প্রথম পাতা

সতর্ক টাইগাররা

ইশতিয়াক পারভেজ, সাউদাম্পটন থেকে

২৪ জুন ২০১৯, সোমবার, ৯:৪৯ পূর্বাহ্ন

রোজ বোল স্টেডিয়ামের উইকেটে সাপের মতো এঁকেবেঁকে ঘুরছে বল। মুজিব উর রহমান, মোহাম্মদ নবীদের বিপক্ষে বড় পরীক্ষা দিতে হয়েছে টিম ইন্ডিয়াকে। রোহিত শর্মার মতো ব্যাটসম্যান কিছু বুঝে উঠার আগেই সাজঘরে। প্রেস বক্সে ভারতের কলকাতার প্রবীণ সংবাদকর্মী হায়, হায় করে উঠলেন! বলেন, ‘কি হচ্ছে এসব! এবার মানটাই খোয়াবো বুঝি। বড় বড় দলের বিপক্ষে জিতে কী লাভ!’ পরক্ষণেই তিনি বাংলাদেশের এক সংবাদিককে বলেন, ‘তোরাও সাবধান হ বাপু।’ যদিও শেষ পর্যন্ত কঠিন লড়াইয়ে জিতেছে বিরাট কোহলির দল। কিন্তু আফগানরা তাদের যে কতটা কাঁপিয়ে দিয়েছে তা সবারই জানা। ক্রিকেটে হার-জিত আছেই। কিন্তু নবাগত আফগানিস্তানের বিপক্ষে হারলে সঙ্গে সম্মানটাও যে যাবে তা বলার অপেক্ষা রাখে না। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে যতটা না চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়েছিল মাশরাফি বিন মুর্তজার দল, তার চেয়ে বেশি কঠিন হবে আফগানরা। হারলে শুধু বিশ্বকাপ স্বপ্নই শেষ হবে না, দেশে ফিরতে হবে বড় লজ্জা নিয়ে। তবে এখন পর্যন্ত টাইগারা যেভাবে খেলছে তাতে জয় ছাড়া অন্য কোনো ভাবনা নেই কারো মনেই। প্রধান কোচ স্টিভ রোডসও উড়িয়ে দিতে চান চাপ। তিনি বলেন, ‘আসলে চাপ নিয়ে কী হবে। যতটা সম্ভব ফ্রি খেলা যায় ততোটাই আমাদের জন্য ভালো।’

বিশ্বকাপ মিশনে দেশ ছাড়ার আগে যে ক’টি দলের বিপক্ষে বাংলাদেশ জয়ের টার্গেট করেছিল তার মধ্যে আফগানিস্তানকে ধরা হয়েছিল সহজ প্রতিপক্ষ। এই বিশ্বকাপে এখন পর্যন্ত তারা কোনো ম্যাচে জয় পায়নি। কিন্তু দুই তিনটি ম্যাচে প্রতিপক্ষকে ঠিকই ভড়কে দিয়েছে। বিশেষ করে ভারতকে। সাউদাম্পটনের রোজ বোল স্টেডিয়ামে শক্তিশালী ব্যাটিং লাইনআপ নিয়েও ৫০ ওভারে ২২৪ রানের বেশি তুলতে পারেনি তারা। শেষ পর্যন্ত অভিজ্ঞতার জোরে ভারত জিতেছে ১১ রানে। অতীতে বাংলাদেশকেও এমন চ্যালেঞ্জে ফেলেছে আফগানরা। এ পর্যন্ত সদ্য টেস্ট মর্যাদা পাওয়া দলটির বিপক্ষে ৭ ওয়ানডের ৩টিতে হেরেছে বাংলাদেশ দল। সবচেয়ে বড় ক্ষত এখনো তাজা। গেল বছর দুবাইয়ে এশিয়া কাপে ফাইনালে খেললেও আফগানদের বিপক্ষে আছে লজ্জার হারের স্মৃতি। তাদের ৭ উইকেটে করা ২৫৮ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে মাশরাফির দল গুটিয়ে গিয়েছিল মাত্র ১১৯ রানে। দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৩২ রান করেছিল সাকিব আল হাসান। বিশ্বকাপ আসরে অবশ্য টাইগারদের বিপক্ষে জিততে পারেনি আফগানিস্তান। ২০১৫-তে অস্ট্রেলিয়ার ক্যানবেরায় আফগানরা ৫২ রানেই টাইগারদের দুই ওপেনারকে বিদায় করে দিয়েছিল। সেখান থেকে সাকিব ও মুশফিক মিলে দলকে রক্ষা করেন। শেষ পর্যন্ত ২৬৭ রান তুলে অলআউট হয় টাইগাররা। জবাবে ১৬২ রানে থেমে যায় আফগানিস্তান। চলতি আসরে এখন পর্যন্ত আফগানরা নিজেদের তেমন মেলে ধরার সুযোগ না পেলেও রোজ বোলে এসে জ্বলে উঠেছে। আর ভারতের বিপক্ষে যে উইকেটে খেলেছিল, সে উইকেটেই বাংলাদেশের বিপক্ষে খেলবে তারা। অন্যদিকে রোজ বোলে এর আগে বাংলাদেশের বর্তমান দলের কোনো ক্রিকেটারই খেলেননি। যে কারণে মাঠ সম্পর্কে তাদের ধারণাও কম। সব মিলিয়ে কিছুটা হলেও বাংলাদেশের চেয়ে এগিয়ে গুলবাদিনের দল।

আফগানদের বিপক্ষে ম্যাচকে সামনে রেখে বাংলাদেশ দল অনুশীলনে কঠোর পরিশ্রম করেছে। নেটে ব্যাট হাতে যেমন ঘাম ঝরিয়েছেন তামিম-মুশফিকরা, তেমনি বোলারও নিজেদের সর্বোচ্চটা দিয়েছেন। আফগানদের বিপক্ষে একাদশ কেমন হবে সেটিও একটা বড় ব্যাপার। সাইফুদ্দিনের চোট তাই তার খেলা সম্ভাবনা খুব কম। যদিও কোচ জানিয়েছেন, এই ম্যাচে খেলবেন সাইফ। আর মোসাদ্দেকের ফেরা অনেকটাই নিশ্চিত। তারা দুজন ফিরলে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে এই বিশ্বকাপে প্রথমবার একাদশে জায়গা পাওয়া রুবেল হোসেন ও সাব্বির রহমানের জায়গা হবে ফের সাইড বেঞ্চে। আফগানদের বিপক্ষে জিততে হলে যেমন বাংলাদেশের ব্যাটসম্যান ও বোলারদের দায়িত্ব নিয়ে খেলতে হবে আজ। দায়িত্ব নিতে হবে তেমনি মাঠের ফিল্ডারদেরও। নয়তো বিশ্বকাপের সেমিফাইনাল স্বপ্ন শেষ হয়ে যাবে এখানেই!
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status