তারকা সাক্ষাতকার

কেলি বারলো বলেন-‘সাবাস বাংলাদেশ’

ইশতিয়াক পারভেজ, কার্ডিফ থেকে

৯ জুন ২০১৯, রবিবার, ৯:৫৬ পূর্বাহ্ন

১৯৬৯। বর্ণবাদের কারণে বিশ্ব ক্রিকেট থেকে নির্বাসনে পাঠানো হয়েছিল দক্ষিণ আফ্রিকাকে। এডি বারলো ছিলেন সে সময়কার অন্যতম সেরা অলরাউন্ডার। নিজের ক্রিকেট প্রতিভাকে বিশ্ব দরবারে তুলে ধরার সুযোগ হয়নি  তেমন। কোচ গর্ডন গ্রিনিজ যাওয়ার পর কিছুদিন পরই স্ত্রীকে নিয়ে বাংলাদেশে আসেন এডি বারলো।  এরপর থেকে দক্ষিণ আফ্রিকার এই ক্রিকেট কোচ তার মেধার পুরোটাই ঢেলে দেন ক্রিকেট সমুদ্রে পা রাখা টাইগারদের জন্য। টেস্ট ক্রিকেটের অভিজাত মহলে মাত্র পা রাখা টাইগারদের ভিতটাও গড়ে দিয়েছেন তিনি। ২০০০-এ টেস্ট মর্যাদা  পাওয়ার পর দেশ যখন অধীর অপেক্ষায় ছিল অভিষেকের। ঠিক সেই সময় মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণে আক্রান্ত হয়ে চলাফেরার শক্তি হারিয়ে ফেলেন। তবে সেই অবস্থাতেই ঐতিহাসিক অভিষেক টেস্টেও ছিলেন টাইগারদের সঙ্গে। কিন্তু হুইল চেয়ারে বসে বাংলাদেশের সঙ্গে বেশি দিন চলতে পারেননি। ২০০১ সালের শুরুর দিকে অপূর্ণতা নিয়ে বাংলাদেশ ছাড়েন এডি বার্লো। এরপর ২০০৫-এ পরলোকে চলে যান। এই দেশকে অল্প দিনেই আপন করে নেয়া বারলোর স্ত্রী ক্যালি বারলো এখনো স্বামীর স্মৃতির সঙ্গে ধরে রেখেছেন বাংলাদেশকেও। গতকাল কার্ডিফের সোফিয়া গার্ডেন স্টেডিয়ামে এসেছিলেন বাংলাদেশের পতাকা হাতে। সেখানে দৈনিক মানবজমিন-এর স্পোর্টস রিপোর্টার ইশতিয়াক পারভেজের সঙ্গে কথা বলেন তিনি। জানান এখনো অটুট বাংলাদেশ ও টাইগারদের প্রতি তার ভালবাসার কথা। সেই কথোপকথনের মূল অংশ তুলে ধরা হল-
প্রশ্ন: বাংলাদেশকে এখনো ভোলেননি আপনি?
কেলি বারলো: কী করে ভুলে যাই বল! আমার স্বামীর শেষ স্মৃতিতে তো বাংলাদেশ।  তার সঙ্গে  সেই সময়টা কাটিয়েছি বাংলাদেশে। তাই টাইগারদের ভোলা আমার পক্ষে অসম্ভব।
প্রশ্ন: কার্ডিফে টাইাগারদের খেলা দেখতে এসেছেন?
কেলি বারলো:  অবশ্যই, এই দেখ আমিতো বাংলাদেশের পতাকা নিয়েই এসেছি। আমি আরো একটি ম্যাচ দেখবো বাংলাদেশের। আমার সুযোগ এসেছে এখানে এসে খেলা দেখার তাই দেখতে চলে আসলাম। আমি ব্রিস্টলেও যাব, সেখানেও খেলা দেখবো। যদি আরো কোনো ম্যাচে সম্ভব হয় তাও দেখবো। আপাতত এই দুই ম্যাচেই আছি।
প্রশ্ন: কী মনে হয় বাংলাদেশ এই বিশ্বকাপে কেমন করবে?
কেলি বারলো: আমার বিশ্বাস ওরা এবার সেমিফাইনাল খেলবে। এরপর যে কোনো কিছু হতে পারে। আমার খুব ভালো লাগছে, আমার স্বামী বেঁচে থাকলে ওদের নিয়ে গর্ব করতো। আমিও করি। দারুণ খেলছে ওরা।
প্রশ্ন: সব ম্যাচ দেখার ইচ্ছা আছে?
কেলি বারলো: ছিল, কিন্তু সত্যি করে বলি একটা কথা? আমি মাঠে বসে ভয় পাই, যদি  যে আশা নিয়ে এসেছি তা না হয়। যাই বল আমি বিশ্বাস করি এই বিশ্বকাপে বাংলাদেশ ফাইনাল খেলার যোগ্যতা নিয়েই এসেছে।
কার্ডিফে ২০০৫-এ আমি যখন ছিলাম তখন বাংলাদেশ দল অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়েছিল।
প্রশ্ন: বাংলাদেশের পতাকা নিয়ে এসে কেমন লাগছে?
কেলি বারলো:  দারুণ লাগছে। আমি এখানে আসার আগেই বাংলাদেশের পতাকা নিয়ে আসার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। টাইগারদের পতাকা উচিয়ে সমর্থন দিতে হবে।
প্রশ্ন: বাংলাদেশ দলের কোন ক্রিকেটারকে এই বিশ্বকাপে এগিয়ে রাখবেন?
কেলি বারলো:  অবশ্যই সাকিব আল হাসান ও মাশরাফি বিন মুর্তজা। ওরা টাইগারদের দারুণভাবে এগিয়ে নিচ্ছে। আশা করি এই বিশ্বকাপেও ওদের ভূমিকা দারুণ থাকবে। তারা অসাধারণ ক্রিকেটার।
প্রশ্ন: বাংলাদেশকে কতটা মিস করেন?
কেলি বারলো:  আমার অনেক বড় একটি স্মৃতি জুড়ে আছে বাংলাদেশ। সেখানে আমার অনেক দারুণ মুহূর্ত আছে। কোনটাই আলাদাভাবে বলতে চাই না। আমার সুযোগ হলে আবার বাংলাদেশে যাবো।
প্রশ্ন: টাইগারদের জন্য কোনো বার্তা দিতে চান?
কেলি বারলো: ‘সাবাস, সাবাস বাংলাদেশ’ তোমরা এই বিশ্বকাপে শেষ পর্যন্ত ভালো খেলো।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status