দেশ বিদেশ

মানিকগঞ্জে নদী ভাঙন বিলীন হচ্ছে বসতবাড়ি ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান

রিপন আনসারী, মানিকগঞ্জ থেকে

১৪ জুলাই ২০১৯, রবিবার, ৯:৩৪ পূর্বাহ্ন

মানিকগঞ্জের পদ্মা-যমুনায় বাড়তে শুরু করেছে বর্ষার পানি। আর এই পানি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গেই নদী তীরবর্তী এলাকার মানুষের মাঝে বেড়ে যাচ্ছে ভাঙন আতঙ্ক। গেল বছরের মতো এবারও শুরু হয়েছে ভাঙন। জেলার চরাঞ্চল এলাকার মধ্যে বর্তমানে দৌলতপুর ও শিবালয় উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে ভাঙনের মাত্রা ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। এতে বিলীন হয়ে যাচ্ছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানও। এ ছাড়াও ভাঙনের আতঙ্কে রয়েছে আরিচা বন্দরসহ তার আশেপাশের এলাকার রাস্তাঘাট ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান।
খোঁজখবর নিয়ে জানা গেছে, শিবালয় উপজেলার তেওতা ইউনিয়নসহ দৌলতপুর উপজেলার ৪টি ইউনিয়নের শতাধিক বাড়িঘর, ধর্মীয় ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ বিস্তীর্ণ ফসলি জমিজমায় আঘাত করতে শুরু করেছে প্রমত্ত যমুনা নদী। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা বলছেন, ভাঙন প্রতিরোধে স্থায়ী ব্যবস্থা নেই। আর পানি উন্নয়ন বোর্ডকে ভাঙন রোধে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য নির্দেশনা দিয়েছেন জেলা প্রশাসক।
ভাঙনকবলিত এলাকার ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ইতিমধ্যে তাদের বাড়িঘর নদীতে বিলীন হয়ে যাওয়ার পথে। পরিবার পরিজন নিয়ে তাদের আতঙ্কের শেষ নেই। ছেলেমেয়েদের স্কুলে পর্যন্ত পাঠাতে পারছেন না। স্কুলটির প্রায় অংশই যমুনা গ্রাস করে নেয়ার ফলে তাদের ছেলেমেয়েদের শিক্ষা জীবন অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। তার সরকারের কাছে দাবি দ্রুত নদী ভাঙন রোধ করে তাদের স্বাভাবিকভাবে বসবাস করার সুযোগ করে দিতে হবে। যমুনায় বিধ্বস্ত দৌলতপুর উপজেলার জিয়ানপুর ইউনিয়নের ১৯৩৮ সালে নির্মিত আবুডাঙ্গা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টির প্রায় অধিকাংশই যমুনার পেটে চলে গেছে। এখন দিশাহারা হয়ে বিদ্যালয়টি অন্য জায়গায় নেয়ার ব্যবস্থা করছেন কর্তৃপক্ষ ও এলাকার মানুষ। এ জন্য বিদ্যালয়ের চেয়ার, বেঞ্চসহ আসবাবপত্র সরিয়ে নেয়া হচ্ছে। এখানে ভাঙনের মুখে পড়েছে একটি মসজিদ ও মাদ্রাসাও। এ ছাড়া পাশেই বাচামারা উত্তরখণ্ড সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়েরও একই দশা। এই বিদ্যালয়ের দুটি ভবন ইতিমধ্যে ভাঙনের মুখে পড়েছে। বন্ধ হয়ে গেছে শিক্ষা কার্যক্রম।
অন্যদিকে যমুনার ভাঙনের আতঙ্কে রয়েছে শিবালয় উপজেলার আরিচা বন্দর এলাকা, শিবালয় বন্দর বাজার, আবহাওয়া অফিস, প্রধানমন্ত্রীর প্রস্তাবিত বিদ্যুৎ প্ল্যান্ট, তেওতা-জাফরগঞ্জ সড়ক, আরিচা দাশকান্দি বেড়িবাঁধসহ নদী তীরবর্তী এলাকার বাড়িঘর ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান।
জিয়ারপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বেলায়েত হোসেন বলেন, নদী ভাঙনের কারণে আবু ডাঙ্গা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। এ ছাড়া ছোট নওতারা, আবুডাঙ্গা, আমতলী আশ্রয়ণ প্রকল্প, আমতলী হাই স্কুল এমনকি আমার ইউনিয়ন পরিষদটিও হুমকির মুখে রয়েছে। প্রশাসন ও সরকারের কাছে আমার জোর দাবি এসব প্রতিষ্ঠানসহ এলাকার বসতবাড়ি ও ফসলি জমি রক্ষায় দ্রুত ব্যবস্থা নেবেন।
মানিকগঞ্জের জেলা প্রশাসক এস এম ফেরদৌস বলেন, যমুনা নদীর স্রোত ও পানি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে আমাদের তিনটি উপজেলায় যে ধরনের নদী ভাঙন এবং ক্ষয়ক্ষতির শিকার হয়েছে তার মধ্যে এ পর্যন্ত ১৯৩৫টি ক্ষতিগ্রস্তের তালিকা আমরা হাতে পেয়েছি। তাদেরকে ৩০ কেজি করে চাল দেয়া হয়েছে এবং ৭৬টি পরিবারকে আমরা ঢেউটিন দিয়েছি। আমরা মন্ত্রণালয়ের কাছে আরো বরাদ্দ চেয়েছি। এ ছাড়া ভাঙন প্রতিরোধে আমরা পানি উন্নয়ন বোর্ডকে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেয়ার জন্য নির্দেশনা দিয়েছি।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status