বিনোদন

এক গানেই বদলে যাচ্ছে ‘গলি বয়’-এর জীবন

কামরুজ্জামান মিলু

১০ জুলাই ২০১৯, বুধবার, ৭:২০ পূর্বাহ্ন

গেল ক’দিন ধরে সোশ্যাল মিডিয়ায় আট বছরের এক ছেলের একটি হিপহপ গানের ভিডিও ব্যাপকভাবে ভাইরাল। গানের কয়েকটি লাইন হচ্ছে- ‘হে আমি রানা/কামরাঙ্গীরচর রসুলপুর/ আট নম্বর গলি/ মনের কথা বলি/ আমি গলি বয়/ আমার নাম হলো রানা..’। গানটি শিশু, কিশোরসহ বিভিন্ন বয়সীদের দারুণভাবে মুগ্ধ করেছে। এটি গেয়েছে ঢাকার কামরাঙ্গীরচরের রসুলপুরের ৮ নং গলিতে থাকা রানা ওরফে মৃধা। তার গাওয়া গান ‘গলি বয়’-এর জন্য সবাই এখন তাকে ‘গলি বয়’ রানা নামেই চেনে। ঢাকা বিশ্ব্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসেও রানা এখন পরিচিত এক মুখ। গেল সোমবার কামরাঙ্গীরচরের কাছাকাছি আজিমপুরের একটি জায়গায় রানার সঙ্গে সাক্ষাৎ হয় এ প্রতিবেদকের। তার সঙ্গে আলাপের শুরুতেই জানা যায়, গত রোজার মাসে তাকে খুঁজে বের করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আরবি বিভাগের দুই শিক্ষার্থী মাহমুদ হাসান তাবিব এবং রায়হান। এ প্রসঙ্গে মাহমুদ হাসান তাবিব বলেন, আমি নিজেও চার-পাঁচবছর ধরে মিউজিক করি। হিপহপ গানের প্র্যাকটিস করতাম। রানার গান শুনেই মনে হয়েছিল তাকে দিয়ে হবে। আমি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস থেকে তাকে গত রমজানে বাসায় নিয়ে আসি। গান লেখার পর তাকে নিয়ে প্র্যাকটিস করার একদিনের মাথায় সে গানটি মুখস্থ করে ভয়েস দেয়। আমার বাসাতেই মিউজিক সম্পাদনার ছোট একটি প্যানেল আছে। মূলত সেখান থেকেই রানার গাওয়া ‘গলি বয়’ গানটি রেকর্ড করে প্রথমে সোশ্যাল মিডিয়ায় এবং পরে ইউটিউবে প্রকাশ করা হয়। গানের ভিডিওতে ডিওপি হিসেবে ছিল আমার বন্ধু রায়হান। তাবিব আরো বলেন, এ গানটি আমার লেখা এবং মিউজিকের পাশাপাশি হিপহপ করেছি আমি এবং রানা। গানটি ইউটিউবে অল্প সময়ে ঝড় তোলে। নিজের সম্পর্কে ‘গলি বয়’ রানার ভাষ্য, আমি লেখাপড়া করিনি। বাবা সোহরাব মৃধা ঢাকার বাইরে থাকেন। মা সিতারা বেগমের কাছে থাকি আমি। মা বিভিন্ন বাসায় কাজ করেন। আর আমরা তিন ভাই দুই বোন। আমি ভাইদের মধ্যে সবার ছোট। অভাবের তাড়নায় রানা জীবিকার তাগিদে টিএসসিতে ফুল বিক্রিসহ বিভিন্ন কাজ করতো। আর যেন তাকে এসব কাজ করতে না হয় সেজন্য মাহমুদ হাসান তাবিব রানাকে পড়াশুনা করানোর জন্য উদ্যোগী হয়েছেন। এছাড়া রানাকে দিয়ে তিনি নিয়মিত গান করিয়ে যাবেন বলেও জানান। তিনি বলেন, আমি শিগগিরই তার দ্বিতীয় গান ‘গলি বয় টু’ নিয়ে আমার নামের ইউটিউব চ্যানেলে হাজির হবো। এরইমধ্যে নতুন এ গানের কাজ চলছে। তাবিবের দেয়া এসব তথ্য থেকেই বোঝা যাচ্ছে এক গানেই বদলে যাচ্ছে কামরাঙ্গীরচরের দরিদ্র শিশু রানার জীবন। সে সঙ্গে গানেও তৈরি হতে যাচ্ছে তার ক্যারিয়ার। সবশেষে রানা বলে, আমি ভাবিনি এত অল্প সময়ে ফেমাস হবো। এক গান দিয়ে এত ভালোবাসা পাবো। আমি লেখাপড়া করতে চাই। গান করতে চাই এবং অন্য সবার মতো এগিয়ে যেতে চাই।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status