বিশ্বজমিন
মানবজমিনকে একান্ত সাক্ষাৎকারে সুদর্শন
চতুর্থ গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস গড়তে যাচ্ছি
তারিক চয়ন
৭ জুলাই ২০১৯, রবিবার, ১২:০৯ অপরাহ্ন
বাংলাদেশের চট্টগ্রামের সন্তান পণ্ডিত সুদর্শন দাশ। বিভিন্ন বাদ্যযন্ত্র বাজিয়ে ইতিমধ্যে তিনটি ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস গড়েছেন এই যুক্তরাজ্য প্রবাসী। এবার চতুর্থ রেকর্ড গড়ার চ্যালেঞ্জ নেবেন সোমবার স্থানীয় সময় বিকেল ৫ টায় পূর্ব লন্ডনের লন্ডন এন্টারপ্রাইজ একাডেমি মিলনায়তনে, আনুষ্ঠানিকভাবে ড্রামসেট বাজানোর মাধ্যমে। টানা কমপক্ষে ১৩৪ ঘন্টা ৫ মিনিটের বেশি বাজাতে পারলেই চতুর্থবারের মতো গিনেস বুকে নাম উঠবে তার। কিন্তু টানা ১৪০ ঘন্টা বাজিয়ে তবেই থামতে চান সুদর্শন। এর আগে তিনি তার প্রথম রেকর্ড ‘লংগেস্ট তবলা ম্যারাথন’-এ বাজিয়েছেন টানা ৫৫৭ ঘন্টা ১১ মিনিট। দ্বিতীয় রেকর্ড ‘লংগেস্ট ঢোল ম্যারাথন’ করতে বাজান টানা ২৭ ঘন্টা এবং তৃতীয় রেকর্ড ‘লংগেস্ট ইনডিভিজুয়্যাল ড্রামরোল’ এর জন্য বাজান টানা ১৪ ঘন্টা। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন তারিক চয়ন।
* আপনি তো ব্যারিস্টার? কিন্তু নামের শুরুতে তা ব্যবহার করতে দেখি না কেন? আইন ব্যবসা না করে বা বড় লোভনীয় চাকরি ছেড়ে তবলা নিয়ে পড়ে থাকার কারণটাই বা কি?
- হ্যাঁ, আমি একজন ব্যারিস্টার। কিন্তু আমি যে দেশে থাকি সেটি প্রথম সারির একটি উন্নত রাষ্ট্র। তাই প্রতিটি কাজের ক্ষেত্রে আমাদের কিছু সুনির্দিষ্ট নিয়মাবলি মেনে চলতে হয়। আর ব্যারিস্টার বিষয়টিতো আইনি ব্যাপারস্যাপার। তাই আমাদের পেশাগত কিছু গোপনীয়তা কঠোরভাবে রক্ষা করতে হয়। ব্যারিস্টার শব্দটি আমি অবশ্য চাইলে যোগ করতে পারি। কিন্তু তা প্রচারে আমি ইচ্ছুক নই। আমি নিজেকে আইনজীবীর পাশাপাশি একজন মিউজিশিয়ানও মনে করি। এ দুটোই আমার পেশা। তাই কোনটিই আমার কাছে ছোট নয়। যেহেতু শৈশব থেকে আমি তবলার তালিম নিয়েছি, তাই তার প্রতি আমার ভালোলাগা এবং ভালোবাসাটা জন্মগত। তবলার সাধনা আমার মনের খোরাকও বলতে পারেন। বর্তমানে আমি দুটো পেশাকেই সাফল্যের সাথে চালিয়ে নিয়ে যাচ্ছি আপনাদের আশীর্বাদে।
* কিন্তু গিনেস রেকর্ডসে-এর চ্যালেঞ্জ নেবার আগ্রহ কেন জাগলো?
- ব্যক্তিগভাবে আমি চ্যালেঞ্জ নিতে ভালোবাসি। আর চ্যালেঞ্জ না নিলে কি করে বুঝবো আমি কি করতে সক্ষম, কি নই? ‘গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস তো পুরো বিশ্বকে চ্যালেঞ্জ জানাবার একটা প্ল্যাটফর্ম। একজন বাংলাদেশী হিসেবে আমি বিশ্বকে দেখাতে ও বোঝাতে চাই আমরাও চ্যালেঞ্জে জয়ী হতে পারি।
* আপনি একজন বাংলাদেশী হয়ে গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস এ হ্যাট্রিক করেছেন...
- ঠিক। এবার আমি চতুর্থটি সম্পন্ন করতে যাচ্ছি। আমার জানামতে, ব্যক্তিগতভাবে আমিই পরপর ৪টি রেকর্ডস-এর অধকারী হতে যাচ্ছি।
* নার্ভাস লাগছে?
- না। কিন্তু এবার আমাকে একসাথে হাত এবং পা দুটোই চালাতে হবে টানা ৬ দিন বা ১৪০ ঘন্টা। তাই কিছুটা দুশ্চিন্তা তো আছেই।
* গত বছর রোহিঙ্গাদের সাহায্যার্থে বাংলাদেশে এসেছিলেন বলে শুনেছি...
- হ্যাঁ। ইউনিসেফ-এর প্রতিনিধি হয়ে আমি গত বছর আমার টিম নিয়ে কক্সবাজারের উখিয়ার ক্যাম্প পরিদর্শন করি। সেখানে আমার তৃতীয় রেকর্ডস-এর শর্তানুযায়ী প্রাপ্ত অনুদান রোহিঙ্গা শিশুদের মাঝে বিতরণ করা হয়। যার মধ্যে ছিল ব্যাগ, খাতা, কলম, পেন্সিলসহ আরও নানান শিক্ষাসামগ্রী।
* এবার কি সেরকম কোন ভাবনা রয়েছে?
-এবারের চ্যালেঞ্জটিও উৎসর্গ করেছি শরণার্থী শিশুদের। অনাথ শিশুদের জন্য ৩ হাজার পাউন্ড (প্রায় ৩ লাখ টাকা) সংগ্রহের লক্ষ্য নির্ধারণ করেছি। সংগৃহীত ওই অর্থ জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা ইউনিসেফকে দেয়া হবে। যেকেউ চাইলে অনলাইনে এই ঠিকানায় <justgiving.com/crowdfunding/panditorphans?utm_source> অনুদান দিতে পারবেন।
* এই চ্যালেঞ্জটি সরাসরি উপভোগ করার কোন সুযোগ আছে?
- অনুষ্ঠানটি সবার জন্য উন্মুক্ত থাকবে। বাজানোকালে যেকেউ চাইলে ভেন্যুতে গিয়ে সেটি উপভোগ করতে পারবেন। তাছাড়া সোমবার বাজানো শুরুর আগে একটি উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যুক্তরাজ্যে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার সাইদা মুনা তাসনীম এবং টাওয়ার হ্যামলেটস কাউন্সিলের স্পিকার ভিক্টোরিয়া ওভেজসহ বাংলাদেশী কমিউনিটির বিশিষ্টজনেরা উপস্থিত থাকার কথা রয়েছে।
* বাংলাদেশের জনগোষ্ঠীর বড় একটি অংশ তরুণ। তরুণ বা বাচ্চাদের জন্য আপনার কোন উদ্যোগ নেবার ইচ্ছে আছে কি?
- ইতোমধ্যে আমাদের একটি সংযুক্ত শাখা (লন্ডনের তবলা এন্ড ঢোল একাডেমির) চট্টগ্রামে খোলা হয়েছে। এটা নিয়ে কাজ চলছে। ছাত্রছাত্রীদের ভর্তিও শুরু হয়ে গিয়েছে। আর জাতীয়ভাবে অবশ্যই এটাকে তুলে ধরতে চাই। বিভিন্ন দেশে আমাদের যে ৬টি শাখা রয়েছে, তাদের মধ্যে বাংলাদেশের শাখাটি নিয়ে আরো বৃহৎ পরিসরে কাজ করতে চাই। যেখানে দেশীয় বাদ্যযন্ত্রের পাশাপাশি বিদেশী বাদ্যযন্ত্রেও শিক্ষার্থীরা তালিম নিতে পারবে।
*চতুর্থ ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস-এ অংশ নেবার আগে দেশের মানুষের উদ্দেশ্যে কিছু বলার আছে?
- অবশ্যই। জন্মসূত্রে একজন বাংলাদেশী হিসেবে আমি আমার দেশকে খুবই মিস করি। দেশবাসীর উদ্দেশ্যে একটাই বার্তা, ভালো কাজের মাধ্যমে দেশকে বহির্বিশ্বের সামনে তুলে ধরুন। তাহলেই দেশ এগিয়ে যাবে। আর অবশ্যই শিল্প ও শিল্পীকে মনে ধারণ করুন, তাতে আত্মিক শান্তি মিলবে। সবাই সম্প্রীতি নিয়ে বসবাস করুক এটাই কামনা। মানবজমিন-এর মাধ্যমে দেশবাসীর কাছে চতুর্থ ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস-এ বিজয়ী হতে আশীর্বাদ প্রার্থনা করছি।
* আপনি তো ব্যারিস্টার? কিন্তু নামের শুরুতে তা ব্যবহার করতে দেখি না কেন? আইন ব্যবসা না করে বা বড় লোভনীয় চাকরি ছেড়ে তবলা নিয়ে পড়ে থাকার কারণটাই বা কি?
- হ্যাঁ, আমি একজন ব্যারিস্টার। কিন্তু আমি যে দেশে থাকি সেটি প্রথম সারির একটি উন্নত রাষ্ট্র। তাই প্রতিটি কাজের ক্ষেত্রে আমাদের কিছু সুনির্দিষ্ট নিয়মাবলি মেনে চলতে হয়। আর ব্যারিস্টার বিষয়টিতো আইনি ব্যাপারস্যাপার। তাই আমাদের পেশাগত কিছু গোপনীয়তা কঠোরভাবে রক্ষা করতে হয়। ব্যারিস্টার শব্দটি আমি অবশ্য চাইলে যোগ করতে পারি। কিন্তু তা প্রচারে আমি ইচ্ছুক নই। আমি নিজেকে আইনজীবীর পাশাপাশি একজন মিউজিশিয়ানও মনে করি। এ দুটোই আমার পেশা। তাই কোনটিই আমার কাছে ছোট নয়। যেহেতু শৈশব থেকে আমি তবলার তালিম নিয়েছি, তাই তার প্রতি আমার ভালোলাগা এবং ভালোবাসাটা জন্মগত। তবলার সাধনা আমার মনের খোরাকও বলতে পারেন। বর্তমানে আমি দুটো পেশাকেই সাফল্যের সাথে চালিয়ে নিয়ে যাচ্ছি আপনাদের আশীর্বাদে।
* কিন্তু গিনেস রেকর্ডসে-এর চ্যালেঞ্জ নেবার আগ্রহ কেন জাগলো?
- ব্যক্তিগভাবে আমি চ্যালেঞ্জ নিতে ভালোবাসি। আর চ্যালেঞ্জ না নিলে কি করে বুঝবো আমি কি করতে সক্ষম, কি নই? ‘গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস তো পুরো বিশ্বকে চ্যালেঞ্জ জানাবার একটা প্ল্যাটফর্ম। একজন বাংলাদেশী হিসেবে আমি বিশ্বকে দেখাতে ও বোঝাতে চাই আমরাও চ্যালেঞ্জে জয়ী হতে পারি।
* আপনি একজন বাংলাদেশী হয়ে গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস এ হ্যাট্রিক করেছেন...
- ঠিক। এবার আমি চতুর্থটি সম্পন্ন করতে যাচ্ছি। আমার জানামতে, ব্যক্তিগতভাবে আমিই পরপর ৪টি রেকর্ডস-এর অধকারী হতে যাচ্ছি।
* নার্ভাস লাগছে?
- না। কিন্তু এবার আমাকে একসাথে হাত এবং পা দুটোই চালাতে হবে টানা ৬ দিন বা ১৪০ ঘন্টা। তাই কিছুটা দুশ্চিন্তা তো আছেই।
* গত বছর রোহিঙ্গাদের সাহায্যার্থে বাংলাদেশে এসেছিলেন বলে শুনেছি...
- হ্যাঁ। ইউনিসেফ-এর প্রতিনিধি হয়ে আমি গত বছর আমার টিম নিয়ে কক্সবাজারের উখিয়ার ক্যাম্প পরিদর্শন করি। সেখানে আমার তৃতীয় রেকর্ডস-এর শর্তানুযায়ী প্রাপ্ত অনুদান রোহিঙ্গা শিশুদের মাঝে বিতরণ করা হয়। যার মধ্যে ছিল ব্যাগ, খাতা, কলম, পেন্সিলসহ আরও নানান শিক্ষাসামগ্রী।
* এবার কি সেরকম কোন ভাবনা রয়েছে?
-এবারের চ্যালেঞ্জটিও উৎসর্গ করেছি শরণার্থী শিশুদের। অনাথ শিশুদের জন্য ৩ হাজার পাউন্ড (প্রায় ৩ লাখ টাকা) সংগ্রহের লক্ষ্য নির্ধারণ করেছি। সংগৃহীত ওই অর্থ জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা ইউনিসেফকে দেয়া হবে। যেকেউ চাইলে অনলাইনে এই ঠিকানায় <justgiving.com/crowdfunding/panditorphans?utm_source> অনুদান দিতে পারবেন।
* এই চ্যালেঞ্জটি সরাসরি উপভোগ করার কোন সুযোগ আছে?
- অনুষ্ঠানটি সবার জন্য উন্মুক্ত থাকবে। বাজানোকালে যেকেউ চাইলে ভেন্যুতে গিয়ে সেটি উপভোগ করতে পারবেন। তাছাড়া সোমবার বাজানো শুরুর আগে একটি উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যুক্তরাজ্যে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার সাইদা মুনা তাসনীম এবং টাওয়ার হ্যামলেটস কাউন্সিলের স্পিকার ভিক্টোরিয়া ওভেজসহ বাংলাদেশী কমিউনিটির বিশিষ্টজনেরা উপস্থিত থাকার কথা রয়েছে।
* বাংলাদেশের জনগোষ্ঠীর বড় একটি অংশ তরুণ। তরুণ বা বাচ্চাদের জন্য আপনার কোন উদ্যোগ নেবার ইচ্ছে আছে কি?
- ইতোমধ্যে আমাদের একটি সংযুক্ত শাখা (লন্ডনের তবলা এন্ড ঢোল একাডেমির) চট্টগ্রামে খোলা হয়েছে। এটা নিয়ে কাজ চলছে। ছাত্রছাত্রীদের ভর্তিও শুরু হয়ে গিয়েছে। আর জাতীয়ভাবে অবশ্যই এটাকে তুলে ধরতে চাই। বিভিন্ন দেশে আমাদের যে ৬টি শাখা রয়েছে, তাদের মধ্যে বাংলাদেশের শাখাটি নিয়ে আরো বৃহৎ পরিসরে কাজ করতে চাই। যেখানে দেশীয় বাদ্যযন্ত্রের পাশাপাশি বিদেশী বাদ্যযন্ত্রেও শিক্ষার্থীরা তালিম নিতে পারবে।
*চতুর্থ ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস-এ অংশ নেবার আগে দেশের মানুষের উদ্দেশ্যে কিছু বলার আছে?
- অবশ্যই। জন্মসূত্রে একজন বাংলাদেশী হিসেবে আমি আমার দেশকে খুবই মিস করি। দেশবাসীর উদ্দেশ্যে একটাই বার্তা, ভালো কাজের মাধ্যমে দেশকে বহির্বিশ্বের সামনে তুলে ধরুন। তাহলেই দেশ এগিয়ে যাবে। আর অবশ্যই শিল্প ও শিল্পীকে মনে ধারণ করুন, তাতে আত্মিক শান্তি মিলবে। সবাই সম্প্রীতি নিয়ে বসবাস করুক এটাই কামনা। মানবজমিন-এর মাধ্যমে দেশবাসীর কাছে চতুর্থ ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস-এ বিজয়ী হতে আশীর্বাদ প্রার্থনা করছি।