এক্সক্লুসিভ

মায়ের আশা চন্দন একদিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হবেন

স্টাফ রিপোর্টার, কিশোরগঞ্জ থেকে

১৮ মে ২০১৯, শনিবার, ৮:৩০ পূর্বাহ্ন

সন্তানের ভালোবাসার কাছে সব কিছুই তুচ্ছ। সন্তান যতো বড়ই হোক মায়ের কাছে সব সময় ছোট্ট খোকাটিই হয়ে থাকে আজীবন। তাইতো ছেলে মার্কিন মুল্লুকের প্রভাবশালী সিনেটর হলেও তাকে কাছে পেয়ে কিছুতেই আবেগ ধরে রাখতে পারছিলেন না মমতাময়ী মা সৈয়দা হাজেরা খাতুন (৯৩)। বয়স শতকের কোটা ছুঁই ছুঁই। তবে অনেকদিন পর সন্তানকে দেখে যেন সাধ মিটছিল না তাঁর। ছোট্ট খোকাটির মতো সিনেটর ছেলেকে জড়িয়ে ধরে বারবার কপালে চুমু খাচ্ছিলেন। আর মায়ের আদরভরা ভালোবাসায় সিক্ত হয়ে সিনেটর ছেলের দু’চোখ দিয়ে ঝরে পড়ছিল আনন্দের অশ্রু। গত বুধবার বিকালে কিশোরগঞ্জের বাজিতপুর উপজেলার সরারচর গ্রামে বৃদ্ধ মা আর সিনেটর ছেলের এমন ভালোবাসাবাসির দৃশ্য দেখে সেখানে অবস্থিত সবার চোখই ছিল ছল ছল।

যুক্তরাষ্ট্রের জর্জিয়া অঙ্গরাজ্যের ডেমোক্রেটিক পার্টির সিনেটর শেখ মুজাহিদুর রহমান চন্দনের গ্রামের বাড়ি কিশোরগঞ্জ জেলার বাজিতপুর উপজেলার সরারচরে। গত নভেম্বরে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের জর্জিয়া অঙ্গরাজ্যের সিনেটর নির্বাচিত হন। সরারচরে গ্রামের বাড়িতে মা সৈয়দা হাজেরা খাতুন বসবাস করেন। মূলত তাকে দেখার জন্যই তিনি গ্রামের বাড়িতে আসেন। এ সময় অনেক দিন পর ছেলেকে কাছে পেয়ে আবেগে আপ্লুত হয়ে পড়েন হাজেরা খাতুন। ছেলে-মেয়েরা বড় হয়ে একদিন দেশ-বিদেশে সুনাম কুড়াবে- এমন স্বপ্ন ছিল অনেক আগেই। তাই ছেলে আজ সিনেটর হওয়ায় যেনো তার আনন্দের শেষ নেই।

হাজেরা খাতুন বলেন, ‘কতোদিন পর আমার ছেলেকে কাছে পেয়েছি। তাই এ আনন্দ কেমন করে ধরে রাখি! সন্তান জন্মের পরই আমার বিশ্বাস ছিলো- আমার ছেলে-মেয়েরা একদিন দেশ-বিদেশে সুনাম বয়ে আনবে।’ বড় ছেলে শেখ মুজাহিদুর রহমান চন্দন সিনেটর নির্বাচিত হওয়ায় তার চেয়ে বেশি আনন্দিত আর কেউ হয়নি জানিয়ে হাজিরা খাতুন বলেন, ‘আমার স্বপ্ন পূরণ হয়েছে। আমি মনে করি, আমার ছেলে একদিন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হবে। হয়তো সেদিন আমি থাকবো না।’ দীর্ঘদিন পর মাকে কাছে পেয়ে আবেগ ধরে রাখতে পারেননি সিনেটর মুজাহিদুর রহমান চন্দনও। বলেন, মূলত মাকে দেখার জন্যই ছুটে আসা। ৬ বছর আগে একবার দেশে এসেছিলাম। তবে এবারের আসাটা একেবারেই ভিন্ন। দীর্ঘ প্রায় ৩৯ বছর পর এই প্রথম বারের মতো গ্রামের বাড়িতে সব ভাই-বোনদের এক সাথে দেখা ও তাদের সাথে সময় কাটানোর সুযোগ হয়েছে।’

এ সময় তার বড় বোন তাহেরা হক, ছোট ভাই বিশিষ্ট ব্যবসায়ী শেখ মুজিবুর রহমান ইকবাল, ছোট বোন মুক্তিযোদ্ধা ডা. তাহমিনা আক্তার সামিয়া, ছোট বোন আমেরিকার বিশিষ্ট ব্যবসায়ী নাদিরা রহমান ও নাহিদা আক্তার, ভাগ্নি জামাই মার্কিন নাগরিক ওয়েস্টিন সাসম্যান, ভাগ্নি মিশাসহ পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক চন্দন দীর্ঘ দিন ধরে আমেরিকায় ডেমোক্রেডিট দলের শীর্ষ পর্যায়ের নেতা। ভাই-বোনদের বেশিরভাগই দেশের বাইরে থাকেন।

সিনেটর নির্বাচিত হওয়ায় বুধবার সন্ধ্যায় তাকে সংবর্ধনা দেয় এলাকাবাসী। সরারচরের নিজ বাড়িতে এ সংবর্ধনা সভার আয়োজন করা হয়। সংবর্ধনার জবাবে সিনেটর শেখ মুজাহিদুর রহমান চন্দন বলেন, ‘এলাকাবাসীর এ ঋণ কোনদিন শোধ করতে পারবো না।’ বাংলাদেশ দ্রুত উন্নতির দিকে এগিয়ে যাচ্ছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি। বাংলাদেশের প্রভূত উন্নতির প্রশংসা করে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ এখন আর আগের বাংলাদেশ নেই। মানুষের ভাগ্যের উন্নতি হয়েছে। মাথাপিছু আয় বেড়েছে। এ যেনো এক বদলে যাওয়া বাংলাদেশ।’
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status