অনলাইন

‘পন্থী’ দ্বন্দ্বে মির্জাপুরে ইজতেমা পণ্ড, পুলিশের কড়া পাহারা

মির্জাপুর (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি

১৩ জুন ২০১৯, বৃহস্পতিবার, ৩:১২ পূর্বাহ্ন

টঙ্গীর তুরাগ তীর থেকে শুরু করে ইজতেমার ‘পন্থী’ দ্বন্দ্ব ক্রমেই দেশের বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে পড়ছে। এর ধারাবাহিকতায় দ্বন্দ্বের জের ধরে পণ্ড হয়ে গেছে টাঙ্গাইলের মির্জাপুরের ৩ তিন ব্যাপী জেলা ইজতেমা। এর আগে গত ৯ই জুন মির্জাপুরের স্থানীয় এমপি মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ একাব্বর হোসেন মাঠ পরিদর্শন করে ইজতেমা কার্যক্রমের উদ্ধোধন করেন।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, মাওলানা সাদপন্থীদের উদ্যোগে টাঙ্গাইলের মির্জাপুর পৌর সদরের কাঠালিয়ায় ১৩, ১৪ ও ১৫ই জুন ৩ দিন ব্যাপী এই জেলা ইজতেমার আয়োজন করা হয়। উদ্বোধনের পর থেকে ওই এলাকার বেশ কয়েক একর জায়গা জুড়ে তৈরি করা হয় প্যান্ডেল। কিন্তু শেষমেশ প্রশাসনের অনুমতি মেলেনি আয়োজকদের।

প্রশাসনের নির্ভরযোগ্য সূত্র জানায়, মাওলানা জোবায়ের পন্থীদের আপত্তির মুখে আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতির আশঙ্কায় এই ইজতেমা পরিচালনার অনুমতি দেয়নি জেলা প্রশাসন। অবশ্য মাওলানা জোবায়ের পন্থীদের সঙ্গে রাজনৈতিক ও প্রশাসনের পক্ষ থেকে বার বার সমঝোতার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয় তারা।

আজ বৃহস্পতিবার সরেজমিন দেখা যায়, বাঁশের প্যান্ডেল করা ইজতেমার মাঠ থেকে মিনি ট্রাকযোগে বাঁশের খুঁটি সরিয়ে ফেলা হচ্ছে। পুলিশ ও প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ মাঠে অবস্থান নিয়েছে প্রায় দেড় থেকে দুই শতাধিক পুলিশ সদস্য। এছাড়াও ইজতেমা স্থলের প্রবেশমুখসহ ওই এলাকার বিভিন্ন পয়েন্টে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। গত বুধবার থেকেই ওই এলাকায় পুলিশের ব্যাপক তৎপরতা ছিল লক্ষনীয়, গাড়িসহ অবস্থানে ছিল ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তারা।

অপরদিকে ইজতেমার মূল ময়দান থেকে মুসুল্লিদের সরিয়ে দিলেও অসংখ্য মুসল্লি ইজতেমা ময়দান সংলগ্ন দারুল উলুম মোহাম্মাদীয়া মাদ্রাসা ও কান্ঠালিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে অবস্থান নিয়ে আম বয়ানের মাধ্যমে ইজতেমার কার্যক্রম চালাতে থাকে।

এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত ওই এলাকায় চাপা উত্তেজনা বিরাজ করছিলো। টাঙ্গাইলের কালিহাতি, টাঙ্গাইল সদর, মধুপুর ও সখীপুর থেকে আগত অসংখ্য মুসল্লি ইজতেমা আয়োজনের অনুমতি না পাওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন। অনেকে বলেন, গান বাজনা বা কনসার্টের আয়োজন হলে পুলিশি বাধার সম্মুখীন হতে হতো না।

ইজতেমার জিম্মাদার মুফতি মোস্তফা খলিল জানান, প্রশাসনের কাছ থেকে মৌখিকভাবে তাদের অনুমতি নেয়া ছিল। সেই মোতাবেক ইজতেমার আয়োজনও করা হয়েছিল। কিন্তু পরবর্তীতে একটি মহলের ষড়যন্ত্রের কারণে প্রশাসনের কাছে তারা লিখিতভাবে আবেদন করেও অনুমতি পায়নি। সবশেষ স্বল্প পরিসরে হলেও ইজতেমা পরিচালনা করে তাবলীগ জামায়াত বের করার জন্য প্রশাসনের অনুমতি পাওয়ার চেষ্টা চালিয়ে যাওয়া হচ্ছে বলে জানান তিনি।

মির্জাপুর থানার ওসি একেএম মিজানুল হক বলেন, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে আমরা সতর্ক অবস্থানে রয়েছি। কোন প্রকার অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটার সুযোগ নেই বলেও জানান তিনি।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবদুল মালেক এক প্রশ্নের জবাবে জানান, জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ঠিক কি কারণে ইজতেমা আয়োজনের অনুমতি দেয়া হয়নি তা স্পষ্ট নয়। তবে মুলত আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি বিবেচনায় অনুমতি দেয়া হয়নি বলে তিনি উল্লেখ করেন।
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status