দেশ বিদেশ
মালয়েশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে রোহিঙ্গারা ‘আমরা নিজ দেশে ফিরতে চাই’
স্টাফ রিপোর্টার, উখিয়া থেকে
৮ জুলাই ২০১৯, সোমবার, ৯:২৬ পূর্বাহ্ন
রোহিঙ্গাদের নাগরিত্ব ও মানবাধিকার নিশ্চিত করতে হবে। এ ব্যাপারে আসিয়ানভুক্ত দেশসমূহ মিয়ানমারের সঙ্গে কূটনৈতিক তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন মালয়েশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সাইফুদ্দিন আবদুল্লাহ। রোববার দুপুর আড়াইটায় তিনি বেশ কয়েকটি রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন শেষে উখিয়ার জামতলী ক্যাম্পে এসে এসব কথা বলেন। জামতলী ক্যাম্পে মালয়েশিয়ার একটি হাসপাতাল পরিদর্শন শেষে স্থানীয় রোহিঙ্গা মৌলভী ছৈয়দ উল্লাহসহ ১০-১২ জনের সঙ্গে কথা বলেন সাইফুদ্দিন আবদুল্লাহ। রোহিঙ্গারা পররাষ্টমন্ত্রীকে বলেন, বাংলাদেশে আমরা থাকতে আসিনি, এভাবে ঝুপড়ি ঘরে আমরা থাকতে চাই না। রোহিঙ্গারা এ ব্যাপারে মালয়েশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সহায়তা কামনা করে বলেন, বাংলাদেশ সরকার ও স্থানীয় জনগণ আমাদের যে সহায়তা করেছে তা ভুলার নয়। এনজিওগুলো আসার আগে স্থানীয় জনগণ আমাদের না খেয়ে খাইয়েছে। আমরা থাকার ফলে বাংলাদেশের ক্ষতি হচ্ছে, তাই আমরা নিজ দেশে ফেরত যেতে চাই। জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী রোহিঙ্গাদের বলেন, আমরা চেষ্টা করছি রোহিঙ্গারা যাতে মিয়ানমারে ফিরে যেতে পারে। এ ব্যাপারে সর্বাত্বক চেষ্টা করা হচ্ছে মালয়েশিয়া সরকারের পক্ষ থেকে। তাছাড়া ‘রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে আসিয়ানভুক্ত দেশগুলোও খুবই উদ্বিগ্ন। বাংলাদেশের কক্সবাজারে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের অবশ্যই মিয়ানমারকে ফিরিয়ে নিতে হবে। তবে তাদের প্রত্যাবাসন হতে হবে অবশ্যই নিরাপদ এবং স্বেচ্ছামূলক। রাখাইনে তাদের স্বাধীনভাবে চলাচলের সুযোগ দিতে হবে।’ এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে মৌলভী ছৈয়দ উল্লাহ বলেন, আমাদের কথা তিনি গুরুত্বসহকারে শুনেছেন এবং যথাসম্ভব মিয়ানমার সরকারের সঙ্গে কথা বলে দ্রুত নিরাপদ প্রত্যাবাসনের আশ্বাস দিয়েছেন। রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকে ফেরার পথে বিকাল ৩টার দিকে উখিয়া ডিগ্রি কলেজ সংলগ্ন মালয়েশিয়া ফিল্ড হাসপাতাল পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মালয়েশিয়ান পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের ওপর গণহত্যা, জাতিগত নিধনসহ রোহিঙ্গা মুসলমানরা ভয়াবহ নির্যাতনের শিকার হয়েছে। যে কারণে ১০ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা সীমান্ত পার হয়ে বাংলাদেশের এই কক্সবাজার অঞ্চলে আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়েছে। শুধু তাই নয়, একই কারণে মিয়ানমারের রাখাইনেও দেড় লাখ রোহিঙ্গা বাস্তুচ্যুত হয়ে নিজ দেশেই ক্যাম্প জীবনযাপন করছে।’ উল্লেখ্য, আসিয়ান জোটে মালয়েশিয়া সুদৃঢ় অবস্থানে রয়েছে। ওই জোটের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সদস্য হচ্ছে মিয়ানমার, যেখানে রোহিঙ্গা সংকটের সৃষ্টি এবং সমাধানও দেশটির হাতেই বলে মনে করে আঞ্চলিক এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়।