অনলাইন

নোয়াখালী থেকে ফেরার পথেও দ্বিগুন ভাড়া

স্টাফ রিপোর্টার নোয়াখালী থেকে

১১ জুন ২০১৯, মঙ্গলবার, ৩:৪৫ পূর্বাহ্ন

পবিত্র ঈদুল ফিতরের ছুটি শেষে নোয়াখালী থেকে কর্মস্থলে ফেরার পথেও দ্বিগুণ ভাড়া আদায় করা হচ্ছে। এ নিয়ে যাত্রীদের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। পর্যাপ্ত পরিবহন সুবিধা না পেয়ে চরম ভোগান্তির শিকারও হচ্ছেন তারা। এই লাগামহীন বাস ও গণপরিবহনে ভাড়া বৃদ্ধিতে চরম বিড়ম্বনায় পড়েছেন ঢাকা-চট্রগ্রামসহ জেলার বাইরে কর্মরত বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষ। ভাড়া বৃদ্ধি রোধে পরিবহন আইনের দাবি করেছেন তারা।

তবে বাস মালিক নেতাদের দাবি, বাসভাড়া কিছুটা বৃদ্ধি করা হলেও যাত্রীদের যাতায়াতের সুবিধায় অন্যবারের তুলনায় পর্যাপ্ত বাস সার্ভিস রয়েছে। অন্যদিকে চাঁদাবাজিতে যানবাহনের চালক, মালিকরা অনেকটা অসহায় হয়ে বাড়তি ভাড়া আদায় করছেন বলেও দাবি পরিবহন মালিকদের। জেলার মহাসড়কে সড়ক ক্লিয়ার ফি, টার্মিনাল সিরিয়াল, পার্কিং ফির নামে বেপরোয়া চাঁদাবাজি যেন নিয়মে পরিণত হয়েছে।

এদিকে মঙ্গলবার বিকালে জেলার সর্ববৃহৎ বাসটার্মিনাল সোনাপুর বাসস্ট্যান্ডে হিমাচল এবং লাল সবুজ পরিবহনে ভ্রাম্যমাণ আদালত অভিযান চালিয়ে জরিমানা করা হয়েছে। নোয়াখালী-ঢাকা যাতায়াতে হিমাচল, লাল-সবুজ ও একুশে এক্সপ্রেস প্রতিজনের বাসভাড়া ৩৮০ টাকার পরিবর্তে ৫০০-৭০০ টাকা আদায় করছে। নোয়াখালী-চট্টগ্রামগামী বাঁধন, রেসালাহ্, শাহী ও জোনাকী পরিবহন ২০০ টাকার পরিবর্তে ৩০০-৩৮০ টাকা ভাড়া আদায় করছে। উপকূলে নোয়াখালী থেকে কুমিল্লার নির্ধারিত ভাড়া ১২০ টাকার পরিবর্তে নেয়া হচ্ছে ১৮০ টাকা। বসুরহাট-ঢাকা রুটে ড্রীম লাইন পরিবহন ৩০০ টাকার ভাড়া ৩৭০ টাকা আদায় করছে। অন্যদিকে বসুরহাট-চট্রগ্রাম রুটে বসুরহাট এক্সপ্রেসে ১৮০ টাকার ভাড়া ২৫০ টাকা আদায় করছে। এছাড়া জেলার সোনাপুর বাসস্ট্যান্ড থেকে ফেনীগামী সুগন্ধা সুপার সার্ভিস, লক্ষ্মীপুরগামী আনন্দ পরিবহন, রামগঞ্জগামী জননী পরিবহন, চেয়ারম্যান ঘাটগামী সুবর্ণ সুপার সার্ভিস, রামগতিগামী সুবর্ণ সুপার সার্ভিস যাত্রীদের কাছ থেকে দ্বিগুন ভাড়া আদায় করছে। শুধু বাস নয়, সিএনজিচালিত, ব্যাটারিচালিত অটোরিকশাসহ ছোট পরিবহনগুলোতেও দ্বিগুণ ভাড়া নেয়া হচ্ছে।

ঢাকাগামী বাস চালক ড. আনিসুর রহমান জাহাঙ্গীর বলেন, সোনাপুর থেকে শুরু করে মাইজদী নতুন বাসস্ট্যান্ড, বেগমগঞ্জের চৌরাস্তা, সোনাইমুড়ি, কুমিল্লার একাধিক জায়গায় চাঁদা দিতে হয়। তাই ভাড়া বাড়িয়ে নিচ্ছি। সোনাপুর থেকে মাইজদীগামী সিএনজি চালিত অটোরিক্সা চালক এমরান ও মোজ্জামেল হোসেন বলেন, প্রতি যাত্রীর কাছ থেকে ১০ টাকার পরিবর্তে ২০ টাকা নিচ্ছি। আগে শ্রমিক সংগঠন, মালিক সমিতি, শ্রমিক কল্যাণ ফান্ড, পৌরসভাসহ বিভিন্ন চাঁদা বাবদ ৮০ টাকা দিতে হতো। এখন ঈদকে কেন্দ্র করে সেটা দ্বিগুন হয়েছে। ফলে বাড়তি বাড়া না নিলে নিজের খরচ তোলা সম্ভব হবে না।

নোয়াখালী জেলা যুবলীগের সাবেক নেতা রেদোয়ানুল কবির ক্ষোভ প্রকাশ করে তার ফেসবুকে পোষ্ট দিয়ে বলেন, গাড়িতে চাঁদা আদায় করে আজ অনেকে কোটিপতি। অসাধুসহ মালিকরা অনেক অনিয়ম করে সরকার, যাত্রীদের ফাঁকি দিচ্ছেন। ভাড়া কমাতে হলে চাঁদাবাজি বন্ধ করতে হবে। তাহলে মালিকরা দুশ’ টাকায় ঢাকায় যাত্রীসেবা দিতে পারবে।

নোয়াখালীর অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. আবু ইউসূফ মানবজমিনকে বলেন, ঈদকে পুঁজি করে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়কারী পরিবহন-মালিকদের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। এরইমধ্যে ভ্রাম্যমাণ আদালত একাধিক পরিবহন ও ব্যক্তিকে জরিমানা করেছে। চাঁদাবাজির ব্যাপারে সুনিদিষ্ট অভিযোগ পেলেই ব্যবস্থা নেয়া হবে। জেলার ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট রোকনুজ্জামান খান জানান, জাতীয় ভোক্ত অধিকার সংরক্ষণ আইনের ধারা অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের দায়ে ঢাকাগামী পরিবহন একুশে এক্সপ্রেসকে ৫ হাজার টাকা, হিমাচল পরিবহনকে ৫ হাজার, জননী পরিবহন কে ৫ হাজার টাকা, মোহনা পরিবহন ৫ হাজার টাকা ও চট্টগ্রাম গামী বাস সার্ভিস জোনাকী পরিবহনের দুইটি বাসকে ৫ হাজার ৫শ টাকা বাধন পরিবহনকে ২ হাজার টাকা, শাহী পরিবহনকে ৪ হাজার টাকা, নীলাচল পরিবহনের দুইটি বাসকে ৩ হাজার ৫শ টাকা সহ মোট এগারটি পরিবহনকে ৩৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status