প্রথম পাতা

অস্ট্রেলিয়ার রানের পাহাড়

ইশতিয়াক পারভেজ, নটিংহ্যাম থেকে

২১ জুন ২০১৯, শুক্রবার, ৯:৫৮ পূর্বাহ্ন

অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে সৌম্যের ক্যারিয়ার সেরা বোলিং

বাংলাদেশ-অস্ট্রেলিয়ার খেলা দেখতে দেখতে অনেক প্রবীণ সংবাদকর্মীর চোখে ভেসে উঠলো ২১শে জুন ২০০৫! ১৫ বছর আগে কী ঘটেছিল সেদিন? ওহ! আর মাত্র একটি দিন পরের ঘটনা সেটি। সেদিনও বাংলাদেশ দল চাপা পড়েছিল রানের পাহাড়ে। ইংলিশরা টাইগারদের বিপক্ষে মাত্র ৪ উইকেট হারিয়ে করেছিল ৩৯১ রান। ন্যাটওয়েস্ট সিরিজে সেদিনও বৃষ্টি হয়েছিল। গতকালও হলো, সেই সঙ্গে আরো একবার এই স্টেডিয়ামে রানের পাহাড়ে চাপা পড়লো বাংলাদেশ দল। ইংল্যান্ড অ্যান্ড ওয়েলস বিশ্বকাপে মাশরাফি বিন মুর্তজার দল নিজেদের ৬ষ্ঠ ম্যাচ খেলতে নামে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে। টসে জিতে টাইগারদের ফিল্ডিংয়ে পাঠায় অজি অধিনায়ক অ্যারন ফিঞ্চ। এক ওভার বাকি থাকতেই শুরু হলো বৃষ্টি।

তখন অস্ট্রেলিয়ার স্কোর বোর্ডে ৩৬৮ রান ৫ উইকেট হারিয়ে। কিন্তু স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলার সুযোগ কই। বৃষ্টি থেমে গেলো, ইংলিশদের রেকর্ড ভাঙতে তখনও ৬টি বল বাকি। না, শেষ পর্যন্ত ৩৮১ তেই থামলো তারা। ব্যক্তিগত ১০ রানে জীবন পাওয়া ডেভিড ওয়ার্নার ও ওসমান খাজার ব্যাটে পিষ্ট হয়েছে বাংলাদেশের বোলাররা। এদিন অবশ্য ব্যাতিক্রম ছিলেন সৌম্য সরকার। বল হাতে পেয়ে ৫৮ রান খরচ করে নিয়েছেন দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৩ উইকেট।
বাংলাদেশ দল ইংল্যান্ডে যত মাঠেই খেলতে গেছে পেয়েছে প্রাণভরা অভ্যর্থনা। মাঠের ১১ জনের বিপরীতে গ্যালারিতে লড়ছে হাজার হাজার বাঘ। গতকালও তার ব্যতিক্রম ছিল না। এক মুহূর্তের জন্যও থামেনি ‘বাংলাদেশ’ ‘বাংলাদেশ’ স্লোগান। ট্রেন্ট ব্রিজ স্টেডিয়ামে শুধু ইংল্যান্ড থেকেই নয়, বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ছুটে এসেছেন ভক্ত সমর্থকরা। টসে জিতে অস্ট্রেলিয়া ব্যাট করতে নামতেই তাদের মনে ভয়টাও দিয়েছে উঁকিঝুঁকি! তবে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সবশেষ জয় দিয়েছে মনে সাহসও।

দুই পাশ থেকে দারুণ বোলিং আক্রমণেই শুরু করে বাংলাদেশ দল। প্রথম ১০ ওভারে মাত্র ৬০ রানই তুলতে পেরেছিল দুর্দান্ত অস্ট্রেলিয়া। তবে সেখানে বাংলাদেশের জন্য আফসোস হয়ে থাকবে ওয়ার্নারের রান আউটের সুযোগটা। ১৮ বলে ১০ রান করা সেই ওয়ার্নার শেষ পর্যন্ত থামলেন ১৪৭ বল খেলে ব্যক্তিগত ১৬৬ রানে। দায়টা নিতে হবে ৬ষ্ঠ ম্যাচে এসে একাদশে সুযোগ পাওয়া সাব্বির রহমানকে। ৫ম ওভারে মাশরাফির বলে ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্টে ক্যাচ দিয়েছিলেন অজি এই ওপেনার। কিন্ত সাব্বির তা লুফে নিতে ব্যর্থ হন । যার খেসারত বেশ ভালভাবে দিতে হয়েছে ৪৫তম ওভার পর্যন্ত।

এদিন অবশ্য দলকে কোন নিয়মিত বোলার সফলতা এনে দিতে পারেননি। তাই বিশ্বকাপের আসরে প্রথমবারের মতো বল হাতে তুলে দেয়া হয়েছিল পেস অলরাউন্ডার সৌম্য সরকারের হাতে। প্রথম সাফল্য আসে তার হাত ধরেই। ৫৩ রান করা অজি অধিনায়ক ফিঞ্চকে ফিরিয়ে ভাঙেন ১২১ রানের ওপেনিং জুটি। তবে ওয়ার্নারতো প্রাচীর হয়ে ছিলেনই। তবে পার্ট টাইম বোলার সৌম্যই শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশের মূল বোলার হয়ে ওঠেন। রুবেল হোসেনকে একাদশে ফেরানোর জোর দাবি ছিল। কিন্তু তরুণ সাইফুদ্দিন এমন দুর্দান্ত ছিলেন যে তাকে সরিয়ে জায়গা দেয়া ছিল কঠিন। কিন্ত সাইফুদ্দিনের ইনজুরির কারণে শেষ পর্যন্ত রুবেলের জায়গা হয় একাদশে। কিন্তু দলের জন্য বড় কোনো অবদান রাখতে পারেননি তিনি। ওয়ার্নারকে থামান সৌম্যই। অবশ্য ততক্ষণে অস্ট্রেলিয়ার স্কোর বোর্ড ছুঁয়েছে ৩১০ রান। এরপর ৪৭তম ওভারে সৌম্যের ইয়র্কার বল কোনোমতে খেলেই দৌড় দিয়েছিলেন গ্লেন ম্যাক্সওয়েল। সে বল অনেক সময় নিয়ে বুঝে-শুনে থ্রো করে স্টাম্প ভাঙেন রুবেল। অবশ্য এর আগের ওভারেই রুবেলের বলে ২৫ রান নিয়ে এই বিশ্বকাপের সবচেয়ে খরচে ওভারটাই উপহার দিয়েছেন ম্যাক্সওয়েল।

তিনি ১০ বলে ৩২ রানে আউট হন। এরপর উসমান খাঁজাও সেঞ্চুরির দিকে হাঁটছিলেন। তাকে ৮৯ রানে থামান সৌম্য। এদিন এক উইকেট পাওয়া মোস্তাফিজ অবশ্য স্মিথকে দাঁড়াতে দেননি। মাত্র ১ রানেই বিদায় করেন তাকে। শেষ পর্যন্ত রেকর্ড না হলেও ৫ উইকেট হারিয়ে ৩৮২ রানের বড় লক্ষ্য ছুড়ে দিয়েই মাঠ ছাড়ে অজিরা।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status