবার, ৯:৫৪ পূর্বাহ্ন

মুহিবুল্লাহ

ওয়াশিংটনে মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্ট আয়োজিত দু’দিনের ধর্মীয় স্বাধীনতা বিষয়ক সম্মেলনে যোগ দিয়েছেন বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গা মুসলিম সম্প্রদায়ের দু’জন প্রতিনিধি। বর্মী বর্বরতায় বাড়িঘর ছাড়তে বাধ্য হওয়া ওই সম্প্রদায়ের ১১ লাখ নারী-পুরুষ এবং শিশু বাংলাদেশে অস্থায়ী আশ্রয়ে রয়েছেন। বাস্তুুচ্যত ওই রোহিঙ্গাদের অধিকার তথা রাখাইনে শান্তি পূনঃপ্রতিষ্ঠা এবং নিজ নিজ বসতভিটায় তাদের প্রত্যাবাসনের দাবিতে সোচ্চার সংগঠন আরাকান রোহিঙ্গা সোসাইটি ফর পিস অ্যান্ড হিউম্যান রাইটস-এর চেয়ারম্যান মুহিবুল্লাহ এবং তার সহকর্মী মোহাম্মাদ নওকীম সম্মেলনে যোগ দিয়েছেন। মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্টের আমন্ত্রণে এবং বাংলাদেশ সরকারের অনুমতিক্রমে কক্সবাজারের রোহিঙ্গা ক্যাম্পে বসবাসরত মুহিবুল্লাহ ও নওকীম যুক্তরাষ্ট্র গেছেন বলে দায়িত্বশীল কূটনৈতিক সূত্র নিশ্চিত করেছে। সুত্র মতে, রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের প্রতিনিধি ছাড়াও ধর্ম-বিশ্বাসের কারণে নির্যাতনের শিকার বিশ্বের বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিরা ওই সম্মেলনে আমন্ত্রণ পেয়েছেন। ১৬ ও ১৭ জুলাই’র ওই সম্মেলনে ১৩০ দেশের প্রায় এক হাজারের বেশী প্রতিনিধি যোগ দিয়েছেন বলে জানিয়েছে মার্কিন সংবাদ সংস্থা ভয়েস অব আমেরিকা ওয়ার্ল্ড সার্ভিস। তাদের রিপোর্ট মতে, সেখানে যেমন ধর্মীয় সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিরা আছেন, তেমনি রয়েছেন নাগরিক সমাজ, রাষ্ট্র ও সরকারের প্রতিনিধিরা। বেশ ক’জন পররাষ্ট্র মন্ত্রীও এতে অংশ নিয়েছেন।

তারা বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ধর্ম ও বিশ্বাসের চর্চায় কতটা স্বাধীনতা বা প্রতিবন্ধকতা রয়েছে তা নিয়ে আলোচনা করবেন। স্টেট ডিপার্টমেন্টের সূত্রে ওই রিপোর্ট বলছে, সেখানে ধর্মীয় কারণে নির্যাতন এবং বঞ্চনার শিকার ব্যক্তিরা তাদের ওপর দিয়ে বয়ে চলা ঘটনাগুলো শেয়ার করার সূযোগ পাবেন। স্টেট ডিপার্টমেন্টের এমন আয়োজনের এটি দ্বিতীয় উদ্যোগ। কূটনৈতিক সূত্র বলছে, গত বছর প্রথম ধর্মীয় সম্মেলনের আয়োজন করেছিল যুক্তরাষ্ট্র। ওয়াশিংটন যে নদীর তীরে অবস্থিত সেই পটোম্যাক নদীকে স্মরণ করে তার একটি ডিক্লারেশনও হয়েছিল, যার নাম দেয়া হয়েছিল পটোম্যাক ডিক্লারেশন। এবারে ওই ডিক্লারেশন বাস্তবায়ন এবং আগামীর কর্ম-পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা হবে। ঢাকার কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, মার্কিন ওই উদ্যোগে বাংলাদেশ বারাবরই সহযোগী। গত বছরের প্রথম সম্মেলনে বাংলাদেশের তৎকালীন পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলীর নেতৃত্বে বাংলাদেশ সরকার এবং বিভিন্ন ধর্ম-বিশ্বাসের প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে গঠিত একটি প্রতিনিধি দল অংশ নিয়েছিল। সম্মেলনে বাংলাদেশের ধর্মীয় স্বাধীনতা এবং আশ্রিত রোহিঙ্গা মুসলিম সম্প্রদায়ের বিষয়ে কথা বলেছিলেন তারা। সেখানে গৃহীত পটোম্যাক ডিক্লারেশনের প্রতিও পূর্ণ সমর্থন ছিল ঢাকার। এবারের সম্মেলনে বাংলাদেশ সক্রিয়ভাবে অংশ নিচ্ছে।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আবদুল মোমেনের নেতৃত্বে বাংলাদেশের প্রধান ৪টি ধর্মের প্রতিনিধি এতে অংশ নিয়েছেন। প্রতিনিধি দলে হিন্দু ধর্মের প্রতিনিধি হিসাবে আছেন অ্যাডভোকেট নির্মল চ্যাটার্জি। তিনি হিন্দু-বৌদ্ধ খৃষ্টান ঐক্য পরিষদের উপদেষ্টা। ওই দলে খৃষ্টান সম্প্রদায়ের প্রতিনিধি হিসাবে রয়েছেন খৃষ্টান ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্ট্রের সচিব নির্মল রোজারিও। বৌদ্ধ ধর্মের প্রতিনিধি হিসাবে গেছেন হিন্দু বৌদ্ধ-খৃষ্টান ঐক্য পরিষদের নেতা অশোক বড়ুয়া এবং মুসলিম সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিত্ব করছেন বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় ঈদ-জামাত শোলাকিয়া ঈদগাহের খতিব মাওলানা ফরিদ উদ্দিন মাসউদ তনয় মাওলানা জুনুদ উদ্দিন মাকতুম। তিনি জমিয়তুল উলামা বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদকের দায়িত্বে রয়েছেন। বাংলাদেশ সরকারের ওই প্রতিনিধি দলে তরিকত ফেডারেশনের নেতা তৈয়বুল বশর মাইজভন্ডারিও অন্তর্ভূক্ত রয়েছেন বলে জানা গেছে। তিনি ওই সংগঠনের চেয়ারম্যান নজিবুল বশর মাইজভান্ডারির ছেলে। ঢাকা ও ওয়াশিংটনের কূটনৈতিক সূত্র বলছে, বাংলাদেশ প্রতিনিধি দল ধর্মীয় স্বাধীনতায় নিজ দেশের প্রেক্ষিত এবং বাস্তবতা নিয়ে কথা বলবে। পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মোমেন এ নিয়ে সরকারের অবস্থান তুলে ধরবেন।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status