বাংলারজমিন

গোয়াইনঘাটে বন্যা, যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন

গোয়াইনঘাট (সিলেট) প্রতিনিধি

১২ জুলাই ২০১৯, শুক্রবার, ৮:৩১ পূর্বাহ্ন

সিলেটের গোয়াইনঘাটে উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে সৃষ্ট বন্যায় প্রায় সবক’টি ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চলসহ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে উপজেলার সিংহভাগ এলাকা। উজান থেকে নেমে আসা ঢলের কারণে গোয়াইনঘাটের পিয়াইন নদী, সারী এবং গোয়াইন অববাহিকায় নদ-নদীর পানির বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ২ দিন থেকে টানা ভারী বর্ষণের ফলে সৃষ্ট ভয়াবহ বন্যায় জেলা সদরের সঙ্গে গোয়াইনঘাটের যোগাযোগ রক্ষাকারী সিলেট, সারী গোয়াইনঘাট সড়ক, সিলেট সালুটিকর গোয়াইনঘাট সড়কসহ সবক’টি সড়কেই কোথাও হাঁটু পানি কোথাও কোমড় পানিতে নিমজ্জিত রয়েছে। আকস্মিক বন্যায় প্লাবিত হওয়ায় গোয়াইনঘাটের প্রায় সবক’টি এলাকায় বিদ্যালয় সমূহ পানিবন্দি হয়ে পড়ায় অঘোষিত বন্ধ হয়ে পড়েছে বিদ্যালয়গুলো। বিপদসীমার উপর দিয়ে নদ-নদীর পানি প্রবাহিত হওয়ায় জাফলং, বিছনাকান্দিসহ কোয়ারী এলাকাগুলোতে পাথর, বালু উত্তোলন সম্পূর্ণ বন্ধ রয়েছে। বিশেষ করে নিম্নাঞ্চল ও হাওর এলাকায় পানিবন্দি মানুষের দুর্ভোগ হাহাকার মারাত্মক আকার ধারণ করেছে। প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, সারীঘাট পয়েন্টে সারী নদীর পানি বিপদ সীমার ১১.৭৫ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। সকাল ৬টায় ১২.৩০ মিটার এবং সকাল ৯টায় ১২.১৯ মিটার বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। জাফলং পয়েন্টে পিয়াইন নদীর পানি সকাল ৬টায় ১২.৯৭ মিটার এবং ৯টায় ১২.৭৩ মিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। গোয়াইনঘাটের জাফলংয়ে বৃহস্পতিবার সকালে মোট বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে ১২৯ মি.মি.। গোয়াইনঘাটের বন্যা উপদ্রুত এলাকার মানুষের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, আকস্মিক পাহাড়ি ঢলে ভয়াবহ বন্যায় পানিবন্দি হয়ে মারাত্মক দুর্ভোগ ভোগান্তির স্বীকার হয়েছেন তারা। প্রায় সবক’টি ইউনিয়নের নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরা মোবাইল ফোনে জানান, উপদ্রুত এলাকায় জরুরি ত্রাণ সামগ্রী বরাদ্দের জন্য সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা নিতে। এ ব্যাপারে কথা হলে গোয়াইনঘাটের উপজেলা নির্বাহী অফিসার বিশ্বজিত কুমার পাল বলেন, গোয়াইনঘাটে ভয়াবহ বন্যায় বেশি ক্ষতিগ্রস্ত ৬টি ইউনিয়নের মানুষের জন্য এখন পর্যন্ত ৬ টন চাল দেয়া হয়েছে। আরো ত্রাণ চাওয়া হয়েছে।
সুনামগঞ্জে লাখো মানুষ পানিবন্দি
সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি: গত এক সপ্তাহ ধরে ভারী বর্ষণ আর উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল অব্যাহত থাকায় সুনামগঞ্জের ৫টি উপজেলার লাখো মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। সুনামগঞ্জ সদর, তাহিরপুর, বিশ্বম্ভরপুর, দোয়ারাবাজার ও ছাতক এ পাঁচ উপজেলার বিভিন্ন সড়ক পাহাড়ি ঢলে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় ভোগান্তিতে পড়েছেন মানুষজন। জেলার বেশির ভাগ উপজেলার রাস্তাঘাট, হাট-বাজার, বসতবাড়ি, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, মসজিদ-মাদ্রাসায় পানি ঢুকে পড়েছে। চলমান বন্যায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন তাহিরপুর ও বিশ্বম্ভরপুর উপজেলাবাসী। জেলার বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার শক্তিয়ারখলায় ও তাহিরপুর উপজেলার আনোয়ারপুরে সড়ক পানির নিচে থাকায় জেলা সদরের সঙ্গে সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে তাহিরপুর উপজেলার। এদিকে সদর উপজেলার গৌরারং, জাহাঙ্গীরনগর, সুরমা, রঙ্গারচর কোরবাননগর ইউনিয়ন, দোয়ারাবাজার ও ছাতক উপজেলার বেশকিছু ইউনিয়নেও ঘরবাড়ি ও রাস্তাঘাট পানির নিচে তলিয়ে গেছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্র জানায়, সুরমা নদীর পানি সুনামগঞ্জ পয়েন্টে বিপদসীমার ৮৪ সে.মি উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। সব ক’টি সীমান্ত নদীর পানিও বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ২৪ ঘণ্টায় বৃষ্টিপাত হয়েছে ১৬৮ মি.মি.। জেলার ১০টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পানি প্রবেশ করেছে। এছাড়াও আরো একাধিক প্রাথমিক বিদ্যালয়ের আঙ্গিনা ও রাস্তাঘাট ডুবে গেছে। জেলার ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মো. ফজলুর রহমান বলেন, জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে ১১টি উপজেলায় ৩০০ টন চাল ও ১২৬৫ প্যাকেট শুকনো খাবার বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। বরাদ্দ দেয়া চাল ও শুকনো খাবার বিতরণ শুরু হবে। প্রতিটি পরিবারের জন্য ৩০ কেজি করে চাল বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। এছাড়া মজুত আছে আরো ২০০ টন চাল ও নগদ তিন লাখ টাকা। সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আবু বকর সিদ্দিক ভুইয়া বলেন, সীমান্তের ওপাড় থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও টানা বৃষ্টির কারণে হাওর ও নদীর পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। পরিস্থিতি মোকাবিলায় সব বিভাগের প্রস্তুতি রয়েছে।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status