শেষের পাতা

ইসলামী পর্যটনকে বিশ্বব্র্যান্ড হিসেবে বিকশিত করার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর

কূটনৈতিক রিপোর্টার

১২ জুলাই ২০১৯, শুক্রবার, ৯:৪৮ পূর্বাহ্ন

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ইসলামী পর্যটনকে বিশ্ব বাণিজ্য ব্র্যান্ড হিসেবে বিকশিত করতে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ইসলামী পর্যটনকে ‘বিশ্ব বাণিজ্য ব্র্যান্ড’ হিসেবে গড়ে তুলতে সার্বিক প্রয়াস ও রোডম্যাপের প্রয়োজন অতি জরুরি। কারণ এর বাজার বার্ষিক ৮ দশমিক ৩ শতাংশ হারে বেড়ে ২০২১ সাল নাগাদ তা ২৪৩ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছাবে। গতকাল সকালে রাজধানীতে ‘ঢাকা দ্য ওআইসি সিটি অব ট্যুরিজম-২০১৯’ উদযাপন উপলক্ষে দু’দিনব্যাপী অনুষ্ঠানের উদ্বোধনকালে তিনি এ আহ্বান জানান। বলেন, আমি মনে করি মুসলিম উম্মাহর একসঙ্গে কাজ করা একান্তভাবে প্রয়োজন।

যাতে আমরা সারা বিশ্বে সকলের সঙ্গে সমপ্রীতির বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে একত্রে চলতে পারি। নিজেদের যে কোন সমস্যা নিজেরাই সমাধান করতে পারি। যাতে করে অন্য কেউ মুসলমানদের ভাগ্য নিয়ে খেলতে না পারে। প্রধানমন্ত্রী আন্তঃওআইসি পর্যটক প্রবাহ বৃদ্ধির লক্ষ্যে সংস্থাটির সদস্যভূক্ত দেশগুলোর মধ্যে ভিসা সহজীকরণ, বিনিয়োগ বৃদ্ধি এবং পর্যটনকেন্দ্রিক খাতগুলোর মানোন্নয়নে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণের ওপরও বিশেষ গুরুত্বারোপ করেন। প্রধানমন্ত্রী তার ভাষণে ওআইসিভূক্ত দেশগুলোর মুসলিম পর্যটক এবং পাশ্চাত্য দেশগুলোর জন্য বিশ্বের সর্ববৃহৎ বালুময় সমুদ্রতট কক্সবাজারে পৃথক পর্যটন স্পট তৈরির প্রস্তাব করেন।

তিনি বঙ্গপোসাগরের নিকটবর্তী দেশগুলোকে নিয়ে বাংলাদেশের একটি নৌ-ট্যুরিজম রুট তৈরির পরিকল্পনার কথাও উল্লেখ করেন। পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মো. মাহবুব আলী, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান র.আ.ম ঔবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী, মন্ত্রণালয়টির সচিব এম মহিবুল হক এবং ওআইসি’র সহকারী মহাসচিব মুসা কুলাকলিকায়া অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন। অনুষ্ঠানে ৪শ’ বছরের প্রাচীন নগরী ঢাকার মুসলিম ঐতিহ্য ও নিদর্শন নিয়ে একটি অডিও ভিজুয়াল প্রেজেন্টেশন হয়। মন্ত্রিপরিষদের সদস্যবৃন্দ, প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টাগণ, সংসদ সদস্যবৃন্দ, বিভিন্ন মন্ত্রণালয় দপ্তর ও বিভাগের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ, সাবেক মন্ত্রী ও উপদেষ্টাসহ আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতৃবৃন্দ, বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত এবং হাইকমিশনারগণ, কূটনৈতিক মিশনের সদস্যবৃন্দ, উন্নয়ন সহযোগী সংস্থার প্রতিনিধি এবং অনুষ্ঠানে যোগদানকারী প্রায় ৩০টি দেশের পর্যটন মন্ত্রী ও তাদের প্রতিনিধি অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

উল্লেখ্য, ২০১৮ সালের ৫ ও ৬ ফেব্রুয়ারি, ঢাকায় ওআইসি’র পর্যটন মন্ত্রীদের ১০ম সম্মেলনে গৃহীত ঢাকা ঘোষণায় ঢাকাকে ওআইসি সিটি অব ট্যুরিজম-২০১৯ হিসেবে নির্বাচন করা হয়। ৪ ওআইসিভূক্ত রাষ্ট্রের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে শীর্ষস্থান দখল করে ঢাকা। সম্মেলনে বাংলাদেশের নিকটতম প্রতিদ্বন্ধি আজারবাইজানের ’গাবালা’কে ২০২০ সালের সিটি অব ট্যুরিজম হিসেবে ঘোষণা করা হয়। ঢাকাকে সিটি অব ট্যুরি‌্যজম ঘোষণাকে উদযাপনের জন্য বৃহস্পতি ও শুক্রবার বেসামরিক বিমান ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বিদেশি পর্যটকদের জন্য ঢাকা ও এর আশপাশের বিভিন্ন ঐতিহাসিক মুসলিম নিদর্শনগুলো পরিদর্শন, কনসার্ট এবং হাতির ঝিলে লেজার শো এবং আতশবাজীর প্রদর্শন করা হবে। ওআইসি’র ২০১৮ সালের এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, বিশ্বে মুসলিম ট্যুরিস্টের সংখ্যা ১৫৬ মিলিয়ন যা ২০২০ সালে বেড়ে দাঁড়াবে ১৮০ মিলিয়ন। একই বছর সারা বিশ্বের জনসংখ্যার ২৬ শতাংশ হবে মুসলিম।

প্রধানমন্ত্রী তার ভাষণে ‘ইসলামী অর্থনীতি’ সম্পর্কে বলেন, ‘এটি বর্তমানে নবরূপে বিকাশ লাভ করছে। হালাল ফুডস, ইসলামী ফাইন্যান্স, হালাল ফার্মাসিউটিক্যালস এবং প্রসাধনী, হালাল পর্যটন ইত্যাদি হচ্ছে ইসলামিক অর্থনীতির ক্রমবর্ধমান খাত। এ খাতগুলো বিকাশের জন্য ওআইসি সদস্যভূক্ত রাষ্ট্রসমূহের সরকারি ও বেসরকারি উভয় খাতের সহযোগিতা ও অংশীদারিত্ব একান্ত প্রয়োজন বলে উল্লেখ করেন তিনি।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status