প্রথম পাতা

এডিস মশা নিধন

অকার্যকর ওষুধ কেনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থার নির্দেশ

স্টাফ রিপোর্টার

১৮ জুলাই ২০১৯, বৃহস্পতিবার, ৯:৫৩ পূর্বাহ্ন

ঢাকা সিটি করপোরেশনে এডিস মশা নিধনে ওষুধ কেন কাজ করছে না এবং আমদানিকৃত ওষুধে ভেজাল কিনা, ভেজাল থাকলে এর সঙ্গে কারা জড়িত তা তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে মশা নিধনে কার্যকর ওষুধ আনা এবং তা ছিটানোর জন্য অতিদ্রুত পদক্ষেপ নিতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এতে প্রয়োজনে সরকারের সহায়তা নিতে হবে। গতকাল বুধবার বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহাসান ও বিচারপতি কে এম কামরুল কাদেরের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এই আদেশ দেন। এছাড়া অকার্যকর ওষুধ আমদানি ও সরবরাহে জড়িতদের বিরুদ্ধে তদন্ত করে কার্যকর ব্যবস্থা নিয়ে ২০ আগস্টের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে দুই সিটি কর্পোরেশনকে।

এর আগে সিটি কর্পোরেশনের আইনজীবী নূরুন নাহার নূপুর আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করেন। প্রতিবেদনে সপ্তাহে ১ দিন ডেঙ্গুবাহী মশা নিধনের ওষুধ ছিটানোর কথা বলা হয়। তখন হাইকোর্ট বলেন, রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশে এখন পর্যন্ত ডেঙ্গু জ্বরে ২৪ জন মানুষ মারা গেছে। ডেঙ্গু আর মহামারী হতে বাকি নেই। মশা মারতে যে ওষুধ কেনা হয়েছে সেই ওষুধে তো কাজ হয় না। তাহলে তো অকার্যকর ওষুধ কেনা হয়েছে। ওখানে কি দুর্নীতি হয়েছে? দুর্নীতি হয়ে থাকলে কারা কারা দুর্নীতির জন্য দায়ী তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিন। হাইকোর্ট তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, আমরা কথা বললে তো বলা হয় যে, আমারা বড়-বড় কথা বলি। মশা নিয়ন্ত্রণের জন্য সিটি কর্পোরেশনকে আমরা পদক্ষেপ নিতে বলেছিলাম। কিন্তু পদক্ষেপ নেয়া হয়নি। এতগুলা মানুষ মারা গেল। মেয়র বলেছেন কিছু হয়নি। কী করে একজন মেয়র বলেন কিছু হয়নি। যার সন্তান মারা গেছে সেই বুঝে কষ্ট কী। ডেঙ্গু নিধনে সরকার যথেষ্ট সচেষ্ট। এজন্য সরকার পর্যাপ্ত বাজেটও বরাদ্দ দিয়েছেন। সার্বিক সহযোগিতা করেছেন। অথচ দুই সিটি কর্পোরেশনই ব্যার্থতার পরিচয় দিচ্ছে। একপর্যায়ে আইনজীবী নুরুন নাহার নূপুর বলেন, পত্রিকায় ডেঙ্গু নিয়ে প্রকাশিত খবরগুলো পড়লে খারাপ লাগে। তখন আদালত বলেন, এসবে দুর্নীতিবাজদের খারাপ লাগে না। কারণ, তারা বাড়িঘর দেশের বাইরে করে। তাদের ছেলেমেয়েরা বাইরে লেখাপড়া করে।

আদালতে রিটের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মনজিল মোরসেদ। আর রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম ও ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার আবদুল্লাহ আল মাহমুদ বাশার। দুই সিটি করপোরেশনের প্রতিবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী নুরুন্নাহার নুপূর। রিটকারীর পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মনজিল মোরসেদ।
আদেশের পরে মনজিল মোরসেদ বলেন, সিটি কর্পোরেশন মশা নিয়ন্ত্রণে যে ব্যবস্থা নিচ্ছে সেটা অকার্যকর। মিডিয়ায় রিপোর্ট এসেছে এই যে ওষুধগুলো দেয়া হচ্ছে, সে ওষুধগুলোর মধ্যে কার্যকারিতা নেই। তারপরও সে ওষুধগুলো তারা দিচ্ছে। এখানে ২০/২২ কোটি টাকার অর্থনৈতিক সংশ্লিষ্টতা আছে। এগুলো দুর্নীতির মাধ্যমে নেয়া হচ্ছে। যারা এ কাজগুলো করছে তাদের বিরুদ্ধে সিটি কর্পোরশেন কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না।

এরআগে, গত ২রা জুলাই এডিস মশা নিয়ন্ত্রণে কী কী পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে, তা জানাতে নির্দেশ দিয়েছিল হাইকোর্ট। ওই দিন আদালত ২ সপ্তাহের মধ্যে ঢাকার উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনকে এ বিষয়ে প্রতিবেদন দাখিল করতে নির্দেশ  দেয়া হয়েছিল। গত ২৭ জানুয়ারি হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের পক্ষে রিট আবেদনটি দায়ের করেন অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status