প্রথম পাতা

সামনে অস্ট্রেলিয়া

আত্মবিশ্বাসী বাংলাদেশ

ইশতিয়াক পারভেজ, নটিংহ্যাম থেকে

২০ জুন ২০১৯, বৃহস্পতিবার, ৯:৫৪ পূর্বাহ্ন

নটিংহ্যাম শহরের মধ্যেই দাঁড়িয়ে ট্রেন্ট ব্রিজ কাউন্টি গ্রাউন্ড স্টেডিয়াম। এখানেও ক্রিকেটের সঙ্গে সম্পর্ক সেই ১৮৩০ সাল থেকে। তবে ঐতিহ্যের ধারক ইংলিশদের এই স্টেডিয়াম পেয়েছে সর্বোচ্চ আধুনিকতা। ইংল্যান্ডের তৃতীয় দীর্ঘতম নদী ট্রেন্টের নামে এই মাঠের সঙ্গে বাংলাদেশ দলের পরিচয় সেই ২০০৫ সাল থেকে। যদিও সেবার ন্যাটওয়েস্ট সিরিজে ইংলিশদের বিপক্ষে  কোনো সুখস্মৃতি ছিল না এই মাঠে। শুধু আশরাফুল খেলেছিলেন এবং চিনিয়েছিলেন বাংলাদেশকে।

তার সেই ৯৪ রানের ইনিংসটি এখনো এই মাঠের সুখস্মৃতি বলার অপেক্ষা রাখে না। ট্রেন্টব্রিজের আগে বাংলাদেশ কার্ডিফের সোফিয়া গার্ডেনে প্রথমবারের মত অস্ট্রেলিয়াকে হারানোর ইতিহাস রচনা করে। সেই জয়ের ইতিহাসে এখনো  লেখা সেঞ্চুরি হাঁকানো আশরাফুলের নাম। এরপর ২০১০-এও খেলেছিল বাংলাদেশ। কিন্তু কোন সুখ স্মৃতি নেই এই স্টেডিয়ামে। এমনকি এরপর অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গেও বাংলাদেশ আর ওয়ানডেতে জিততে পারেনি।

হয়তো সেই কারণেই সবার প্রার্থনা এবার  সেই কার্ডিফ ফিরে আসুক ট্রেন্ট ব্রিজে। অস্ট্রেলিয়ার এক সংবাদকর্মীর এমন প্রশ্নের জবাবে মাশরাফি অবশ্য নতুন দিনের অপেক্ষার কথাই বলেছেন। তিনি বলেন, ‘আমারও সেই দিনের কথা মনে আছে। এটি আমাদের জন্য দারুণ এক স্মৃতি। যদিও আমি জানি পুরানো দিনের কথা চিন্তা করে লাভ নেই। কাল (আজ) নতুন একটি দিন তাই নতুনভাবে সব কিছু শুরু করতে চাই।’

নটিংহ্যামশায়ারের ওয়েস্ট ব্রিজফোর্ড এলাকায় ট্রেন্ট ব্রিজ স্টেডিয়াম অবস্থিত। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের পাশাপাশি নটিংহ্যামশায়ারের নিজস্ব খেলা ও ২০০৯ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের দুটি ম্যাচ এখানে অনুষ্ঠিত হয়। সেই বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে দক্ষিণ আফ্রিকা এবং পাকিস্তান এই মাঠে মুখোমুখি হয়। ১৮৩০ সালে সর্বপ্রথম ট্রেন্ট ব্রিজকে ক্রিকেট মাঠ হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছিল। ১৮৯৯ সালে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ইংল্যান্ডের টেস্ট খেলাটি ট্রেন্ট ব্রিজ স্টেডিয়ামের প্রথম ম্যাচ। তবে সম্প্রতি ওয়ানডেতে এখানে হয়েছে দারুণ সব রেকর্ড।  গেল বছর এই মাঠেই অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ইংল্যান্ড ওয়ানডেতে ইতিহাস গড়েছিল ৪৮১ রান তাও ৬ উইকেটে করে। জবাবে অস্ট্রেলিয়া মাত্র ২৩৯ রানে গুটিয়ে যায়। হারে ২৪২ রানের ব্যবধানে। শুধু অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে নয়, পাকিস্তানের বিপক্ষে ইংলিশরা ৪৪৪ করে ৩ উইকেটে তাও ওয়ানডে ক্রিকেটে দারুণ এক রেকর্ড। সব মিলিয়ে এখানে ১১ ইনিংসেই এসেছে ৩’শর বেশি রান।

বলার অপেক্ষা রাখে না এই মাঠ ব্যাটম্যানদের স্বর্গ। ২০১০এ  তামিম ইকবাল, সাকিব আল হাসান, মুশফিকুর রহীম, মাহমুদুল্লাহও খেলেছেন এই মাঠে। শুধু তাই নয় অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজা এখানে খেলেছেন ২০০৫ এরপর ২০১০এ। সব মিলিয়ে দলের সবচেয়ে অভিজ্ঞ পাঁচ ক্রিকেটারের এখানে খেলার অভিজ্ঞতা রয়েছে। তাই আশরাফুলের সেই ইনিংস নিয়ে মাশরাফি বলেন, ‘আসলে এখানে আমাদের কিছু ব্যক্তিগত স্মৃতি আছে। এর মধ্যে আশরাফুল সেই বার অসাধারণ খেলেছিল। ও রান করেছিল এমন একটি সময় যখন আমাদের বিশ্বকে দেখানোর ছিল যে আমরাও পারি। এবারও আমরা চাইছি এখানে এমনভাবে খেলতে যেন বিশ্ব বোঝে যে আমারাও ক্ষমতা রাখি ভালো খেলার।

অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে কেমন হবে একাদশ? বলার অপেক্ষা রাখে না ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে জয়ী দলই খেলবে। রুবেল হোসেনের এই ম্যাচেও খেলার কোনো সম্ভাবনা নেই। উইকেট বলছে স্পিনাররাও ভালো সহায়তা পাবে। সবশেষ ২০১০-এ এখানে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সাকিব নিয়েছিলেন ২ উইকেট। গতকাল অস্ট্রেলিয়া দল অনুশীলনে বেশ অনেকটা সময় ধরেই নেটে স্পিন বোলারদের সামালোনার কাজটি করেন। যদিও মাশরাফি অস্ট্রেলিয়ার এই স্পিন ভীতিকে নিজেদের জন্য ভাল দিক হিসেবেই দেখছেন। তিনি বলেন, ‘আসলে বিষয়টার ভালো দিকও আছে। বুঝতে হবে ওরা আমাদের স্পিন নিয়ে চিন্তিত । এতে করে আমাদের স্পিনারদের সুযোগ থাকবে ওদের উপর আরো বেশি চাপ প্রয়োগ করার।’   

অন্যদিকে নটিংহ্যামে দু’দিন থেকেই থেমে থেমে বৃষ্টি হচ্ছে। ম্যাচের দিনও এই বৃষ্টির  সম্ভাবনা রয়েছে প্রবল। ২০১৫ ও ২০১৭ তে বৃষ্টিতে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে দুটি ম্যাচই ভেসে গিয়েছিল। সেই কারণে বাংলাদেশ দারুণ লাভবানই হয়েছে। যদি আজও ম্যাচ বৃষ্টিতে ভেসে যায় তাহলে কী হবে? টাইগার অধিনায়ক অবশ্য চান খেলেই জিততে। তিনি বলেন, ‘বৃষ্টিতে যদি ম্যাচ না হয় তাহলে পাব  ১ পয়েন্ট। এটি কি আমাদের জন্য লাভ হবে আগের মত? আমরা যে অবস্থাতে আছি যদি ভাল খেলে জিততে পারি তাহলে আমাদের জন্য  বেশি ভালো হওয়ার কথা। কারণ ২ পয়েন্ট পেলে অনেক হিসাবই বদলে যাবে।  তবে যাই হোক আমি চাই আমাদের পক্ষেই হোক। সব কিছুর পরও ভাগ্য বলে কথা থাকে। সেটি আমাদের সঙ্গে থাকলেই হয়।’
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status