বাংলারজমিন

রামগঞ্জে সরকারি গুদামে সিন্ডিকেট করে ধান বিক্রি

রামগঞ্জ (লক্ষ্মীপুর) প্রতিনিধি

১২ জুলাই ২০১৯, শুক্রবার, ৮:৩৮ পূর্বাহ্ন

লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জ উপজেলায় চলতি বছর বোরো মৌসুমে কৃষকদের পরিবর্তে একটি প্রভাবশালী সিন্ডিকেট চক্র সরকারি গুদামে ধান বিক্রি করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এতে বঞ্চিত হচ্ছেন সাধারণ কৃষকরা। চলতি বছর রামগঞ্জ উপজেলাব্যাপী ১ম ধাপে ৩৮৩ জন কৃষকের কাছ থেকে ২৬০ টন ও ২য় ধাপে ৯০১ জন কৃষকের কাছ থেকে সরাসরি ৪৩৪ টন ধান ক্রয় করার কথা থাকলেও স্থানীয় কাউন্সিলর প্রভাবশালী সিন্ডিকেট প্রধান দেলোয়ার হোসেন দেলু এসপি, কৃষি কর্মকর্তা মো. তানভীর হোসেন, খাদ্য কর্মকর্তা ও ওসি এলএসডিকে ম্যানেজ করে উপজেলার কয়েকজন নেতার সঙ্গে ঐক্যবদ্ধ হয়ে একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেট তৈরি করে তারা কৃষকদের কাছ থেকে কৃষি কার্ড সংগ্রহ করে অসহায় কৃষকদের কাছ থেকে প্রতি মণ ধান ৫০০ থেকে ৫৫০ টাকা দরে কিনে সরকারি খাদ্যগুদামে ১ হাজার ৪০ টাকা দরে বিক্রি করে হাতিয়ে নিচ্ছে লাখ লাখ টাকা।
উপজেলা খাদ্যনিয়ন্ত্রকের কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ২৩শে মে থেকে এই উপজেলায় চলতি বছরের ধান সংগ্রহ কার্যক্রম শুরু হয়। এ বছর রামগঞ্জে ২৬ টাকা কেজি দরে ৪৩৪ টন ধান সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। আগামী ৩১শে আগস্ট পর্যন্ত ধান সংগ্রহ কার্যক্রম চলবে।
কয়েকজন কৃষক অভিযোগ করেন, বাজারের চেয়ে প্রায় দ্বিগুণ মুনাফা পাওয়ায় স্থানীয় একটি প্রভাবশালী মহল কৃষকের কাছ থেকে কমদামে ধান কিনে নিচ্ছেন। তারা কিছু কৃষককে ‘ম্যানেজ’ করে তাদের কৃষি কার্ড ব্যবহার করে সরকারি খাদ্যগুদামে ধান বিক্রি করছেন। কৃষকেরা খাদ্যগুদামে ধান বিক্রি করতে গেলে ধান কেনা শেষ বলে জানিয়ে দেয়া হচ্ছে। কৃষকরা ধান দিতে না পেরে রামগঞ্জ খাদ্যগুদাম চত্বরে চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। স্থানীয় বাজারে প্রতি মণ ধানের দাম ৫০০ থেকে ৬৫০ টাকা। সরকারিভাবে প্রতি মণ ধান কেনা হচ্ছে ১ হাজার ৪০ টাকায়।
ইছাপুরের কৃষক মো. হানিফ, আনোয়ার, রাঘাবপুরের কৃষক ইকবাল, জসিম বলেন, ‘সরকারি গুদামে ধান বিক্রি করতে যাওয়ার পর কৃষকদের বলা হলো ধান কেনা শেষ। পরে জানতে পারলাম, একজন প্রভাবশালী দেলু এসপিসহ কয়েকজনের কাছ থেকে গুদামের কর্মকর্তারা ধান কিনছেন।’ কৃষকদের কাছ থেকে কার্ড নিয়ে খাদ্যগুদামে ধান দিচ্ছেন ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট। ধান সংগ্রহের চূড়ান্ত কৃষক তালিকায় মৃত ব্যক্তি ও কৃষক নয় এমন ব্যক্তিদের নামও রয়েছে। উপজেলার ভাদুর ইউপি চেয়ারম্যান জাহিদ হোসেন বলেন, ‘প্রকৃত কৃষকেরা গুদামে ধান বিক্রি করতে পারছেন না। আমার ইউনিয়নের অনেক কৃষক আমার কাছে অভিযোগ করেছেন। ইউপি চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান বলেন, কৃষকদের ১০০০ থেকে ১৫০০ টাকা দেয়ার কথা বলে তাদের কৃষি কার্ড নিচ্ছেন স্থানীয় ধান ব্যবসায়ীরা। কৃষকের পরিবর্তে সিন্ডিকেট ব্যবসায়ীরা খাদ্যগুদামে ধান বিক্রি করছেন- এমন অভিযোগ এখন সকলের মুখে। এ ব্যাপারে সিন্ডিকেট প্রধান দেলোয়ার হোসেন এসপি দেলুর সঙ্গে বারবার যোগাযোগ করেও তাকে পাওয়া যায়নি। এ ব্যাপারে রামগঞ্জ খাদ্যগুদামের ওসি এলএসডি মো. ইসমাইল হোসেন জানান, ৪৩৪ টনের মধ্যে মাত্র ২ টন ধান সংগ্রহ করেছি। তবে এমপি সাহেবের নির্দেশের পর বর্তমানে ধান সংগ্রহ বন্ধ রয়েছে।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status