প্রথম পাতা

বাংলাদেশির ২১ লাখ টাকার দণ্ড

শেক্সপিয়ারের শহরে ভেজাল চিকেন টিক্কা

স্টাফ রিপোর্টার

১০ জুন ২০১৯, সোমবার, ৯:৫৯ পূর্বাহ্ন

প্রতীকী ছবি

উইলিয়াম শেক্সপিয়ারের জন্মস্থান হিসেবে বৃটেনের ওয়েস্ট মিডল্যান্ড অঞ্চলের ওয়ারউইক শহরটি খ্যাত। বার্মিংহাম মেইল ৭ই জুন খবর দিয়েছে, একজন খাদ্য পরিদর্শক ছদ্মবেশে ওয়ারউইকে কর্মরত ৪৫ বছর বয়সী একজন বাংলাদেশি শেফের কাছে খাবার অর্ডার করেন। তিনি চেয়েছিলেন পিনাট বা বাদামবিহীন চিকেন টিক্কা মাসালা। কিন্তু ওই শেফ তাকে বাদাম মাখানো চিকেন টিকা মাসালা সরবরাহ করেন। ওই রেস্তোরাঁর বিরুদ্ধে কাউন্টি কাউন্সিলে অভিযোগ দায়ের হয়েছিল, তারা ক্রেতাদের এভাবে ঠকাচ্ছে। সেই অভিযোগ সূত্রেই খাদ্য পরিদর্শক ক্রেতা সেজে অভিযান চালান।

রত্না বাংলাদেশি টেকওয়ে ওয়ারউইকের একটি নামিদামি খাবার বিক্রেতা প্রতিষ্ঠান। এবং তার বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত শেফ আদালতে গত সপ্তাহান্তে দোষ স্বীকার করেন। আদালত কোম্পানিকে ২০ লাখ ৭০ হাজার ৫২৬ টাকা এবং শেফকে ব্যক্তিগতভাবে ১৩ হাজার ২৪৫ টাকা জরিমানা করে। তার মানে দাঁড়ালো বাদাম মাখানো চিকেন টিক্কা মাসালা বিক্রির দায়ে জরিমানা দিতে হবে মোট ২১ হাজার ৬শ’ পাউন্ডের বেশি। বাংলাদেশি টাকায় পৌনে ২১ লাখ টাকার বেশি। আদালত বলেছেন, ‘বাদামে যার অ্যালার্জি আছে, তেমন কেউ এমন চিকেন টিক্কা খেলে তিনি মারা যেতে পারতেন। এটা বিবেচনায় নিয়েই তাকে জরিমানা করা হয়েছে। এমনকি আদালত এই অপরাধে রত্নার মালিককে জেলে পোরার বিকল্পও ভেবেছিলেন।

পোলসওয়ার্থের মার্কেট স্ট্রিট মার্কেটে অবস্থিত রত্না টেকওয়েকে নানিটন ম্যাজিস্ট্রেট কোর্ট গত ২৯শে মে ১৯৯০ সাালের খাদ্য নিরাপত্তা আইনের আওতায় ১৯,২২৭ পাউন্ড জরিমানা করে। এরমধ্যে ১৮ হাজার পাউন্ড কোম্পানিকে মামলার খরচ বাবদ ১০৫৭ পাউন্ড এবং ভুক্তভোগীর সারচার্জ বাবদ ১৭০ পাউন্ড রয়েছে।
এ ছাড়া সালিক মিয়াকে করা ২৪১৬ পাউন্ডের মধ্যে ১২৩৬ পাউন্ড ব্যক্তিগত, ১০৫৭ পাউন্ড মামলার খরচ এবং ভুক্তভোগীর সারচার্জ বাবদ ১২৩ পাউন্ড নির্ধারণ করা হয়েছে।
এই প্রতিবেদনে বলা হয়, বার্মিংহামের আদালতে প্রমাণিত হয়েছে যে তার কাছে চাওয়া হয়েছিল পিনাট প্রোটিন বিহীন খাবার কিন্তু বিক্রেতা দিয়েছেন পিনাট প্রোটিনযুক্ত খাবার। এই ভুলের কারণে কেউ মারা যেতে পারতেন। এই ধারণার ভিত্তিতে তাকে শাস্তি দেয়া হয়েছে এবং অভিযোগ পাওয়ার পরে ওয়ারউইকশায়ার কাউন্সিলের ট্রেডিং স্ট্যান্ডার্ড অফিসার ছদ্মবেশে ওই দোকানে যান এবং তিনি কারির অর্ডার দেন।

আদালত বলেছেন অভিযোগ অত্যন্ত গুরুতর এবং তাকে নিরাপত্তা হেফাজতে পাঠানোর বিষয়টি আদালত বিবেচনায় নিয়েছিল। তার মূল ভিত্তি হচ্ছে যে কেউ এতে মারা যেতে পারতেন। তবে, আদালতে স্বীকার করা হয়েছে যে ভেজাল খাবার দেয়াটা নিতান্ত দুর্ঘটনাবশত। এবং প্রথম সুযোগেই অভিযুক্ত আদালতে দোষ স্বীকার করেছেন।
ওয়ারউইকশায়ার কাউন্টি কাউন্সিলের কমিউনিটি সেফটি বস মি. অ্যান্ডি ক্রাম্প আদালতে শুনানি শেষে মন্তব্য করেছেন, এই ঘটনার মাধ্যমে অনেকেই এলার্জি কিভাবে খাদ্যে গুরুতর অবস্থা তৈরি করতে পারে, মানুষকে অসুস্থ করে তুলতে পারে এমনকি তার মৃত্যুর কারণ হতে পারে, সেসব বিষয়ে তারা সজাগ হবেন।

বিক্রেতারা আর পিনাটমুক্ত খাবারের নামে পিনাটযুক্ত খাবার বিক্রি করবেন না। তিনি আরো উল্লেখ করেন, এটা খুবই হতাশাব্যঞ্জক যে, সব রকমের উদ্যোগ নেয়া সত্ত্বেও আমাদের কাউন্টিতে এবং পুরো বৃটেনজুড়ে ব্যবসায়ীদের সচেতন করার বিষয়ে একটা ঢিলেঢালা ভাব দেখা যাচ্ছে। কিছু রেস্তোরাঁ এই সতর্কতা অনুসরণ করছেন না। তিনি ঘোষণা দেন যে, কাউন্সিলের ট্রেডিং স্ট্যান্ডার্ডের দপ্তর থেকে এভাবে ছদ্মবেশে অভিযান পরিচালনা অব্যাহত রাখা হবে। যার মূল লক্ষ্য থাকবে ভোক্তাদের অধিকার ও তাদের স্বার্থ সুরক্ষা এবং তাদের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status