দেশ বিদেশ

যুদ্ধাপরাধ মামলায় আজহারের আপিলের রায় যেকোনো দিন

স্টাফ রিপোর্টার

১১ জুলাই ২০১৯, বৃহস্পতিবার, ৯:০৮ পূর্বাহ্ন

যুদ্ধাপরাধ মামলায় ফাঁসিরদণ্ডপ্রাপ্ত বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এটিএম আজহারুল ইসলামের খালাস চেয়ে করা আপিলের রায় যেকোনো দিন ঘোষণা করবেন আপিল বিভাগ। গতকাল উভয় পক্ষের শুনানি শেষে প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন চার বিচারপতির আপিল বিভাগের বেঞ্চ মামলাটি রায়ের জন্য অপেক্ষামান রাখেন। বেঞ্চের অপর সদস্যরা হলেন- বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী, বিচারপতি জিনাত আরা ও বিচারপতি নুরুজ্জামান। এ দিন রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম। আর এটিএম আজহারুল ইসলামের পক্ষে রাষ্ট্রপক্ষের যুক্তির জবাব দেন সিনিয়র আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন এবং তাকে সহযোগিতা করেন আইনজীবী শিশির মনির।
২০১৪ সালের ৩০শে ডিসেম্বর জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারী আজহারকে ফাঁসিতে ঝুঁলিয়ে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। প্রসিকিউশনের আনা নয় ধরনের ছয়টি মানবতাবিরোধী অপরাধের মধ্যে পাঁচটি এবং পরিকল্পনা-ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে সুপিরিয়র রেসপনসিবিলিটি (উর্ধ্বতন নেতৃত্বের দায়) প্রমাণিত হয় তার বিরুদ্ধে। এর মধ্যে মৃত্যুদণ্ডের রায় আসে রংপুর অঞ্চলে গণহত্যা চালিয়ে অন্তত ১৪০০ লোককে হত্যা এবং ১৪ জনকে খুনের অপরাধে। তবে ২০১৫ সালের ২৮শে জানুয়ারি ১১৩ যুক্তিতে এটিএম আজহারকে নির্দোষ দাবি করে খালাস চেয়ে আপিল বিভাগের সংশ্লিষ্ট শাখায় আপিল দাখিল করেন। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে আসা এটি দশম মামলা, যা রায়ের পর্যায়ে এল। শুনানিতে খন্দকার মাহবুব হোসেন বলেন, রাষ্ট্রপক্ষ বলেছে দিল্লি চুক্তির মাধ্যমে ১৯৫ জন চিহ্নিত যুদ্ধাপরাধীকে পাকিস্তান বিচার করবে এই শর্তে তাদের ছেড়ে দেয়া হয়। এটা সঠিক নয়, বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও ভারতের মধ্যে যে দিল্লি চুক্তি হয় যেখানে স্পষ্টভাবে ক্ষমা করা হয়েছে বলা হয়। সেখানে বিচারের কোনো প্রভিশন রাখা হয়নি।
শুনানিতে তিনি বলেন, চিহ্নিত ১৯৫ পাকিস্তানী যুদ্ধাপরাধীকে ছেড়ে দিয়ে ৪৩ বছর পর মানবতাবিরোধী অপরাধের নাম দিয়ে আপিলকারীর যে বিচার করা হচ্ছে সেটা অনৈতিক ও রাজনৈতিক প্রতিহিংসা প্রণোদিত।
তিনি বলেন, এটিএম আজহার এলাকায় ২০১০ সাল পর্যন্ত জামাতের একজন নেতৃস্থানীয় নেতা হিসেবে প্রকাশ পেয়েছেন। তার পূর্বে মামলার ঘটনা দূরের কথা তার বিরেুদ্ধে কোনো অভিযোগ কখনো উত্থাপন করা হয়নি। এ মামলায় সরকার পরিকল্পিতভাবে সাক্ষীদের সেফহোমে রেখে আপিলকারীর বিরুদ্ধে অবাস্তব সাক্ষ্য দিয়েছে। বিশেষ করে তার এলাকায় তৎকালীন সময়ে জামায়াত ও মুসলিম লীগের নেতা ছিলেন এবং তারা নির্বাচনে প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করেছেন। তাদের সবাইকে বাদ দিয়ে আজহার সাহেবকে আসামী করা হয়েছে। এর স্বপক্ষে ১৩ বছরের বালকসহ অবাস্তব সাক্ষী প্রমাণ দেয়া হয়েছে। এ বিষয়ে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম সাংবাদিকদের বলেন, আমি শুনানিতে বলেছি ট্রাইব্যুনাল বিচার-বিশ্লেষণ করেই মৃত্যুদণ্ডের রায় দিয়েছিলেন। তাই ট্রাইব্যুনালের সে সাজায় হস্তক্ষেপের কোনো কারণ নেই। আমি আশা করি ট্রাইব্যুনালের দেয়া মৃত্যুদণ্ডের রায়টিই আপিল বিভাগ বহাল রাখবেন। তিনি আরো বলেন, শুনানি শেষে এটিএম আজহারুল ইসলামের আপিলটি প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন আপিল বেঞ্চ ভবিষ্যতে রায়ের জন্য রেখেছেন।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status