বাংলারজমিন
পাত্রখোলা বাগানে চা-শ্রমিকদের ওপর হামলা, আহত ৫
কমলগঞ্জ (মৌলভীবাজার) প্রতিনিধি
২১ মে ২০১৯, মঙ্গলবার, ৯:৪১ পূর্বাহ্ন
সরকারি মালিকানাধীন কমলগঞ্জের পাত্রখোলা চা-বাগানে বাসস্থানের দাবিতে বাগান ব্যবস্থাপকের কার্যালয়ে আসা নিরীহ চা-শ্রমিকদের ওপর হামলা করা হয়েছে। হামলায় এক নারীসহ ৫ চা শ্রমিক আহত হয়েছেন। ক্ষুব্ধ শ্রমিকদের হাতে লাঞ্ছিত হয়েছেন চা বাগান পঞ্চায়েত সভাপতি। হামলা ও পাল্টা হামলার ঘটনায় পুরো বাগানজুড়ে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। পরে চা শ্রমিক নেতা, জন প্রতিনিধি ও পুলিশের হস্তক্ষেপে দুপুরের পর পরিস্থিতি শান্ত হলে চা শ্রমিকরা কাজে যোগদান করেন। চা শ্রমিকরা জানান, জরাজীর্ণ বসতঘর সংস্কারের দাবি নিয়ে গতকাল সকাল ৭টার দিকে কয়েকজন শ্রমিক বাগান ব্যবস্থাপক শফিকুর রহমান মুন্নার কার্যালয়ে যান। এ সময় চা শ্রমিক পঞ্চায়েত সভাপতি সিপন চক্রবর্তী সমর্থিত একদল শ্রমিক দেশীয় ধারালো অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে তাদের ওপর হামলা চালালে প্রতাপ গড় (৪২) ও সরস্বতী মাহারা (৪৮) সহ পাঁচ জন চা শ্রমিক আহত হন। তাদেরকে উদ্ধার করে বাগান হাসপাতালে চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়। এ খবর বাগানে শ্রমিকদের মাঝে ছড়িয়ে পড়ে। ক্ষুব্ধ প্রায় তিন শতাধিক চা শ্রমিক কাজে যোগদান না করে বাগানের ফ্যাক্টরির প্রধান ফটকের সামনে অবস্থান নিলে সেখানে উত্তেজনা দেখা দেয়। খবর পেয়ে কমলগঞ্জ থানার সহকারী পুলিশ পরিদর্শক চম্পক দামের নেতৃত্বে একদল পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করেন। সকাল সাড়ে ৯টার দিকে ক্ষুব্ধ চা শ্রমিকরা পুলিশের উপস্থিতিতে বাগান পঞ্চায়েত সভাপতি সিপন চক্রবর্তীর ওপর হামলা করে। হামলাকারীরা পঞ্চায়েত সভাপতি সিপনকে চড়, থাপ্পড়, লাথি ও কিল-ঘুষি দেয়। এ সময় পুলিশ লাটিচার্জ করে ক্ষুব্ধ চা শ্রমিকদের হাত থেকে সিপনকে উদ্ধার করে ব্যবস্থাপকের কার্যালয়ে নিয়ে যায়। হামলা ও পাল্টা হামলার এ ঘটনায় চা বাগানের দুই পক্ষের শ্রমিকদের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। খবর পেয়ে প্রথমে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান পুষ্প কুমার কানু ও পরে কমলগঞ্জ থানার ওসি আরিফুর রহমান, ওসি (তদন্ত) সুধীন চন্দ্রের নেতৃত্বে অতিরিক্ত পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি শান্ত করেন। বেলা ১১টার দিকে বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক কমলগঞ্জ উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান রামভজন কৈরী, সহসভাপতি পরাগ বাড়ই, দলই ভ্যালির সভাপতি ধনা বাউড়ি, সহসভাপতি গায়েত্রী দাস চা বাগানে ছুটে আসেন। পরে চা শ্রমিক নেতারা বাগান ব্যবস্থাপক শফিকুর রহমান মুন্না, ওসি আরিফুর রমান, ওসি (তদন্ত) সুধীন চন্দ্র, ইউপি চেয়ারম্যান পুষ্প কুমার কানু, পঞ্চায়েত কমিটির সাধারণ সম্পাদক কমল কুড়াইয়স আন্দোলনরত শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলেন। কমলগঞ্জ থানার ওসি আরিফুর রহমান বলেন, চা বাগানের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়ন রয়েছে। পুলিশের নিয়ন্ত্রণে বর্তমানে চা বাগানের পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে।