দেশ বিদেশ

‘চাকার তলোত মাও মরি গেল গরিব বলে বিচার পালেম না’

সিদ্দিক আলম দয়াল, গাইবান্ধা থেকে

১৩ জুলাই ২০১৯, শনিবার, ৮:৪৫ পূর্বাহ্ন

গরিব মানুষ বলে আমার মায়ের কোনো দাম নাই। মোটরসাইকেলের চাকার তলে পাড়ি মোর মাও মরি গেল। সগলে দেখলো কিন্তু কোনো বিচার হলো না। পুলিশকে জানালে খালি তোর মরা মানুষট্যাক কাটাছেঁড়া করবে। গ্রামের মেম্বার কছে তোর মাও মোর আত্মীয়। থানা পুলিশ করি কিছু হবার নয়।
এই কথাগুলো বলেন মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় নিহত আয়তন বিবির ছেলে আমজাদ আলী। গাইবান্ধা সদর উপজেলার খোলাহাটি ইউনিয়নের ঠাকুরের দীঘি গ্রামের মৃত জবের ব্যাপারীর স্ত্রীর নাম আয়তন বিবি। গতকাল সকালে আয়তন বিবি বাড়ি থেকে বের হয়ে রাস্তা পার হতেই বিপরীত দিক থেকে অনটেস্ট মোটরসাইকেল চালক গামা মিয়ার মোটরসাইকেলের চাকার নিচে পড়ে যায়। ঘটনাস্থলেই বৃদ্ধ আয়তন বিবির মৃত্যু হয়। ওই গ্রামের দরিদ্র আয়তন বিবির চার ছেলে এক মেয়ে মায়ের মৃত্যু সংবাদে নির্বাক। তারা মোটরসাইকেল চালকের বিচার চান কিন্তু সে ক্ষমতা তাদের হাতে নেই। খবর শুনে আত্মীয় পরিচয়ে মিজান মেম্বার এসে হাজির। তিনি নিহতের ছেলেমেয়েদের বলেন, যা হবার হইছে। তোর মায়ের হায়াত আছিল না তাই মরি গেছে। এখন বিচার সালিশ করিয়া আর পুলিশের কাছে গিয়ে কোনো লাভ হবে না। পুলিশকে জানালে তারা এসে তোর মায়ের লাশ নিয়ে গিয়ে কাটাছেঁড়া করবে। তোরা আরো কষ্ট পাবু। মায়ের মৃত্যুর বিচার চেয়ে ছেলে আমজাদ আলী চিৎকার করলেও কোনো ফল পায়নি। কারণ ওই গ্রামের মিজান মেম্বার সব ম্যানেজ করে ফেলেছেন। থানায় খবর দিতে দেননি। যে মোটরসাইকেল চালক আয়তন বিবির গায়ের উপর দিয়ে চলে গেছে তিনি মিজান মেম্বারের আত্মীয়। তাই দুই কুল রাখার দায়ীত্ব তার। থানা পুলিশ পর্যন্ত যাতে না গড়ায় সেজন্য মিজান মেম্বার তড়িঘড়ি করে বৃহস্পতিবার রাতে নিহতের দাফন কাফনের ব্যবস্থা করেন। এ ব্যাপারে মিজান মেম্বার বলেন, দুজনেই আমার আত্মীয়। আর লাশ কাটাছেঁড়া হোক তা কেউ চায় না। সেজন্য পুলিশকে এড়ানো হয়েছে। গাইবান্ধা সদর থানার ওসি খান মোহাম্মদ শাহরিয়ার বলেন, মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় একজন নিহত হয়েছেন তা শুনেছি। কিন্তু কেউ অভিযোগ নিয়ে থানায় আসেনি।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status