বিশ্বজমিন
গুজরাটে আগুনে মৃত কোচিং সেন্টারের ১৯ জন ছাত্রই নাবালক
কলকাতা প্রতিনিধি
২৬ মে ২০১৯, রবিবার, ৯:৫৪ পূর্বাহ্ন
ভারতের গুজরাট রাজ্যের সুরাটে আগুন লেগে কোচিং সেন্টারের যে ১৯ জন ছাত্রের হৃদয়বিদারক মৃত্যু হয়েছে তাদের সকলেরই বয়স ১৪ থেকে ১৭ বছরের মধ্যে। সকলেই নাবালক। একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণির প্রায় ৭০ জন ছাত্র অঙ্ক ও ফ্যাশন ডিজাইনিংয়ের কোচিং ক্লাসে অংশ নিতে সেখানে গিয়েছিল। কিন্তু বিধ্বংসী আগুনে চারতলায় কোচিং সেন্টারে ওঠার একমাত্র কাঠের সিঁড়িটি পুড়ে যাওয়ায় ছাত্ররা নিরাপদ স্থানে যেতে পারে নি। মৃত ১৯ জনের মধ্যে অধিকাংশেরই মৃত্যু হয়েছে আগুনে পুড়ে ও ধোঁয়ায় শ্বাস বন্ধ হয়ে। বাকিদের মৃত্যু হয়েছে ছাদ থেকে নিচে ঝাঁপ দেয়ার ফলে। ঝাঁপ দিয়ে আহত বা অগ্নিদগ্ধ ১৬ জন ছাত্রকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। দমকলের উদ্ধারকারীরা ২২-২৫ জন ছাত্রকে চারতলা থেকে জীবিত অবস্থায় উদ্ধার করেছে। বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে স্থানীয় মানুষের দেয়া তথ্য অনুযায়ী, সুরাটের সারতানা এলাকার তক্ষশীলা মার্কেট কমপ্লেক্সের চারতলায় কোচিং সেন্টারটি চলছিল বেআইনিভাবে। চারতলার কোচিং সেন্টারে ওঠার একটি মাত্র কাঠের সিঁড়ি ছিল। জানা গেছে, শুক্রবার বিকালে বাড়িটির নিচতলায় শর্ট সার্কিট থেকে আগুন লাগে। অল্প সময়েই তা উপরের দিকে ছড়িয়ে পড়ে। কোচিং সেন্টারে ওঠার কাঠের সিঁড়িটি আগুনে পুড়ে যাওয়াতেই নাবালক ছাত্ররা বাঁচার কোনো পথ পায় নি। বহু ছাত্র বাঁচার শেষ চেষ্টা হিসেবে উপর থেকে নিচে ঝাঁপ দিয়েছিল। তাদের মধ্যে অনেকেরই মৃত্যু হয়েছে। অনেকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে। ঘটনাস্থলে থাকা মানুষ মোবাইলে সেই মর্মান্তিক দৃশ্য ভিডিও করেছেন। যা সঙ্গে সঙ্গেই নেট দুনিয়াতে ভাইরালের গতিতে ছড়িয়ে পড়েছে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, নিচে থাকা মানুষজন লাফিয়ে পড়া ছাত্রদের অনেককে ধরার চেষ্টা করেছে। দমকল ঘটনাস্থলে ৩০ মিনিটের মধ্যে পৌঁছেছিল বলে জানা গেছে। তারা কোচিং সেন্টার থেকে অনেক পুড়ে যাওয়া লাশ বের করেছে। আগুন লাগার ঘটনার তদন্তের নির্দেশ দেয়ার সঙ্গে সঙ্গে সুরাটে ছুটে গেছেন গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী বিজয় রুপানি। আগুনে মৃত ছাত্রদের পরিবারকে চার লাখ টাকা ক্ষতিপূরণের নির্দেশও দিয়েছেন। অনেক ছাত্রের পরিবারের সঙ্গে তিনি কথা বলেছেন। হাসপাতালে গিয়ে আহতদের সঙ্গেও কথা বলেছেন তিনি। মাজুরার বিধায়ক টুইটে লিখেছেন, দুই সন্তানের পিতা ও জনপ্রতিনিধি হিসেবে আমার সুরাটের মানুষের কাছে এই দিনটি কালোদিন হিসেবে চিহ্নিত হয়ে থাকবে। ঘটনার জন্য দায়ী ব্যক্তিদের খুঁজে বের করার জন্য আমি ব্যক্তিগতভাবে উদ্যোগী হবো এবং আহত ছাত্রদের দেখভালের দায়িত্ব্ব নেবো।