শেষের পাতা
পিপলস লিজিং বন্ধ দিশাহারা গ্রাহক
অর্থনৈতিক রিপোর্টার
১১ জুলাই ২০১৯, বৃহস্পতিবার, ৯:২৬ পূর্বাহ্ন
আমানতকারীদের স্বার্থ সংরক্ষণ করতে পিপলস লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস লিমিটেড (পিএলএফএসএল) বন্ধের (অবসায়ন) চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। তবে এ প্রতিষ্ঠানের আমানতকারীদের ভয়ের কিছু নেই। পিপলস লিজিং বন্ধ হয়ে যাচ্ছে গণমাধ্যমে এমন খবর প্রকাশিত হওয়ার পর গতকাল এ বিষয়ে সংবাদ সম্মেলন করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। ওই সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান, বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র সিরাজুল ইসলাম। এ সময় উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক মোহাম্মদ শাহ আলম। এদিকে, পিএলএফএসএল বন্ধের খবরে দিশেহারা গ্রাহক। পিপলস লিজিংয়ে বর্তমানে গ্রাহক প্রায় ৬ হাজার। অন্যদিকে, দেশের পুঁজিবাজারে গতকাল সকালে লেনদেন শুরু হওয়ার কিছু সময়ের মধ্যেই ক্রেতাশূন্য হয়ে পড়ে কোম্পানিটি।
সিরাজুল ইসলাম বলেন, পিপলস লিজিংয়ে মোট আমানতের তুলনায় তাদের সম্পদের পরিমাণ বেশি রয়েছে। সুতরাং আতঙ্কিত হওয়ার কোন কারণ নেই। যত দ্রুত সম্ভব আমানতকারীদের টাকা ফেরত দেয়া হবে। এখন পর্যন্ত ব্যাংকের আমানত ২০৬ কোটি টাকা। এই আমানতের বিপরীতে কোম্পানিটির সম্পদের পরিমাণ ৩ হাজার ২৩৯ কোটি টাকা। দ্রুত কোম্পানিটি অবসায়নের ব্যবস্থা করে হাইকোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী আমানতকারীদের পাওনা পরিশোধের ব্যবস্থা করা হবে।
পিপলস লিজিংয়ের শেয়ারে বিনিয়োগকারীরা তাদের টাকা ফেরত পাবে কিনা জানতে চাইলে নির্বাহী পরিচালক শাহ আলম জানান, আর্থিক প্রতিষ্ঠান আইন এর বিধি অনুযায়ী অগ্রাধিকার ভিত্তিতে আমরা সব গ্রাহকের টাকা পরিশোধ করব। এ বিষয়ে চিন্তার কিছু নেই। ২০১৪ সালের পরিদর্শনের পর থেকেই প্রতিষ্ঠানের অবস্থা খারাপ হতে থাকে। বিভিন্নভাবে তাদেরকে সতর্ক করার পরেও কাজ না হওয়ায় এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। তিনি আরো জানান, ইতিমধ্যেই অবসায়নের কাজ শুরু হয়ে গেছে, যত দ্রুত সম্ভব কাজ সম্পন্ন করা হবে।
জানা গেছে, পিপলস লিজিংয়ে ঋণ বিতরণে অব্যবস্থাপনা, সম্পত্তির ঝুঁকি ও তারল্য সংকটে রয়েছে। প্রতিষ্ঠানটি আমানতকারীর অর্থ ফেরত দিতে পারছে না। সার্বিক পরিস্থিতি তুলে ধরে সমপ্রতি অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের কাছে চিঠি দেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির।
চিঠিতে আর্থিক প্রতিষ্ঠান আইনের ২২ (৩) এবং ২৯ ধারায় প্রতিষ্ঠানটি অবসায়নের (লিকুইডেশন) উদ্যোগ গ্রহণের বিষয়ে মতামত চাওয়া হয়। সম্মতি দিয়ে অর্থ মন্ত্রণালয় গত ২৬শে জুন কেন্দ্রীয় ব্যাংকে চিঠি দেয়। চিঠি পাওয়ার পর বাংলাদেশ ব্যাংকের আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও বাজার বিভাগ অবসায়ন প্রক্রিয়া শুরু করেছে। এজন্য প্রতিষ্ঠানটিতে আটকে থাকা আমানতের পরিমাণ, অনিয়মের ধরণ, প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তা-কর্মচারীর সংখ্যা ও মাসিক বেতন-ভাতার পরিমাণ উল্লেখ করে একটি প্রতিবেদন তৈরির কাজ চলছে।
২০১৮ সালের সেপ্টেম্বর প্রান্তিক তথ্য অনুযায়ী, পিপলস লিজিংয়ে আমানত রয়েছে ২ হাজার ৮৬ কোটি টাকা। তবে দৈনন্দিন কার্যক্রম পরিচালনার মতো নগদ অর্থ সংকটে রয়েছে। ফলে আমানতকারীদের টাকা ফেরত দিতে পারছে না।
১৯৯৭ সালে কার্যক্রম শুরু করা এ প্রতিষ্ঠানের ১ হাজার ১৩১ কোটি টাকা ঋণের মধ্যে খেলাপি ৭৪৮ কোটি টাকা, যা মোট ঋণের ৬৬.১৪ শতাংশ। ধারাবাহিক লোকসানের কারণে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত এ প্রতিষ্ঠানটি ২০১৪ সালের পর থেকে কোনো লভ্যাংশ দিতে পারেনি। তাদের মোট শেয়ারের ৬৭.৮৪ শতাংশই রয়েছে সাধারণ শেয়ারহোল্ডারদের হাতে। বাকি শেয়ারের মধ্যে স্পন্সর ও পরিচালকদের হাতে রয়েছে ২৩.২১ শতাংশ। প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের হাতে ৮.৭৬ শতাংশ এবং ০.১৯ শতাংশ শেয়ার রয়েছে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের হাতে।
সংশ্নিষ্টরা জানান, অবসায়ন হওয়া প্রতিষ্ঠানের আমানতকারীর অর্থ কোন উপায়ে ফেরত দেয়া হবে, সে বিষয়ে আর্থিক প্রতিষ্ঠান আইনে কিছু বলা নেই। এক্ষেত্রে আদালত যে উপায়ে অর্থ পরিশোধ করতে বলবেন, তা কার্যকর হবে। তবে সাধারণভাবে সম্পদ বিক্রি এবং সরকারের সহায়তার আলোকে আমানতকারীদের অর্থ ফেরত দেয়া হয়। এজন্য প্রথমে প্রতিষ্ঠানের দায় ও সম্পদ নিরূপণ করা হয়। এরপর একটি স্কিম ঘোষণা করা হয়। যেখানে নির্দিষ্ট মেয়াদ উল্লেখ করে কোন পরিমাণ আমানত কবে নাগাদ পরিশোধ করা হবে তার উল্লেখ থাকে।
এদিকে দেশের শেয়ারবাজারে গতকাল সকালে লেনদেন শুরু হওয়ার কিছু সময়ের মধ্যেই কোম্পানটির প্রায় ক্রেতা শূন্য হয়ে পড়ে। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের ওয়েবসাইটে বুধবার দুপুরে দেখা যায়, বেলা ১২ টা ১০ মিনিটে রিপোর্ট লেখার সময়েও ডিএসইর ওয়েবসাইটের স্ক্রিনে কোনো ক্রেতা দেখা যায়নি। এ সময়ে সর্বোচ্চ ৩ টাকা ৯০ পয়সা ও সর্বনিম্ন ৩ টাকা ৩০ পয়সার মধ্যে ৬৬ হাজার ৯৯৯টি শেয়ার বিক্রির প্রস্তাব ছিল। কোম্পানিটির বন্ধের ঘোষণায় মঙ্গলবার থেকেই লেনদেনে এমন প্রভাব পড়েছে। আমানতকারীদের টাকা ফেরতে ব্যর্থতার কারণে প্রতিষ্ঠানটিকে বন্ধ করে দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এই বন্ধের ঘোষণা ও আর্থিক অবস্থার দুর্দশার কারণে বিনিয়োগকারীরা আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছেন।
এদিকে, পিএলএফএসএল বন্ধ হয়ে গেলে আমানতকারীদের পাশাপাশি সাধারণ শেয়ারহোল্ডারদেরকেও বিপুল পরিমাণ লোকসানের কবলে পড়তে হবে। এমনকি হারাতে হতে পারে সম্পূর্ণ বিনিয়োগ। তাদের সম্মিলিত লোকসানের পরিমাণ ৭০০ কোটি টাকা ছাড়িয়ে যেতে পারে। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) ও কোম্পানির সর্বশেষ বার্ষিক প্রতিবেদনে প্রাপ্ত পরিসংখ্যান বিশ্লেষণ করে এই তথ্য পাওয়া গেছে।
সিরাজুল ইসলাম বলেন, পিপলস লিজিংয়ে মোট আমানতের তুলনায় তাদের সম্পদের পরিমাণ বেশি রয়েছে। সুতরাং আতঙ্কিত হওয়ার কোন কারণ নেই। যত দ্রুত সম্ভব আমানতকারীদের টাকা ফেরত দেয়া হবে। এখন পর্যন্ত ব্যাংকের আমানত ২০৬ কোটি টাকা। এই আমানতের বিপরীতে কোম্পানিটির সম্পদের পরিমাণ ৩ হাজার ২৩৯ কোটি টাকা। দ্রুত কোম্পানিটি অবসায়নের ব্যবস্থা করে হাইকোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী আমানতকারীদের পাওনা পরিশোধের ব্যবস্থা করা হবে।
পিপলস লিজিংয়ের শেয়ারে বিনিয়োগকারীরা তাদের টাকা ফেরত পাবে কিনা জানতে চাইলে নির্বাহী পরিচালক শাহ আলম জানান, আর্থিক প্রতিষ্ঠান আইন এর বিধি অনুযায়ী অগ্রাধিকার ভিত্তিতে আমরা সব গ্রাহকের টাকা পরিশোধ করব। এ বিষয়ে চিন্তার কিছু নেই। ২০১৪ সালের পরিদর্শনের পর থেকেই প্রতিষ্ঠানের অবস্থা খারাপ হতে থাকে। বিভিন্নভাবে তাদেরকে সতর্ক করার পরেও কাজ না হওয়ায় এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। তিনি আরো জানান, ইতিমধ্যেই অবসায়নের কাজ শুরু হয়ে গেছে, যত দ্রুত সম্ভব কাজ সম্পন্ন করা হবে।
জানা গেছে, পিপলস লিজিংয়ে ঋণ বিতরণে অব্যবস্থাপনা, সম্পত্তির ঝুঁকি ও তারল্য সংকটে রয়েছে। প্রতিষ্ঠানটি আমানতকারীর অর্থ ফেরত দিতে পারছে না। সার্বিক পরিস্থিতি তুলে ধরে সমপ্রতি অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের কাছে চিঠি দেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির।
চিঠিতে আর্থিক প্রতিষ্ঠান আইনের ২২ (৩) এবং ২৯ ধারায় প্রতিষ্ঠানটি অবসায়নের (লিকুইডেশন) উদ্যোগ গ্রহণের বিষয়ে মতামত চাওয়া হয়। সম্মতি দিয়ে অর্থ মন্ত্রণালয় গত ২৬শে জুন কেন্দ্রীয় ব্যাংকে চিঠি দেয়। চিঠি পাওয়ার পর বাংলাদেশ ব্যাংকের আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও বাজার বিভাগ অবসায়ন প্রক্রিয়া শুরু করেছে। এজন্য প্রতিষ্ঠানটিতে আটকে থাকা আমানতের পরিমাণ, অনিয়মের ধরণ, প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তা-কর্মচারীর সংখ্যা ও মাসিক বেতন-ভাতার পরিমাণ উল্লেখ করে একটি প্রতিবেদন তৈরির কাজ চলছে।
২০১৮ সালের সেপ্টেম্বর প্রান্তিক তথ্য অনুযায়ী, পিপলস লিজিংয়ে আমানত রয়েছে ২ হাজার ৮৬ কোটি টাকা। তবে দৈনন্দিন কার্যক্রম পরিচালনার মতো নগদ অর্থ সংকটে রয়েছে। ফলে আমানতকারীদের টাকা ফেরত দিতে পারছে না।
১৯৯৭ সালে কার্যক্রম শুরু করা এ প্রতিষ্ঠানের ১ হাজার ১৩১ কোটি টাকা ঋণের মধ্যে খেলাপি ৭৪৮ কোটি টাকা, যা মোট ঋণের ৬৬.১৪ শতাংশ। ধারাবাহিক লোকসানের কারণে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত এ প্রতিষ্ঠানটি ২০১৪ সালের পর থেকে কোনো লভ্যাংশ দিতে পারেনি। তাদের মোট শেয়ারের ৬৭.৮৪ শতাংশই রয়েছে সাধারণ শেয়ারহোল্ডারদের হাতে। বাকি শেয়ারের মধ্যে স্পন্সর ও পরিচালকদের হাতে রয়েছে ২৩.২১ শতাংশ। প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের হাতে ৮.৭৬ শতাংশ এবং ০.১৯ শতাংশ শেয়ার রয়েছে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের হাতে।
সংশ্নিষ্টরা জানান, অবসায়ন হওয়া প্রতিষ্ঠানের আমানতকারীর অর্থ কোন উপায়ে ফেরত দেয়া হবে, সে বিষয়ে আর্থিক প্রতিষ্ঠান আইনে কিছু বলা নেই। এক্ষেত্রে আদালত যে উপায়ে অর্থ পরিশোধ করতে বলবেন, তা কার্যকর হবে। তবে সাধারণভাবে সম্পদ বিক্রি এবং সরকারের সহায়তার আলোকে আমানতকারীদের অর্থ ফেরত দেয়া হয়। এজন্য প্রথমে প্রতিষ্ঠানের দায় ও সম্পদ নিরূপণ করা হয়। এরপর একটি স্কিম ঘোষণা করা হয়। যেখানে নির্দিষ্ট মেয়াদ উল্লেখ করে কোন পরিমাণ আমানত কবে নাগাদ পরিশোধ করা হবে তার উল্লেখ থাকে।
এদিকে দেশের শেয়ারবাজারে গতকাল সকালে লেনদেন শুরু হওয়ার কিছু সময়ের মধ্যেই কোম্পানটির প্রায় ক্রেতা শূন্য হয়ে পড়ে। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের ওয়েবসাইটে বুধবার দুপুরে দেখা যায়, বেলা ১২ টা ১০ মিনিটে রিপোর্ট লেখার সময়েও ডিএসইর ওয়েবসাইটের স্ক্রিনে কোনো ক্রেতা দেখা যায়নি। এ সময়ে সর্বোচ্চ ৩ টাকা ৯০ পয়সা ও সর্বনিম্ন ৩ টাকা ৩০ পয়সার মধ্যে ৬৬ হাজার ৯৯৯টি শেয়ার বিক্রির প্রস্তাব ছিল। কোম্পানিটির বন্ধের ঘোষণায় মঙ্গলবার থেকেই লেনদেনে এমন প্রভাব পড়েছে। আমানতকারীদের টাকা ফেরতে ব্যর্থতার কারণে প্রতিষ্ঠানটিকে বন্ধ করে দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এই বন্ধের ঘোষণা ও আর্থিক অবস্থার দুর্দশার কারণে বিনিয়োগকারীরা আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছেন।
এদিকে, পিএলএফএসএল বন্ধ হয়ে গেলে আমানতকারীদের পাশাপাশি সাধারণ শেয়ারহোল্ডারদেরকেও বিপুল পরিমাণ লোকসানের কবলে পড়তে হবে। এমনকি হারাতে হতে পারে সম্পূর্ণ বিনিয়োগ। তাদের সম্মিলিত লোকসানের পরিমাণ ৭০০ কোটি টাকা ছাড়িয়ে যেতে পারে। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) ও কোম্পানির সর্বশেষ বার্ষিক প্রতিবেদনে প্রাপ্ত পরিসংখ্যান বিশ্লেষণ করে এই তথ্য পাওয়া গেছে।