বাংলারজমিন

পাতানো ভাইয়ের ফাঁদে গণধর্ষণের শিকার গৃহবধূ

স্টাফ রিপোর্টার, চট্টগ্রাম থেকে

১৫ জুন ২০১৯, শনিবার, ৮:৫৯ পূর্বাহ্ন

 বাসা-বাড়িতে ঝিয়ের কাজ করেন গৃহবধূ। গত ২১শে মে চট্টগ্রাম শহর থেকে কর্ণফুলী মইজ্যারটেক যাওয়ার পথে গরমে মাথা চক্কর দিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। পাশের যাত্রী ইলিয়াছ হোসেন সিএনজিচালিত অটোরিকশাটি থামিয়ে ফার্মেসি থেকে ওষুধ নিয়ে তাকে বাসায় পৌঁছে দেন।
সেই সূত্রে দুজনের কথা হতো মাঝে মধ্যে। একে অপরকে সম্বোধন করতেন ভাই-বোন হিসেবে। সমপর্কের এক সপ্তাহের মাথায় ইলিয়াছ থেকে ৮০০ টাকা ধারও নেন। ১২ই জুন সেই টাকা ফেরত দিতে চাইলে ইলিয়াছ তাকে কর্ণফুলী ব্রিজঘাট এলাকায় যেতে বলেন। ব্রিজঘাট এলাকায় পৌঁছালে ইলিয়াছ তার মায়ের বাসায় যেতে অনুরোধ করেন। রাজিও হন তিনি। কিন্তু মায়ের বাসার না নিয়ে ইলিয়াছ ওই গৃহবধূকে নিয়ে যায় কর্ণফুলী থানাধীন জুলধা ইউনিয়নের শুক্কুর আলীর ইটের ভাটার পরিত্যক্ত রান্না ঘরে। এর আগে সিএনজি অটোরিকশায় উঠে আরো তিনজন। এরপর ইটভাটার পরিত্যক্ত রান্নাঘরে নিয়ে পালাক্রমে গৃহবধূকে ধর্ষণ করে ইলিয়াছ, ট্যাক্সিচালক ও তাদের অপর তিন সহযোগী। যাদের শুক্রবার গ্রেপ্তার করে কর্ণফুলী থানা পুলিশ।
কর্ণফুলী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আলমগীর মাহমুদ বলেন, বুধবার রাতে ভিকটিমকে পাঁচ পাষণ্ড পালাক্রমে ধর্ষণ করে। মেয়েটি বৃহসপতিবার থানায় মামলা করেন। এরপর প্রযুক্তির সহায়তায় পুলিশ পাঁচ পাষণ্ডকে গ্রেপ্তার করে। তারা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ধর্ষণের কথা স্বীকার করেছে। তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। গ্রেপ্তারকৃত ধর্ষকরা হলো, মো. সেকান্দর (৩৩), মো. ইলিয়াছ (৩২), জনাব আলী (৩০), কামাল উদ্দীন (২৮) এবং ইউনুছ (২৫)। তাদের সবার বাড়ি কর্ণফুলী উপজেলায়। এরমধ্যে ইলিয়াছ ও কামাল তেলের জাহাজে কাজ করে। জনাব আলী ও সেকান্দরের দোকান রয়েছে। ইউনুছ সিএনজিচালিত অটোরিকশার চালক বলে জানান ওসি আলমগীর মাহমুদ। তিনি জানান, ভুক্তভোগী নারীর বাড়ি নোয়াখালী জেলায়। তার বিয়ে হয়েছে চট্টগ্রামের কর্ণফুলী জেলার দক্ষিণ বন্দর গ্রামে। ওই নারী সম্প্রতি স্বামী-সন্তানসহ পাথরঘাটায় একটি কলোনিতে বাসা ভাড়া নিয়ে বসবাস করেন। কর্ণফুলী থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মনিরুল ইসলাম রাসেল জানান, বুধবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে গৃহবধুকে অটোরিকশায় তুলে নেয় ইলিয়াছ। অটোরিকশা চালাচ্ছিল ইউনুছ। ইলিয়াছের সঙ্গে ছিল জনাব আলী। তারা অটোরিকশার ভেতরেই জোর করে মেয়েটিকে চোলাই মদ খাওয়ায়। এরপর জুলধা ইউনিয়নে একটি ইটভাটার পাশে পরিত্যক্ত ঘরে নিয়ে যায়। সেখানে রাতভর পাঁচজন মিলে তার ওপর নির্যাতন চালায়। বৃহসপতিবার সকালে ওই গৃহবধূ কোনোমতে চট্টগ্রাম শহরের পাথরঘাটায় নিজ বাসায় ফিরে আসে। সেখানে স্বজনদের সাথে আলাপ করে সন্ধ্যায় কর্ণফুলী থানায় বাদি হয়ে মামলা করেন। এরপর ওই নারীর ডাক্তারি পরীক্ষা সমপন্ন করা হয়। এরপর শুক্রবার দুপুর পর্যন্ত বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালিয়ে ধর্ষণের সঙ্গে জড়িত পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করে কর্ণফুলী থানা পুলিশ।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status